Posts

উপন্যাস

অজানা ভয়

March 12, 2025

মোঃ রাজিব

9
View

নয়ন, রিহান, আর তারিক এখন আরও এক ধাপ এগিয়ে গেছে। রহস্যের পর্দা একটু একটু করে সরছে, কিন্তু নতুন প্রশ্ন তাদের চিন্তাগুলোকে ঘিরে ধরেছে—প্রফেসর রহিম আহমেদ কে? আর তার সাথে আলফা কোরের সম্পর্ক কী?

প্রফেসরের সন্ধান

স্কুল শেষে নয়ন আর তারিক গোপনে প্রফেসর রহিম আহমেদের সম্পর্কে খোঁজ নিতে শুরু করল। রিহান তাদের সঙ্গে আসেনি—নয়ন চেয়েছিল ও কিছুটা বিশ্রাম নিক। কারণ নয়নের মনে একটা চাপা ভয় ছিল, যদি সত্যিই রিহানকে কেউ নিয়ন্ত্রণ করে?

লাইব্রেরির পুরনো রেকর্ড ঘেঁটে তারা জানতে পারল, প্রফেসর রহিম আহমেদ একজন পদার্থবিজ্ঞানী, যিনি আগে "কোয়ান্টাম নিউরাল প্রজেক্ট" নামে একটি গোপন গবেষণার সঙ্গে যুক্ত ছিলেন।

তারিক চোখ বড় বড় করে বলল, "কোয়ান্টাম নিউরাল প্রজেক্ট? এটা তো মানুষের মস্তিষ্ক নিয়ন্ত্রণ করার গবেষণা ছিল!"

নয়ন গভীরভাবে চিন্তা করতে লাগল। "তার মানে… রিহানের উপর যদি এই প্রজেক্টের কোনো প্রভাব থাকে?"

অজানা ভয়

সন্ধ্যায় নয়ন যখন ঘরে ফিরল, তখন রিহান তাকে মেসেজ করল—

"নয়ন, আমার মাথা খুব ভারী লাগছে। মনে হচ্ছে কেউ আমার ভেতরে কথা বলছে…"

নয়ন আতঙ্কিত হয়ে দ্রুত তারিককে ফোন দিল। "আমাদের এখনই রিহানের কাছে যেতে হবে।"

দুজন ছুটে গেল রিহানের বাড়িতে। দরজা খুলে রিহান ক্লান্ত চোখে তাকাল, যেন ওর শরীরে কোনো শক্তি নেই।

তারিক উদ্বিগ্ন হয়ে বলল, "রিহান, ঠিক আছো তো?"

রিহান ধীরে ধীরে মাথা নাড়ল। "আমি জানি না… কিন্তু আমি স্বপ্নে এক অন্ধকার কক্ষ দেখি। সেখানে একটা কণ্ঠস্বর আমাকে ডাকছে। বলছে, 'আলফা কোর আমার চাই!' "

নয়ন চমকে উঠল। কেউ বা কিছু আলফা কোর-এর জন্য রিহানকে ব্যবহার করছে।

মন নিয়ন্ত্রণের রহস্য

নয়ন দ্রুত তার ডিভাইসটি সক্রিয় করল। নতুন একটি অপশন দেখা গেল—

"মাইন্ড ট্রেসার: মস্তিষ্কের অদৃশ্য সংকেত চিহ্নিত করুন।"

ডিভাইস চালু করতেই রিহানের মাথার চারপাশে একধরনের অদৃশ্য কম্পন ধরা পড়ল। কম্পনটি কোনো নির্দিষ্ট উৎস থেকে আসছে—এবং সেই উৎসের নাম আবারও ফুটে উঠল:

"প্রফেসর রহিম আহমেদ"

তারিক বলল, "আমাদের এখনই প্রফেসরের সঙ্গে দেখা করতে হবে। এর শেষ করতে হবে।"

