প্রজেক্ট আলফার গোপন গবেষণাগারে দাঁড়িয়ে নয়ন, রিহান আর তারিক তিনজনেই অনুভব করছিল—এই রহস্য কেবল শুরু। নয়নের হাতে থাকা ডিভাইসটা যেন আরও ভারী মনে হচ্ছিল।
নতুন সংকেত
হঠাৎ নয়নের ডিভাইসটা আবার আলো ছড়াল। স্ক্রিনে নতুন বার্তা ভেসে উঠল—
"সপ্তম পরীক্ষা: অতীতের সত্য উন্মোচন করো।
সময়: ৭২ ঘণ্টা
লক্ষ্য: তোমার পরিবারের সঙ্গে প্রজেক্ট আলফার সংযোগ খুঁজে বের করো।"
নয়ন হতভম্ব হয়ে গেল। তার পরিবার? এ পর্যন্ত সে কখনো ভাবেনি তার নিজের পরিবারের সঙ্গে এই প্রযুক্তির কোনো সম্পর্ক থাকতে পারে।
তারিক ধীরে ধীরে বলল, "তোমার পরিবারের কোনো সদস্য কি বিজ্ঞানী ছিলেন?"
নয়ন মাথা নাড়িয়ে বলল, "না... অন্তত আমি জানি না। কিন্তু আমার দাদু কিছু লুকিয়ে রেখেছিলেন বলে বাবার কাছ থেকে শুনেছি।"
পুরনো স্মৃতির খোঁজে
নয়ন ঠিক করল, তাকে নিজের বাড়িতে থাকা দাদুর পুরনো স্টাডিরুমে ঢুকতে হবে। বহু বছর ধরে সেই ঘর বন্ধ ছিল, কারণ নয়নের বাবা বিশ্বাস করতেন—সেখানে থাকা জিনিসগুলো তাদের জীবনকে পরিবর্তন করতে পারে।
রাতে নয়ন চুপচাপ সেই বন্ধ স্টাডিরুমে ঢুকল। ধুলায় ঢাকা পুরনো বই আর নোটবুক ছড়িয়ে ছিল। নয়ন একটা পুরনো লোহার বাক্স খুঁজে পেল।
বাক্সের ঢাকনা খুলতেই ভেতরে একটা চিঠি আর ছোট্ট একটা মেটাল কার্ড পাওয়া গেল। চিঠিতে লেখা ছিল—
"নয়ন,
যদি একদিন তুমি এই চিঠি পাও, জানবে তুমি বিশেষ একজন। আমাদের পরিবার প্রজেক্ট আলফার রক্ষক ছিল।
এই কার্ড তোমাকে সত্যের দরজা খুলতে সাহায্য করবে।"
চিঠিতে নাম লেখা ছিল—ড. অমরনাথ রায়।
নয়ন অবাক হয়ে গেল। তার দাদু একজন বিজ্ঞানী ছিলেন!
গোপন দরজা উন্মোচন
পরদিন নয়ন, রিহান আর তারিক আবার সেই গোপন গবেষণাগারে ফিরে গেল। নয়ন মেটাল কার্ডটা দরজার পাশে থাকা স্ক্যানারে ধরতেই দরজাটা খুলে গেল আর তারা একটা অন্ধকার করিডরে প্রবেশ করল।
হঠাৎ করিডরের শেষ মাথায় তারা একটা বিশাল গোলাকার চেম্বার দেখতে পেল। মাঝখানে একটা বড় মেশিন, যেটার ওপর লেখা—
"আলফা কোর: মানবচেতনার সর্বোচ্চ সীমা।"
তারিক বলল, "এই কোরটাই হয়তো সব কিছুর মূল।"
অতীতের রহস্য উন্মোচন
নয়ন কোরের সামনে দাঁড়িয়ে থাকতেই ডিভাইসটা শক্তিশালীভাবে ঝলমল করতে লাগল। স্ক্রিনে নতুন বার্তা ভেসে উঠল—
"অতীত ডেটা লোড হচ্ছে... পরিচিতি যাচাই সম্পন্ন।"
হঠাৎ তারা একটা হোলোগ্রাফিক ভিডিও দেখতে পেল। ভিডিওতে নয়নের দাদু, ড. অমরনাথ রায়, বলছিলেন—
"এই প্রজেক্টের লক্ষ্য ছিল মানুষের মস্তিষ্কের অনির্বচনীয় ক্ষমতা উন্মোচন করা। কিন্তু কিছু ভুলের কারণে এই প্রযুক্তি বিপজ্জনক হয়ে উঠেছে। কেউ যদি এই কোরের সম্পূর্ণ শক্তি ব্যবহার করতে পারে, সে সময় ও বাস্তবতা নিয়ন্ত্রণ করতে পারবে।"
নয়ন ধীরে ধীরে বুঝতে পারছিল—তার পরিবারের সঙ্গে এই রহস্য গভীরভাবে জড়িয়ে আছে।
পরীক্ষার সমাপ্তি
ডিভাইসটি আবার আলো ছড়াল:
"সপ্তম পরীক্ষা সফল!
পুরস্কার: অতীত স্মৃতি ও তথ্য পুনরুদ্ধার ক্ষমতা।
পরবর্তী পরীক্ষা আসছে। প্রস্তুত থাকো।"
নয়ন জানে, সে শুধু নিজের জন্য নয়—তার পরিবারের অসমাপ্ত দায়িত্ব শেষ করার জন্যও এগিয়ে যাচ্ছে।