নয়ন, রিহান আর তারিক—তিনজন এখন এক অজানা পথে এগিয়ে চলেছে। আলফা কোর-এর রহস্য উন্মোচন করতে গিয়ে নয়ন জানতে পেরেছে তার নিজের পরিবারের গোপন ইতিহাস। কিন্তু এই রহস্যের গভীরে আরও কিছু আছে, যা এখনো তাদের অজানা।
নতুন সংকেত
রাতে নয়ন যখন নিজের ঘরে বসে ডিভাইসটা নিয়ে ভাবছিল, হঠাৎ স্ক্রিনে আবার একটি নতুন বার্তা ভেসে উঠল—
"অষ্টম পরীক্ষা: অদৃশ্য শত্রুকে চিহ্নিত করো।
সময়: ৪৮ ঘণ্টা
লক্ষ্য: তোমার আশপাশের বিশ্বাসঘাতক খুঁজে বের করো।"
নয়নের বুক ধক করে উঠল। বিশ্বাসঘাতক? কে হতে পারে? সে কি এতদিন ধরে ভুল কারও উপর বিশ্বাস রেখেছে?
অপরিচিত বার্তা
পরদিন সকালে স্কুলে যাওয়ার সময় নয়ন লক্ষ্য করল, কেউ একজন গোপনে তার দিকে নজর রাখছে। তার ডিভাইস হালকা কম্পন অনুভব করল, যেন তার চারপাশে কোনো অজানা শক্তি সক্রিয় আছে।
স্কুলে পৌঁছানোর পর নয়ন তারিকের দিকে তাকিয়ে বলল, "আমাদের ওপর কেউ নজর রাখছে।"
তারিক একটু অবাক হয়ে বলল, "কারও সন্দেহ হচ্ছে তোমার?"
নয়ন মাথা নাড়িয়ে বলল, "কিছু বুঝতে পারছি না, তবে ডিভাইস সতর্ক সংকেত দিয়েছে।"
ঠিক তখনই রিহান ছুটে এসে বলল, "নয়ন, তোমার লকারে একটা চিঠি রাখা আছে!"
চিঠিটা খুলে নয়ন পড়ে দেখল—
*"প্রজেক্ট আলফার ক্ষমতা তোমার হাতে থাকার কথা ছিল না। সাবধান হয়ে যাও।
অজ্ঞাত"*
বিশ্বাসঘাতক কে?
নয়ন, রিহান আর তারিক গোপনে স্কুলের পর ল্যাবে ফিরে গেল। তারা ঠিক করল, আজ রাতেই ল্যাবের ভেতরে আরও গভীরে প্রবেশ করবে।
কিন্তু নয়নের মনে একটা প্রশ্ন ঘুরপাক খাচ্ছিল—এই রহস্য জানে কেবল তাদের তিনজন। তাহলে কি তাদের মধ্যেই কেউ বিশ্বাসঘাতক?
তারিক হঠাৎ বলল, "ডিভাইসে কি এমন কিছু আছে, যেটা দিয়ে শত্রুর পরিচয় খুঁজে বের করা যায়?"
নয়ন ডিভাইসটা সক্রিয় করল। স্ক্রিনে নতুন একটি অপশন দেখাল—
"এনার্জি ট্রেসার: অদৃশ্য শক্তি শনাক্তকরণ"
নয়ন সেটি চালু করতেই আশপাশের চারপাশে সবকিছুর শক্তির ছায়া দেখা গেল। কিন্তু অবাক করা বিষয় হলো—রিহানের শরীর থেকে একটা অদ্ভুত কম্পন বের হচ্ছিল।
রিহান কি সত্যিই বন্ধু?
নয়ন ধীরে ধীরে বলল, "রিহান... তোমার শরীর থেকে এই অদ্ভুত কম্পন আসছে কেন?"
রিহান ভ্যাবাচ্যাকা খেয়ে বলল, "আমি কিছু জানি না, বিশ্বাস করো!"
তারিক সন্দেহের চোখে তাকিয়ে বলল, "তুমি কি আমাদের কিছু লুকাচ্ছো?"
রিহান কাঁপা গলায় বলল, "না! কিন্তু কয়েকদিন ধরে আমি অদ্ভুত কিছু অনুভব করছি। যেন কেউ আমার মনের ভেতর কথা বলছে…"
এই কথা শুনে নয়নের মনে ভয় জমা হলো। যদি কেউ বাইরে থেকে রিহানকে নিয়ন্ত্রণ করে?
গোপন শক্তির আবিষ্কার
তারা তিনজন আবারও আলফা কোরের কাছে গেল। নয়ন ডিভাইসটা কোরের সামনে রাখতেই আরও একবার স্ক্রিনে বার্তা ভেসে উঠল—
"পরীক্ষা অর্ধেক সম্পন্ন।
বিশ্বাসঘাতক তোমার কাছেই আছে।
কিন্তু সে নিজেও জানে না, সে কে।"
তারিক চমকে বলল, "এর মানে কি রিহানকে কেউ ব্যবহার করছে?"
নয়ন মাথা ঝাঁকিয়ে বলল, "হয়তো। আর কেউ যদি ওকে নিয়ন্ত্রণ করতে পারে, তাহলে সে আমাদের থেকেও বেশি শক্তিশালী।"
শত্রুর উপস্থিতি
হঠাৎ গবেষণাগারের আলো মিটমিট করতে শুরু করল। নয়ন অনুভব করল, কেউ যেন দূর থেকে তাদের পর্যবেক্ষণ করছে।
ডিভাইসটা আবার আলো ছড়াল—
"অষ্টম পরীক্ষা সফল!
পুরস্কার: মন নিয়ন্ত্রণ সনাক্ত করার ক্ষমতা।
পরবর্তী পরীক্ষা আসছে। প্রস্তুত থাকো।"
তিনজনই জানে, এ লড়াই শুধু প্রযুক্তির নয়—এ লড়াই অজানা এক শত্রুর বিরুদ্ধে।