বৃষ্টি শুরু হয়েছে সেই ভোরবেলায়। এখন অপরাহ্ন। বৃষ্টি থামবার জো নেই। কতক্ষণ হলে হালকা কমে এরপর দ্বিগুণ গতিতে ছোটে। এর মাঝে আমি একটি কাকের দেখা পেলাম; রাস্তার ধারে, আজিজ ভাইয়ের দোকানের বাইরে একটি কাক দাঁড়িয়ে আছে। দাঁড়িয়ে আছে বলার থেকে এটা বলা ভালো, বৃষ্টিতে ভিজতে ভিজতে তার আর ভেজার কিচ্ছুটি নেই।ঠান্ডায় একপাশে স্থীর হয়ে দাঁড়িয়ে আছে। এই কাকটির বোধহয় কোনো প্রিয়জন নেই।ছোটো বেলা থেকেই দেখে আসছি, কোনো অসুস্থ কাককে যখন মাটিতে দেখা যায়, তার আশেপাশে, উপরে-নিচে কাকদের নিরাপত্তা বেষ্টনী মজুদ হয়। তাকে দেখতে পুরো এলাকার কাক চলে আসে।তারা কাককে শেষবারের মতো বিদায় দিতে আসে। এটা বোধহয় 'কাকমৃত্যুর অপেক্ষা' নামক কোনো সামাজিক অনুষ্ঠানের নাম। কিন্তু এ কাকটির বেলায় হয়েছে ঠিক উল্টো। কাকটি চেচাতে চেচাতে তার ভোকাল কর্ড মনে হয় ফাটিয়ে ফেলেছে,কাক আসার তো দূরে থাক; কোনো কা-ধ্বনিও নেই। আমি কাকটার পাশে গিয়ে দাড়ালাম, এতে তার বিন্দু পরিমাণ ভ্রূক্ষেপও নেই। আমি পায়ের কারসাজি করে আরেকটু কাছে গেলাম। কিন্তু তার পাখা ঝাপটানো নেই। তাকে মেরে ফেললেও আর মনে হয় না কা - ধ্বনি শোনাবে। বৃষ্টি পড়ছে,সন্ধ্যার সময় গড়াচ্ছে,অন্ধকার প্রায় হতে চলল।আমি আর কাক শাটারবদ্ধ দোকানের সামনে দাড়িয়ে। হঠাৎ দুজনে একসাথে একটা দীর্ঘশ্বাস ছাড়লাম।আমার জীবনের সাথে এ কাকেরও কী অদ্ভূত মিল!