Posts

উপন্যাস

আকাশে সূর্য ধীরে ধীরে পশ্চিমে ঢলে পড়ছে।

March 14, 2025

মোঃ রাজিব

25
View

আকাশে সূর্য ধীরে ধীরে পশ্চিমে ঢলে পড়ছে। নয়ন, রিহান আর তারিক ভাবছিল সবকিছু শেষ। কিন্তু সত্যিই কি সব শেষ হয়েছে?

গত রাতের ঘটনাগুলো যেন এখনও চোখের সামনে ভেসে উঠছে। আলফা কোর ধ্বংস হয়েছে, প্রফেসর রহিম হেরে গেছে, কিন্তু নয়নের মনে এক অজানা আশঙ্কা দানা বাঁধছে।

নতুন সংকেতের উত্থান

স্কুল শেষে নয়ন, রিহান আর তারিক পার্কের বেঞ্চে বসে বিশ্রাম নিচ্ছিল। হঠাৎ নয়নের ডিভাইস থেকে একটা অদ্ভুত শব্দ বের হতে লাগল—

"বিপদ সতর্কতা: অজানা সংকেত সনাক্ত হয়েছে। উৎস চিহ্নিত করা যাচ্ছে না।"

রিহান উদ্বিগ্ন হয়ে বলল, "এটা আবার কী? আমরা তো প্রফেসরকে থামিয়ে দিয়েছি, তাই না?"

তারিক গভীরভাবে চিন্তা করে বলল, "হয়তো… কিন্তু সম্ভবত প্রফেসরের পেছনে কেউ ছিল।"

নয়ন দ্রুত ডিভাইসের মাধ্যমে সংকেত বিশ্লেষণ শুরু করল। স্ক্রিনে একটি অচেনা কোড ভেসে উঠল—

"ZETA-X: কোর পুনর্জাগরণ প্রকল্প।"

নয়ন অবাক হয়ে বলল, "জেটা-এক্স? এটা আবার কী?"

এক অজানা মেসেজ

হঠাৎ নয়নের ফোনে একটি অচেনা নম্বর থেকে মেসেজ এল—

"আলফা কোর ধ্বংস করেছো বলে ভেবো না সব শেষ। আসল খেলা এখন শুরু হয়েছে। ZETA-X আমাদের হাতে। সময়ের আগে থামাতে পারলে পারো।"

রিহান আতঙ্কিত হয়ে বলল, "মানে প্রফেসরের চেয়েও বড় কেউ এই প্রকল্পের নিয়ন্ত্রণে আছে?"

নয়ন গভীরভাবে বলল, "যদি সত্যিই ZETA-X সক্রিয় হয়, তবে শুধু রিহান নয়, পুরো শহর বিপদের মুখে পড়বে। আমাদের এটা থামাতে হবে।"

নতুন তদন্ত শুরু

তারা তিনজন সিদ্ধান্ত নিল ZETA-X প্রকল্প সম্পর্কে তথ্য খুঁজবে। নয়ন তার বাবার পুরনো গবেষণার ডেটাবেসে খোঁজা শুরু করল। দীর্ঘক্ষণ পরে একটি লুকায়িত ফাইল পাওয়া গেল।

ফাইলে লেখা ছিল—

"ZETA-X: মানুষের মস্তিষ্ককে সম্পূর্ণভাবে নিয়ন্ত্রণ করার চূড়ান্ত প্রযুক্তি। এই প্রকল্পের মূল কারিগর: DR. X"

তারিক বিস্মিত হয়ে বলল, "এই DR. X কে?"

নয়ন চিন্তিত মুখে বলল, "কেউ একজন এই প্রযুক্তি নিয়ে এগিয়ে চলছে। আমাদের আগে জানতে হবে সে কোথায়।"

ছায়ার ভেতরে মুখোশধারী

সেদিন রাতেই নয়ন তার ডিভাইসে একটি ট্র্যাকার কোড প্রোগ্রাম করল, যা অজানা সংকেত শনাক্ত করতে পারে। কয়েক ঘণ্টা পরে হঠাৎ ডিভাইস থেকে সিগন্যাল পাওয়া গেল—

"সঙ্কেতের উৎস: অ্যাবান্ডনড টেক ল্যাব, শহরের দক্ষিণ প্রান্ত।"

রিহান বলল, "চলো, কালই সেখানে গিয়ে দেখি কী হচ্ছে!"

লুকানো ল্যাবের সন্ধান

পরদিন সকালে তারা তিনজন পুরনো প্রযুক্তি গবেষণাগারে পৌঁছাল। চারপাশে ভাঙা যন্ত্রপাতি আর জং ধরা দরজা। নয়ন ডিভাইস দিয়ে লক খুলে ফেলল। ভেতরে ঢুকে তাদের সামনে এক বিশাল নিয়ন্ত্রণকক্ষ।

হঠাৎ তারা শুনতে পেল কোনো একজনের কণ্ঠ—

"তোমরা বেশ সাহস দেখিয়েছো, কিন্তু আমাকে থামানো সহজ নয়।"

একজন মুখোশধারী ধীরে ধীরে ছায়া থেকে বেরিয়ে এল। তার হাতে ছিল এক অদ্ভুত ডিভাইস, যা ZETA-X প্রকল্পকে নিয়ন্ত্রণ করতে পারে।

DR. X-এর আসল পরিচয়

তারিক চিৎকার করে বলল, "তুমি কে?"

মুখোশধারী হেসে বলল, "আমি DR. X। প্রফেসর রহিম তো ছিল শুধুই এক পুতুল। আমি তার পেছনের আসল চালক।"

নয়ন দৃঢ়ভাবে বলল, "তুমি যা-ই হও, আমরা তোমাকে থামাবো।"

DR. X বলল, "আলফা কোর ছিল শুরু। ZETA-X আমার আসল পরিকল্পনা। আমি পুরো মানবজাতির চিন্তাধারা নিয়ন্ত্রণ করব। তোমরা কি আমাকে থামাতে পারবে?"

শেষ লড়াইয়ের প্রস্তুতি

DR. X একটি সুইচ টিপতেই নিয়ন্ত্রণকক্ষে আলো ঝলমল করে উঠল। নয়ন অনুভব করল এই প্রযুক্তি আলফা কোরের চেয়েও ভয়ঙ্কর।

নয়ন তার ডিভাইস চালু করল। স্ক্রিনে নির্দেশ এল—

"ZETA-X সিস্টেমকে ব্লক করতে 'মাইন্ড ফ্রিকোয়েন্সি ডিসরাপ্টার' সক্রিয় করুন।"

রিহান আর তারিক নয়নের পাশে দাঁড়িয়ে দৃঢ় কণ্ঠে বলল, "আমরা একসঙ্গে আছি। আসো, DR. X-এর খেলা শেষ করি!"
 

Comments

    Please login to post comment. Login