পোস্টস

নিউজ

স্বাধীন ফিলিস্তিন রাষ্ট্র তালেবানের মতো হবে বলায় সমালোচনার মুখে রুশদি

২৪ মে ২০২৪

নিউজ ফ্যাক্টরি

Featured Image
ব্রিটিশ-আমেরিকান লেখক সালমান রুশদি সম্প্রতি ফিলিস্তিন রাষ্ট্রের স্বাধীনতার বিষয়ে মন্তব্য করে ব্যাপক সমালোচনার মুখে পড়েছেন। গাজা উপত্যকায় ৭ মাসের বেশি সময় ধরে গণহত্যা চালাচ্ছে ইসরায়েলি বাহিনী। এই গণহত্যা বন্ধে স্বাধীন ফিলিস্তিন রাষ্ট্র গঠনের প্রয়োজনীয়তা নিয়ে বিশ্বের বেশিরভাগ মানুষ যখন কথা বলছে, সে সময় বিতর্কিত একটি মন্তব্য করে ক্ষোভের জন্ম দিয়েছেন তিনি।    

১৯ মে জার্মান টিভি আরবিবির সঙ্গে কথা বলার সময় রুশদি বলেছিলেন, হামাস শাসিত ফিলিস্তিন রাষ্ট্র ইরানের ক্লায়েন্ট হবে। একটি স্বাধীন ফিলিস্তিন রাষ্ট্র আরেকটি তালেবান রাষ্ট্রের মতোই হবে।    

ভারতীয় বংশোদ্ভূত এই লেখক বিস্ময় প্রকাশ করে বলেছেন, এটি একটি অদ্ভুত বিষয় যে বিশ্বব্যাপী শিক্ষার্থীরা হামাসের মত একটি ফ্যাসিবাদী সন্ত্রাসী গোষ্ঠীকে সমর্থন করছে। মূলত গাজায় ইসরায়েলের সামরিক অভিযানের বিরুদ্ধে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, ইউরোপ, মধ্যপ্রাচ্য এবং বিশ্বের অন্যান্য অংশে ছড়িয়ে পড়া বৃহৎ ছাত্র বিক্ষোভকে ইঙ্গিত করে তিনি এই মন্তব্য করেছেন।  

৭৬ বছর বয়সি এই লেখক জানান, এই বিষয়টি তাকে বিরক্ত করেছে। এই ছাত্র সমাবেশগুলোতে হামাসের কথা উল্লেখ করা হয়নি। অথচ ফিলিস্তিনি এই গোষ্ঠীটি ৭ অক্টোবর দক্ষিণ ইসরায়েলে প্রথম আক্রমণ করেছিল।    

তিনি বলেছেন, ‘শিক্ষার্থীরা স্বাধীন ফিলিস্তিন রাষ্ট্রের দাবি করছে। তারা বলছে ফিলিস্তিনকে স্বাধীন কর। আমি আমার জীবনের বেশিরভাগ সময় একটি পৃথক ফিলিস্তিন রাষ্ট্রের পক্ষে ছিলাম। কিন্তু এখন যদি একটি ফিলিস্তিন রাষ্ট্র থাকত, তাহলে সেটা হামাস দ্বারা পরিচালিত হতো। এটিকে তারা তালেবানের মতো রাষ্ট্রে পরিণত করত। এটি ইরানের একটি স্যাটেলাইট রাষ্ট্র হতো।'    

তিনি যোগ করেছেন, ‘পশ্চিমা বামদের প্রগতিশীল আন্দোলন কি এটাই তৈরি করতে চায়?’  

এদিকে তার এই সাক্ষাতকার প্রচারিত হওয়ার পর অনেকেই ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। স্কটিশ লেখক এবং শিক্ষাবিদ গেরি হাসান বলেছেন, ‘রুশদির মন্তব্য ভয়ংকর। ফিলিস্তিন রাষ্ট্র বিশ্ব দ্বারা স্বীকৃত কিন্তু ১৯৪৮ সাল থেকে কেবল ইসরায়েল এটির অস্তিত্ব অস্বীকার করে আসছে।'      

ফিলিস্তিনপন্থী ইহুদি-হাঙ্গেরিয়ান অ্যাক্টিভিস্ট অনিতা জাসুরসান বলেছেন, ‘ফিলিস্তিনিদের গণহত্যা হলেও সালমান রুশদি এবং জাডি স্মিথের মতো সাংস্কৃতিক অভিজাতদের পশ্চিমা উদার আধিপত্যবাদী বিশ্ব ব্যবস্থাকে রক্ষা করতে হবে। কারণ এই ব্যবস্থা তাদের পুরস্কৃত করে। তারা সাম্রাজ্যবাদী আধিপত্যের কাঠামোর একটি অংশ।' 

ডানপন্থী এবং অতি ডানপন্থীরা ব্যাপকভাবে রুশদির এই সাক্ষাতকার শেয়ার করেছে। ইসরায়েলি কূটনীতিক ডেভিড সারাঙ্গাও উৎসাহের সঙ্গে এটি শেয়ার করেছেন।

তবে বিতর্কিত এই লেখক গাজা উপত্যকায় ব্যাপক মৃত্যুর কথা স্বীকার করেছেন। ৭ মাসের বেশি সময় ধরে চলা গাজা যুদ্ধে ৩৫ হাজারের বেশি ফিলিস্তিনিকে হত্যা করেছে ইসরায়েলি বাহিনী। নিহতদের বেশিরভাগই নারী এবং শিশু। 

সূত্র: দ্য গার্ডিয়ান, দ্য নিউ আরব