প্রফেসরের মুখোমুখি

পরের দিন সকালে তিনজন গোপনে প্রফেসর রহিম আহমেদের অফিসে গেল। দরজা বন্ধ ছিল, কিন্তু নয়ন তার ডিভাইস দিয়ে লক খুলে ফেলল। তারা ধীরে ধীরে ভেতরে ঢুকে পড়ল।

অফিসের ভেতর ছিল বইয়ের স্তূপ আর নানা প্রযুক্তি। হঠাৎ নয়নের চোখ আটকালো এক পুরনো ফাইলের দিকে, যার ওপরে লেখা ছিল—

"প্রজেক্ট আলফা: মস্তিষ্ক নিয়ন্ত্রণ ও ভবিষ্যৎ চেতনা"

তারিক বিস্মিত হয়ে বলল, "এই ফাইলটাই কি সবকিছুর চাবিকাঠি?"

ঠিক তখনই পেছন থেকে একটা ঠান্ডা গলা ভেসে এল—

"তোমরা আমার অনেক কাজ নষ্ট করছো, বাচ্চারা!"

তিনজন পিছনে ঘুরতেই দেখল, প্রফেসর রহিম আহমেদ তাদের সামনে দাঁড়িয়ে আছেন। চোখ দুটোতে রহস্যময় ঝলক, মুখে ঠান্ডা হাসি।

প্রকৃত শত্রু প্রকাশিত

প্রফেসর ধীরে ধীরে সামনে এগিয়ে এসে বললেন, "তোমরা জানো, আলফা কোর শুধু একটি যন্ত্র নয়। এটি মানুষের মন ও বাস্তবতাকে নিয়ন্ত্রণ করতে পারে। আমি এই শক্তিকে পুরোপুরি জাগাতে চাই।"

নয়ন সাহস করে বলল, "কিন্তু কেন? আপনি আমাদের বন্ধুদের ব্যবহার করছেন!"

প্রফেসর রহিম হেসে উঠলেন। "রিহান শুধু একটি মাধ্যম। আমি তার মস্তিষ্কে এমন সংকেত পাঠিয়েছি, যাতে সে আমার জন্য আলফা কোরের সমস্ত শক্তি আনলক করতে পারে।"

তারিক রাগে ফেটে পড়ল, "আপনার এই ক্ষমতা কি আপনাকে দানব বানায়নি?"

প্রফেসর ঠান্ডা কণ্ঠে বললেন, "দানব? আমি তো স্রষ্টা হতে চাই। আলফা কোরের মাধ্যমে আমি মানুষের চিন্তা নিয়ন্ত্রণ করতে পারব।"

শেষ লড়াইয়ের শুরু

নয়ন ডিভাইসের মাধ্যমে রিহানের মস্তিষ্কের সংকেত কেটে দেওয়ার চেষ্টা করতে লাগল। হঠাৎই ডিভাইস থেকে সাদা আলো ছড়িয়ে পড়ল।

ডিভাইস বলল—

"মাইন্ড ট্রেসার সক্রিয়।
শত্রুর নিয়ন্ত্রণ বিচ্ছিন্ন হচ্ছে।"

রিহান হঠাৎ কেঁপে উঠল। সে ধীরে ধীরে চেতনা ফিরে পেল এবং বলল, "নয়ন… আমি ঠিক আছি!"

প্রফেসরের মুখে ক্রোধের ছাপ পড়ল। তিনি চিৎকার করে বললেন, "এই খেলা এখনো শেষ হয়নি!"

এরপর তিনি নিজের হাতের ডিভাইস সক্রিয় করতেই পুরো রুম কেঁপে উঠল।

নতুন বিপদ আসছে

নয়ন, রিহান আর তারিক দ্রুত রুম থেকে বেরিয়ে এল। তাদের সামনে এখন এক নতুন চ্যালেঞ্জ।

আলফা কোরের শক্তি কি তাদের হাতেই থাকবে? নাকি প্রফেসর রহিম আবার ফিরে আসবে আরও ভয়ঙ্কর শক্তি নিয়ে?

Comments

    Please login to post comment. Login