ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য এবং গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের শিক্ষক প্রফেসর ড. আবু আহসান মোহাম্মদ সামসুল আরেফিন সিদ্দিকের জানাজা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় মসজিদ বা শহীদ মিনারে করতে অনুমতি মিলেনি। কারা করতে দেয়নি? যারা গেল ১৫ বছর আ'ওয়ামী লীগের ভিতরে বসে যা খাওয়ার তা খেয়ে গেছে, যা পাওয়ার তা পেয়ে গেছে। প্রমাণ? এখনকার বঙ্গবন্ধু বিদ্বেষী আইন উপদেষ্টার ফেসবুক টাইমলাইন দেখে আসুন শেখ মুজিবের প্রতি কত না আদিখ্যেতা, কত না প্রশস্তিমূলক কবিতা!
দোষগুণ মিলিয়েই মানুষ। আরেফিন স্যারের শত শত অনুরক্ত শিক্ষার্থী আছেন যারা আ'ওয়ামী রাজনীতির ধারেকাছেও যান না। তবু তাদের মনে আ'ওয়ামী অন্তপ্রাণ শিক্ষকের প্রতি শ্রদ্ধা এতটুকু কমেনি। আমরা এমনটা শুনিনি যে, আরেফিন স্যার রাজনৈতিক মতাদর্শগত ভিন্নতার কারণে তাঁর পূর্ববর্তী উপাচার্যদেরকে জীবদ্দশায় অথবা প্রয়াত হওয়ার পর ক্যাম্পাসে প্রবেশে বাধা দিয়েছেন কিংবা জানাজা নামাজ পড়তে দেননি।
এটা সত্য শিক্ষক-সাংবাদিকের দলীয় রাজনৈতিক পরিচয় থাকা উচিত নয়। সর্বান্তকরণে তাদেরকে নিরপেক্ষতা চর্চা করা উচিত। অন্যথায় নির্দিষ্ট শিক্ষার্থী কিংবা বস্তুনিষ্ঠ তথ্যের প্রতি পক্ষপাত তৈরি হতে পারে।
কিন্তু মশাই এর নাম বাংলাদেশ।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতার চেতনার বিরুদ্ধে গিয়ে কোনো মানুষ এখন বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি হতে পারবেন? অতএব রাজনীতিতে কেউ কারো চেয়ে কম তো যান না।
আরেফিন স্যারের দায় থাকলে কোর্টে যান। বিচার প্রার্থনা করেন। দোষী হলে মরণোত্তর সাজা দিন। কোনো সমস্যা নাই। কিন্তু একজন মানুষ না ফেরার দেশে চলে যাওয়ার পর তাঁর আজীবনের কর্মস্থলে জানাজা পড়বার আনুমতি দেবেন না -এটাকে চরম অভব্যতা, প্রতিহিংসা আর ঘৃণা ছাড়া অন্য কিছু দিয়েই জাস্টিফাইড করা যায় না।
আজ আপনি লাশের প্রতিও ঘৃণার পরাকাষ্ঠা দেখাচ্ছেন তো? কালকের জন্য আপনিও প্রস্তুত হোন। মহাকাল সব মনে রাখে। কাউকে ফেরায় না।
লেখক: সাংবাদিক
১৪ মার্চ ২০২৫