
ছয় দিন বাকি...
রাফির শরীর ঘামতে শুরু করলো। ফোনটা বন্ধ থাকার পরও কীভাবে স্ক্রিন জ্বলে উঠল? গলার স্বর শুকিয়ে গেলেও সাহস করে সে ফোনটা হাতে তুললো।
স্ক্রিনে এখনও ভাসছে: "+666000666 কলিং..."
রাফির হাত কাঁপছিল। এই নম্বর থেকে আগেও ফোন এসেছিল, আর এবার? সে কি কল রিসিভ করবে? না কি ফোনটা ছুঁড়ে ফেলে দৌড়ে পালাবে? সে আর ভাবতে পারছিল না।
রাতের বিভীষিকা
ভয় সামলে রাফি ফোনটা রিসিভ করলো। ওপাশ থেকে কোনো শব্দ নেই। কিন্তু ঠিক কয়েক সেকেন্ড পর...
"ছয় দিন বাকি...!"
কণ্ঠটা যেন বরফের মতো ঠান্ডা, তীব্র শীতলতা ছড়িয়ে দিল তার শিরদাঁড়ায়। রাফি হতভম্ব হয়ে গেল। গলার স্বর শুকিয়ে গেল। সে কিছু বলার আগেই ফোনের লাইন কেটে গেল।
ঘড়ির দিকে তাকিয়ে দেখলো—১২:০৭ AM। আগের দিনও ঠিক এই সময়েই ফোন এসেছিল! এটা কি কাকতালীয়? নাকি সত্যিই কিছু ঘটতে যাচ্ছে?
সে বিছানায় বসে থাকল কিছুক্ষণ। বাইরে থেকে শোঁ শোঁ বাতাসের শব্দ আসছিল, আর তার জানালার পর্দা ধীরে ধীরে দুলছিল, যদিও বাতাসের এমন কোনো তীব্রতা ছিল না।
হঠাৎ করেই একটা শব্দ! যেন দরজার বাইরে কারো পায়ের আওয়াজ।
রাফির শ্বাস আটকে গেল। সে ধীরে ধীরে দরজার দিকে এগিয়ে গেল। কাঁপা হাতে দরজার হ্যান্ডেল ধরতেই আবারও সেই শব্দ...
"খট খট খট..."
কেউ দরজার বাইরে দাঁড়িয়ে আছে! কিন্তু কে?
সে চিৎকার করে বললো, "কে ওখানে?" কিন্তু কোনো উত্তর এল না।
ধপ করে দরজার নিচ দিয়ে কিসের যেন একটা ছায়া ভেতরে ঢুকে গেল!
একটি অনাকাঙ্ক্ষিত মৃত্যু
রাফি এত ভয় পেয়েছিল যে সে আর দরজা খুলল না। ভোর না হওয়া পর্যন্ত সে দরজার দিকে তাকিয়ে বসে থাকল।
পরের দিন সকালে সে অফিসে যাওয়ার আগে খবরের কাগজ হাতে নিল। প্রথম পাতার শিরোনাম দেখেই তার হাত-পা ঠান্ডা হয়ে গেল।
"এক তরুণ রাতে রহস্যজনকভাবে মারা গিয়েছে। মৃত্যুর কারণ অজানা! মোবাইলের কল লগে শেষ নম্বর ছিল—+666000666!"
রাফির বুক ধক করে উঠল।
তার মানে এই নম্বর থেকে ফোন পাওয়া মানেই মৃত্যু? তাহলে কি সে নিজেও...?
ভয়ংকর আবিষ্কার
সে আর দেরি করল না। দ্রুত গুগলে সার্চ করলো এই নম্বর সম্পর্কে। কিন্তু কোনো তথ্য নেই। সে রেডিট, ডার্ক ওয়েব, সব জায়গায় খোঁজ করলো। কিছু না পেয়ে হতাশ হয়ে পড়লো।
হঠাৎই সে পেল একটি পুরনো ফোরাম পোস্ট যেখানে লেখা ছিল:
"যদি তুমি +666000666 নম্বর থেকে ফোন পাও, তবে সাত দিনের মধ্যে তোমার মৃত্যু নিশ্চিত!"
তার বুক ধক করে উঠল।
পোস্টের নিচে আরও একটি ভয়ংকর তথ্য ছিল:
"প্রথম দিন: অদ্ভুত ফোন কল।
দ্বিতীয় দিন: দরজার বাইরে ছায়ামূর্তি।
তৃতীয় দিন: আয়নার মধ্যে ভিন্ন এক প্রতিবিম্ব।
চতুর্থ দিন: মৃত আত্মীয়দের দেখা মেলে।
পঞ্চম দিন: ফোন কল ছাড়া স্বপ্নেও মৃত্যু দেখা যায়।
ষষ্ঠ দিন: রাতের বেলা কেউ পাশে শুয়ে থাকে।
সপ্তম দিন: মৃত্যু...!"
রাফির পুরো শরীর শীতল হয়ে গেল। এটা কি সত্যি? তার কি ছয় দিনের মধ্যেই মৃত্যু হবে?
আরেকটি ফোন কল
সন্ধ্যা ঘনিয়ে এলো। সে ঘরে বসে ভয় আর দুশ্চিন্তায় ডুবে ছিল। ঠিক রাত ১২টা বাজতেই ফোনটা আবার বেজে উঠলো!
এইবার স্ক্রিনে কিছুই লেখা নেই, শুধু একটা কালো পর্দা...
রাফি হাত বাড়িয়ে ফোন তুলতেই চোখের সামনে যা দেখল তাতে তার গলা দিয়ে কোনো শব্দ বের হল না...
ফোনের স্ক্রিনে তার নিজের প্রতিবিম্ব দেখা যাচ্ছে, কিন্তু সেটা সে নয়! একটা কালো চেহারা, ভয়ংকর লাল চোখ, আর একটা শয়তানি হাসি!
(চলবে...)