Posts

উপন্যাস

আমি তোমার সব রহস্য ফাঁস করবো। প্রস্তুত থাকো।

March 6, 2025

মোঃ রাজিব

24
View

নয়ন আর রিহানের বন্ধুত্ব দিন দিন গভীর হচ্ছে। নয়ন বুঝতে পারছে, ডিভাইসের প্রতিটি পরীক্ষা শুধু তাকে বদলাচ্ছে না—তার চারপাশের সম্পর্কগুলোও নতুনভাবে গড়ে তুলছে।

কিন্তু নয়ন জানে না, সামনে অপেক্ষা করছে আরও কঠিন চ্যালেঞ্জ।

নতুন সংকেত

স্কুল থেকে ফেরার পথে নয়ন হঠাৎ অনুভব করল, ডিভাইসটা অদ্ভুতভাবে গরম হয়ে উঠেছে। স্ক্রিনে একটা লাল আলো জ্বলছে। এমনটা আগে কখনও হয়নি।

মনি উদ্বিগ্ন হয়ে জিজ্ঞেস করল, "ভাইয়া, আবার নতুন কিছু হচ্ছে?"

নয়ন ধীরে ধীরে স্ক্রিনের দিকে তাকাল। সেখানে লেখা:

"চতুর্থ পরীক্ষা: শত্রুর মুখোমুখি হও।
সময়: ৪৮ ঘণ্টা
লক্ষ্য: তোমার সবচেয়ে বড় প্রতিদ্বন্দ্বীকে পরাজিত করো।"

নয়ন ধীরে বলল, "শত্রু? আমার শত্রু কে?"

রহস্যময় ছাত্র

পরদিন স্কুলে গিয়ে নয়ন বুঝতে পারল, পরীক্ষা এবার সহজ হবে না। ক্লাসে এক নতুন ছাত্র এসেছে—তারিক।

তারিক প্রথম দিন থেকেই একটা রহস্যময় পরিবেশ তৈরি করল। তার চোখে সবসময় একটা চ্যালেঞ্জের ঝলক। নয়ন লক্ষ্য করল, সে তাকে খুব মনোযোগ দিয়ে দেখছে।

মনি ফিসফিস করে বলল, "ভাইয়া, মনে হচ্ছে এই ছেলেটাই তোমার শত্রু হতে পারে।"

নয়ন মাথা নেড়ে বলল, "কিন্তু আমি তো কখনও ওকে দেখিনি। কেন ও আমার প্রতিদ্বন্দ্বী হবে?"

কিন্তু কিছুক্ষণের মধ্যেই উত্তর মিলল।

প্রতিদ্বন্দ্বিতার ঘোষণা

প্রধান শিক্ষক ঘোষণা দিলেন, "আগামী সপ্তাহে স্কুলের 'বুদ্ধি ও সাহস' প্রতিযোগিতা হবে। এখানে তোমাদের যুক্তি, সাহস ও সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষমতা পরীক্ষা করা হবে। অংশ নিতে চাইলে আজই নাম জমা দাও।"

তারিক উঠে দাঁড়াল। "স্যার, আমি অংশ নিতে চাই। আর আমার লক্ষ্য একটাই—নয়নকে হারানো।"

ক্লাসে এক মুহূর্তের জন্য নীরবতা নেমে এল। নয়ন অবাক হয়ে তারিকের দিকে তাকাল। কেন সে এমন বলল?

রিহান পাশে এসে বলল, "ও কেন তোমাকে নিশানা বানাচ্ছে?"

নয়ন গভীরভাবে চিন্তা করল। এই ছেলেটার উদ্দেশ্য কী?

প্রতিযোগিতার প্রস্তুতি

নয়ন চ্যালেঞ্জ গ্রহণ করল। সে জানত, এই পরীক্ষায় জিততেই হবে।

পরবর্তী কয়েকদিন নয়ন ও রিহান মিলে কঠোরভাবে প্রস্তুতি নিল। তারা যুক্তির খেলা ও কঠিন ধাঁধা সমাধান করার চর্চা করল।

কিন্তু তারিক সবসময় একা থাকে। কেউ জানে না, সে কীভাবে প্রস্তুতি নিচ্ছে।

পরীক্ষার দিন

প্রতিযোগিতার দিন এসে গেল। অডিটোরিয়াম ভর্তি ছাত্র-শিক্ষক। প্রধান শিক্ষক বললেন, "আজকের প্রতিযোগিতা তিনটি ধাপে হবে।"

প্রথম ধাপ: দ্রুত চিন্তা ও যুক্তির খেলা

দ্বিতীয় ধাপ: সাহসিকতার পরীক্ষা

তৃতীয় ধাপ: ব্যক্তিত্বের শক্তি


প্রথম ধাপে নয়ন ও তারিক দুজনেই দুর্দান্ত পারফর্ম করল। কেউ কাউকে ছাড় দিতে নারাজ।

দ্বিতীয় ধাপে সাহসিকতার চ্যালেঞ্জে নয়নকে এমন একটি কাজ দেওয়া হলো, যা তার জন্য কঠিন—এক অন্ধকার ঘরে গিয়ে একটি লুকানো বস্তু খুঁজে আনতে হবে।

নয়ন ভয়কে জয় করে অন্ধকারে প্রবেশ করল। ঠিক যখন বস্তুটি খুঁজে পেয়েছে, তখনই সে পেছনে কারও উপস্থিতি অনুভব করল।

তারিক!

তারিক ধীরে ধীরে বলল, "তোমার শক্তি আমি জানি, নয়ন। কিন্তু আমি তোমাকে সহজে জিততে দেব না।"

নয়ন শান্তভাবে বলল, "কেন তুমি আমাকে হারাতে চাও?"

তারিক মুচকি হেসে বলল, "কারণ আমি জানি—তোমার কাছে একটা রহস্যময় শক্তি আছে। আমি সেটা চাই।"

নয়ন চমকে উঠল। তারিক জানে ডিভাইসের কথা?

পরীক্ষার সমাপ্তি

তৃতীয় ধাপে ব্যক্তিত্বের শক্তি পরীক্ষা করতে শিক্ষকেরা নয়ন ও তারিককে মুখোমুখি দাঁড় করালেন।

প্রশ্ন করা হলো, "সত্যিকারের নেতা হতে গেলে কী প্রয়োজন?"

তারিক বলল, "ক্ষমতা। যে শক্তিশালী, সেই জেতে।"

নয়ন শান্তভাবে বলল, "সহানুভূতি। সত্যিকারের নেতা অন্যকে বুঝতে পারে, সাহায্য করতে জানে।"

সিদ্ধান্ত নেওয়া হলো—নয়ন জয়ী!

ডিভাইসটা আবার আলো ছড়াল:

"চতুর্থ পরীক্ষা সফল!
পুরস্কার: বিশ্লেষণ ক্ষমতা +৪০% বৃদ্ধি।
পরবর্তী পরীক্ষা আসছে। সতর্ক থাকো।"

কিন্তু নয়ন জানে, এই লড়াই শেষ হয়নি।

তারিক কাছে এসে ফিসফিস করে বলল, "এই যুদ্ধ কেবল শুরু হলো, নয়ন। আমি তোমার সব রহস্য ফাঁস করবো। প্রস্তুত থাকো।"
 

Comments

    Please login to post comment. Login