গতকালের কথা। বাজারে গেছি। এ সময় কেউ একজন ডেকে বসে। আমার দুই হাতে ব্যাগ। ঈদে আসলে পাল স্টোরে যাওয়া পড়েই। ওদের ঘি এর আমরা বান্দা কাস্টমার। শুধু ঘি নয়, যেকোন আইটেমে ওদের সুনাম। পাপোশ, বাথরুম ফ্লোর পরিস্কারের ব্রাশ, কমোড পরিস্কারের ব্রাশ, আরও কিছু সদাই নিয়ে আরেক দোকানে ঢুকি। সেখান থেকে বের হয়ে রাস্তা ধরে ফিরছি। উপজেলা শহরের সরু রাস্তা, ভ্যান, অটো, সাইকেল, বাইক, ঈদ বাজারে আসা মানুষের সম্মিলিত আওয়াজ এক অদ্ভূত ব্যাকগ্রাউন্ড মিউজিক সৃষ্টি করে। এই সূর System of A Down পেলে হয়তবা নতুন গান নামাতে পারতো মনে হয়।
এরকম হল্লার মাঝে কেউ একজন ডাকছে মনে হলো। কিন্তু সে ডাক আমার কর্ণকুহরে প্রবেশের আগে অন্য শব্দ ধাক্কা মেরে সরিয়ে দেয়। আমি দ্বিধার মধ্যে পড়ি। বাজারের লিস্ট অনুযায়ী আরও কিছু কেনা কাটা বাকি আছে। আমার মাথায় সেসব ঘুরছিলো। এর মাঝখানে আবারও কেউ ডাকে অনুমান করি।
পিছনে ফিরি। Firog Sarker কে দেখি, আমাকে ভিতরে যেতে বলে। ফিরোজ এলাকার ছোট ভাই, স্কুলের জুনিয়র, ছোটবেলায় এক সাথে ফুটবলও খেলেছি। ফ্যাশন গ্যালারি নামে একটা ক্লোথ স্টোর।ভিতরে ঢুকি। বেশ জমজমাট চলছে। ভিতরে লোকজনের চাপ দেখে বুঝতে পারি।
ভাই আসেন আপনাকে একটা জিনিস দেখাই। বলে কাউন্টারের উপরে আমার দৃষ্টি আকর্ষন করে। এবার আমি চমকে উঠি। #আলমপনার_দরবারে'র একটা কপি সাজিয়ে রাখা। ঢাকায় বইমেলা থেকে সংগ্রহ করেছে। পাশে অন্য একটা বই রাখা।
যে কাপড় কিনতে আসে তাকে #আলমপনার_দরবারে দেখায়। অন্ন বস্ত্র বাসস্থান মানুষের মৌলিক চাহিদা। ছোটবেলায় এসব আমাদের শেখানো হয়। বই এ এসব লেখা থাকে। বই পড়া কিংবা জ্ঞান অর্জন করা জরুরী সেই বইয়ে লেখা থাকে না। মানুষ অক্ষরে অক্ষরে সেটা পালন করে। তাই মানুষ বইপড়ার আগেই বইপড়া ছেড়ে দেয়। পারত পক্ষে বই থাকে এমন জায়গার আশেপাশে যায় না। কিন্তু ফিরোজ বুদ্ধি করে বস্ত্রের মাঝে বই রেখে দিয়েছে। না পড়ুক, অন্তত দেখতে পাচ্ছে। সেও অনেক বড় বিষয়। অবাক হয়ে চমকে উঠি।
ওকে ধন্যবাদ দেয়া হয়নি। পরে এক সময় দিবো।