লুডু খেলা জনপ্রিয়। বিনোদনের অন্যতম মাধ্যম। বিশ্বের অনেক দেশেই এ খেলা জনপ্রিয়। ভারতবর্ষসহ বাংলাদেশেও এর জনপ্রিয়তা তুঙ্গে। নারী পুরুষ সবার কাছে জনপ্রিয়। শীত-বর্ষা সব সিজনেই লুডো খেলা হয়। জনপ্রিয় ইনডোর গেম।
বর্তমানে কম্পিউটার বা মোবাইলে অনলাইন গেমের রমরমা। এখন তো অনলাইনেও লুডো খেলা যায়। তবে বোর্ড, ১৬টি গুটি, একটি ডাইস (ছক্কা) এতে লুডো খেলার মজাটাই আলাদা।
কিন্তু এই লুডো খেলা কবে শুরু হয়েছিল? এই প্রশ্নের উত্তর কিন্তু অনেকের কাছেই অজানা। ইতিহাসে বিভিন্ন গুহাচিত্রে লুডো খেলার নিদর্শন পাওয়া গেছে যার থেকে আনুমানিক একটা ধারণা করা হয় বর্তমানে আমরা যে লুডো খেলি প্রাচীনকালে লুডো তার থেকে একটু আলাদা ধরনের ছিল। এই খেলার প্রথম নিদর্শন পাওয়া যায় মহারাষ্ট্রের ইলোরা গুহা থেকে। এই গুহার দেয়ালে চিত্রিত ছিল লুডোর ছক। ইলোরার গুহায় অঙ্কিত প্রাচীন লুডোর ছবি ও আধুনিক যুগের লুডোর পার্থক্য অনেকটাই।
প্রাচীনকালে এটি খেলার জন্য নির্দিষ্ট কোন বোর্ডে, গুটি অথবা ডাইস ব্যবহার হতো না। খেলা হতো হাতে তৈরি কাপড় বা স্লেটের উপরে এবং গুটির পরিবর্তে ব্যবহার করা হতো বীজ অথবা কোনো কিছুর বাইরে আস্তরণ বা বিভিন্ন আকারের পাথরের। আর আধুনিক লুডু খেলা বিবর্তনের ফল।প্রাচীন কালে লুডু বলা হত না। ভারতীয় ইতিহাসে এই খেলাকে কখনো চৌপদ, অথবা পিচিসি অথবা চৌজা নামে ডাকা হত। আফ্রিকাতেও এটি লুডো নামে জনপ্রিয়তা লাভ করে। এছাড়া মহাভারতে উল্লেখিত কুরুক্ষেত্র যুদ্ধে পাণ্ডব ও কৌরবদের মধ্যে পাশা খেলা হয়েছিল। মহাভারত অনুযায়ী যুদ্ধের সূত্রপাত ছিল এই খেলা থেকেই। যদিও সেই সময় এর নাম লুডো ছিল না। কিন্তু পাশাকেই লুডোর পূর্ব রূপ হিসেবে বর্ণিত করা হয়েছে। মুঘলদের সময় এই খেলার প্রচলন ছিল। সম্রাট আকবরের রাজত্বকালে এই খেলাটি নিদর্শন পাওয়া যায়। সম্রাট আকবরের পছন্দের খেলা ছিল এটি। যার প্রমাণ মিলেছে ফতেপুর সিক্রি সহ আক্বরের প্রাসাদে। সেই প্রাচীন যুগ থেকে নানা পরিবর্তনের মধ্য দিয়ে গিয়ে বর্তমানের লুডো-তে পৌছেছে। ১৮৯১ সালে আলফ্রেড কলিয়োর এই খেলায় একটি ডাইস কাপ যোগ করেন। তারপর ওই কপে নাড়িয়ে ডাইস ফেলা হয়। বলা হয় সেই সময় থেকেই আধুনিক লুডোর শুরু।
96
View