২০শে জুলাই, ২০২৩
সুইডেনের স্টকহোমে ঘটে গিয়েছিল এক ঘৃণ্য ঘটনা। সালওয়ান মোমিকা নামক এক নিকৃষ্ট কিট আমাদের পবিত্র গ্রন্থ সেখানকার কেন্দ্রীয় মসজিদের সামনে পোড়ায়। সবথেকে অবাক করা বিষয় হল তিনি এ ধরনের ঘটনার আগে এবং পরেও করেছিলেন এবং সেটি কয়েকদিন আগে অফিসিয়ালি ঘোষণার মাধ্যমে। যাথারিতি মানবাধিকার ও ব্যক্তিস্বাধীনতার সবক তুলে সেখানকার সরকার তাকে রক্ষায় এবং কাজটি যেন নির্বিঘ্নে করতে পারেন সেজন্য যথেষ্ট নিরাপত্তার ব্যবস্থাও করেছিলেন।
এ লোকটির নাম শুনলে যেকেউ হয়ত ভাববেন তিনি মুসলিম ছিলেন। আসলে সেটা নয়। তিনি একজন ইরাকি খৃষ্টান এবং ২০১৭ সালে সুইডেনে চলে যান। পরে নিজ ধর্ম পরিবর্তন করে তিনি নাস্তিকতা বেছে নেন। এটা হওয়াটাই স্বাভাবিক। সুবিধাবাদীরা, পশ্চিমা দেশগুলোতে পারি দিয়ে এমন কাজই করে থাকেন। কারণ এসব দেশে নাস্তিকতার প্রাধান্য অনেক বেশি, বিশেষ করে ইসলাম ধর্মকে হেয় করার প্রবনতা। শুধু তাই নয় এ সকল দেশ চেষ্টা করে যাচ্ছে সারা দুনিয়াতে এটিকে এক্সপোর্ট করতে এবং সফলও হচ্ছে যথারীতি।
এখন যুক্তি দেই, ভাল কথা তিনি খৃষ্টান থেকে নাস্তিক হলেন কিন্তু ইসলাম ধর্ম নিয়ে তাঁর এত এলার্জি কেন? তিনি ইসলাম ধর্ম সম্পর্ক কি বুঝেন? তিনি যেহেতু খৃষ্টান ছিলেন সুতরাং রাগতো পূর্ববর্তী ধর্মের উপরেই থাকার কথা ছিল। এমনকি তিনি ইরাক ছেরে আসার আগে খৃষ্টান মিলিশিয়া সংগঠন ব্যাবিলন ব্রিগেডের সাথে যুক্ত ছিলেন এবং সেখানকার এক কেন্দ্রীয় নেতা রায়ান আল-কিলদানি সাথে অভ্যন্তরীণ ক্ষমতার দ্বন্দ্বের কারনে জীবন ভয়ে সুইডেন চলে আসেন। সুতরাং, তাঁর সাথে ইসলামের কোন দ্বন্দ্ব ছিলনা বা থাকার কথাও নয়।
গত ২৯ জানুয়ারি, ২০২৫ সুইডেনে এক আততায়ীর গুলিতে নিহত হন কুখ্যাত এই নরপিশাচ। লক্ষ্য করলে দেখবেন, প্রতিটা পশ্চিমা দেশে এধরনের বহু মানুষ রয়েছেন যারা নিজেরা নাস্তিকতায় বিশ্বাসী এবং সেটাকে প্রোমোট করেন। তারা নিজেরা বিভিন্ন ধর্ম থেকে এসে থাকলেও সকলের টার্গেট একমাত্র ইসলাম ধর্ম। এর মুল কারণ, শান্তির ধর্মটাকে নগ্ন হিসেবে পরিচয় করিয়ে দেয়া। পশ্চিমা দেশগুলোর বানানো বিভিন্ন সামাজিক ও অর্থনৈতিক সংগঠন যেমন সরস ফাউন্ডেশন, FFRF এসব নিয়ে প্রকাশ্যে এবং গুপ্তভাবে (মুসলিম দেশগুলোতে) কাজ করে থাকেন। তারা এসকল ব্যক্তিবর্গকে সবদিক দিয়ে সাহায্য করেন।
আমরা সকলেই জানি,বিশ্বে প্রায় ৫৭ টি স্বাধীন মুসলিম দেশ রয়েছে। কখনো কি দেখেছেন, সেসব দেশে ঘোষণা দিয়ে যেকোন ধর্মের পবিত্র গ্রস্থ পোড়াচ্ছে আর নিরাপত্তা বাহিনী তাদেরকে সরকারের নির্দেশে সাহায্য করছে? কখনোই না কারণ মুসলিম দেশগুলো নিজ ধর্মের পাশাপাশি অন্য ধর্মকে শ্রদ্ধা করতে জানে। এটা আমাদের ধর্ম শিখিয়েছে। সকলেই হয়ত জানেন পিও রিসার্সের তথ্য মতে, ২০৭৫ সালের মধ্যে ইসলাম হবে বিশ্বের সংখ্যাগরিষ্ঠ ধর্ম। সুতরাং, সন্ত্রাসী কর্মকান্ড এবং অন্যের বিশ্বাসকে আঘাত দিয়ে শান্তি স্থাপন করা যায়না। ইসলামের পথকে অনুসরণ এবং সেটাকে বাস্তবিক অর্থে চর্চা করলেই জীবন ও সমাজ সুন্দর হয়ে উঠবে। তাই,সালওয়ান মোমিকার জীবন থেকে শিক্ষা নিয়ে আমাদের সকলের উচিত বাস্তবিক মানবাধিকার রক্ষার মাধ্যমে সকলের প্রতি শ্রদ্ধাজ্ঞাপন করা।