Posts

উপন্যাস

"মনোযোগের শক্তি পৃথিবীজুড়ে শক্তিশালী ব্যক্তিদের জন্য অনুকূল।

March 11, 2025

মোঃ রাজিব

22
View

নয়ন, রিহান, আর তারিক—তিনজনই এখন এক সংকটময় মুহূর্তে দাঁড়িয়ে। তাদের সামনে দাঁড়িয়ে থাকা বিপদ, যা তারা কিছুদিন আগেও ভাবেনি, আজ তা তাদের জীবনের সঙ্গে অবিচ্ছেদ্য হয়ে উঠেছে। অদৃশ্য শত্রু তাদের কাছে আর এক রহস্য হয়ে দাঁড়িয়েছে। তবে সবচেয়ে বড় প্রশ্ন, রিহান কি তাদের শত্রু নয়, বন্ধুই?

বিশ্বাসের সংকট

তিনজনই ল্যাবে ফিরে এসেছে, কিন্তু রিহানের অদ্ভুত আচরণ তাদের মধ্যে সন্দেহের জন্ম দিয়েছে। নয়ন নিজের অজান্তেই বারবার রিহানের দিকে তাকায়, যেন তার মধ্যে কিছু অজানা শক্তি কাজ করছে।

রিহান, তারিক আর নয়ন একসাথে বসে আলোচনা করছিল। নয়ন বলল, "ডিভাইস বলছে আমাদের কাছে বিশ্বাসঘাতক আছে, আর এটা সেই শক্তির ভেতর থেকেই আসছে। কিন্তু রিহান, তুমি জানো না তোমার ভিতর কী ঘটছে, তাই না?"

রিহান এক দৃষ্টিতে তাকিয়ে থাকল। কিছুক্ষণ চুপ থাকার পর সে বলল, "হ্যাঁ, আমি কিছুই জানি না, কিন্তু কিছু সময় ধরে আমি নিজেকে হারিয়ে ফেলেছি। মনে হয় যেন কিছু অদৃশ্য শক্তি আমাকে নিয়ন্ত্রণ করছে।"

তারিক উদ্বিগ্ন হয়ে বলল, "কিন্তু এটা কীভাবে সম্ভব? আমাদের মনে হচ্ছে যে কেউ আমাদের মধ্যে গোপনে এই শক্তি ঢুকিয়ে দিচ্ছে।"

নয়ন গভীরভাবে ভাবতে থাকল। রিহান কি সত্যিই তাদের শত্রু? নাকি, তাকে কারো দ্বারা নিয়ন্ত্রিত করা হচ্ছে?

এক নতুন পথের সন্ধান

তাদের আলফা কোরের কাছে ফিরে যাওয়ার দরকার ছিল, যেখানে তাদের শেষ পরীক্ষা অবশেষে শুরু হবে। ডিভাইসের স্ক্রিনে তখন আরেকটি বার্তা ভেসে উঠল—

"দশম পরীক্ষা: মনোযোগের শক্তি পরীক্ষা করো।
সময়সীমা: ২৪ ঘণ্টা
লক্ষ্য: শত্রুর শক্তির উৎস নির্ধারণ করো।"

এবার তারা বুঝতে পারল, যে শত্রু তাদের উপর নজর রাখছে, সে সম্ভবত তাদের মধ্যে একজনকে নিয়ন্ত্রণ করছে। কিন্তু কে? তাদের কাছেই বা কি এতো শক্তি ছিল?

নয়ন ডিভাইসটির মাধ্যমে আরও একবার মনোযোগের শক্তির ব্যাপারে তথ্য খুঁজতে লাগল। অবশেষে, ডিভাইসের স্ক্রিনে একটি রহস্যময় নোটিফিকেশন আসল—

"মনোযোগের শক্তি পৃথিবীজুড়ে শক্তিশালী ব্যক্তিদের জন্য অনুকূল। তুমি যদি শত্রুকে চিহ্নিত করতে চাও, তার মনোযোগের দিক অনুসরণ করো।"

তারা বুঝতে পারল, এই শক্তির উৎস সম্ভবত মনোযোগের মাধ্যমেই হতে পারে, এবং এটি কোথাও কাছেই লুকিয়ে আছে।

গোপন এক অনুসন্ধান

তারা তিনজন এবার আলফা কোরের চেম্বারে ফিরে গিয়ে আরও গভীরভাবে অনুসন্ধান শুরু করল। কোরের কাছে যেয়ে, রিহান ডিভাইসটা হালকা হাতে ধরে বলল, "এটা যদি আমাদের সাহায্য করতে পারে, তবে হয়তো আমরা সত্যিই শত্রু খুঁজে বের করতে পারব।"

নয়ন ও তারিক দুইজনেই একে অপরের দিকে তাকিয়ে কিছুটা উদ্বিগ্ন হয়ে বলল, "আমরা কি প্রস্তুত?"

অবশেষে, ডিভাইস একেবারে নতুন কিছু তথ্য দিল। স্ক্রিনে একটি নাম উন্মোচিত হলো—

"রহিম আহমেদ"

নয়ন এক মুহূর্ত থেমে গিয়ে বলল, "রহিম আহমেদ? এই নামটা কেন পরিচিত মনে হচ্ছে?"

তারিক বলল, "এই নাম তো আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন প্রফেসর!"

রিহান অবাক হয়ে বলল, "প্রফেসর রহমান! আমি জানি না, কিন্তু অনেক দিন ধরেই আমাদের চারপাশে কিছু অদ্ভুত ঘটনা ঘটছে। মনে হয়, এই মানুষটাই আমাদের শত্রু।"

বিশ্বাসের দ্বন্দ্ব

এখন নয়ন, রিহান আর তারিক একে অপরের দিকে তাকিয়ে ভাবছিল। রহিম আহমেদ কি তাদের বিশ্বাসঘাতক? তারা কি ভুল পথে যাচ্ছে?

তাদের সামনে আর এক নতুন পথ খোলা, যা তারা অজানা মনে করেছিল। রহিম আহমেদের সাথে সাক্ষাৎ না করে তারা কখনোই জানবে না, তার মধ্যে কী শক্তি লুকিয়ে আছে।

পরীক্ষার সমাপ্তি

ডিভাইস আবার ঝলমল করে উঠল—

"দশম পরীক্ষা সফল!
পুরস্কার: মনোযোগের শক্তির উৎস শনাক্তকরণ ক্ষমতা।
পরবর্তী পরীক্ষা আসছে। প্রস্তুত থাকো।"

তিনজন জানে, তারা এখন অনেক কাছাকাছি পৌঁছে গেছে। তবে শত্রুদের মোকাবিলা তাদের জন্য আরও কঠিন হয়ে উঠবে।

Comments

    Please login to post comment. Login