এপ্রিল ২২, ১৯৮৬
স্যাম ওয়ালেস আর নিকি স্টিলার কবির সাথে দেখা করলেন তার এপার্টমেন্টে। লোয়ার ইস্ট সাইডে এই বাসাটার অবস্থান। এই দু’জন চাচ্ছিলেন, মিস্টার গিন্সবার্গ নিউইয়র্ক ইন্সটিউট অফ টেকনোলজিতে এসে নিজের রচনা পাঠ করুক। আলাপে তারা কবিকে সেই বিষয়ে রাজী করাতে চাচ্ছেন।
নিকি : মিস্টার গিন্সবার্গ, ঠিক কখন আপনি টের পেলেন যে আপনি একজন কবি?
গিন্সবার্গ : আচ্ছা, এইটা হল, যখন আমি জ্যাক কুরোকের “দি টাউন এন্ড দি সিটি” উপন্যাসের পান্ডুলিপিটা পড়লাম তখন। ১৯৪৮ সাল বা এরকম। তাহলে ধরেন, সাতচল্লিশ থেকে আটচল্লিশের দিকে হবে। আমি বুঝলাম যে, ও যেহেতু এরকম একটা উপন্যাস লিখসে, মানে বড়, ক্লাসিকাল মার্কা উপন্যাস, তাহলে আমরা নিশ্চই ক্লাসিকাল লেখকই। কুরোকের এই ঘটনা দেইখেই আমার কবি হওয়া। আমি একটা জিনিস বুঝতে পারসিলাম। যে লেখালেখির রহস্য সেরকম জটিল না। আপনার মনে যা আসে সেটাই লিখে যেতে হবে।
নিকি : তাহলে এর আগে কোনদিন আপনার নিজেকে কবি মনে হয় নাই?

গিন্সবার্গ: দেখেন, আমি তো আগেও লিখতেসিলামই। চৌদ্দ বছর বয়স থেকে আমি লেখালেখি করি। কিন্তু সেটা আরেকরকম। কুরোকের লেখাটা পড়লাম তখন আমার বয়স বাইশ। লেখাটা পড়ার পর একটা বোধ জন্মাল নিজের ভেতর। বুঝলাম যে, লেখার মাধ্যমে চাইলে সৃ্ষ্টি করা যায়। তো কুরোক এমন কিছু বানাইসিল যেটা আসলেই জোস। অন্য সব মহান সাহিত্যকর্মের মতই আমার মনে হইসিল ওর উপন্যাসটাকে। ধরেন,আমি তো ‘ম্যাজিক মাউন্টেন’ পড়সিলাম আগে। তারপর পড়লাম দি টাউন এন্ড দি সিটি। দেখলাম যে, ম্যান না মেলভিল বা এরকম যে আছে, ওদের গদ্যের চেয়ে কুরোকের গদ্যের সাহিত্য মান কম না।
নিকি : ঐ সময় আপনি ছিলেন কলম্বিয়ায়?
গিন্সবার্গ : না, না। তখন কলম্বিয়া ছাড়সি বেশ অনেকদিন। আমার তখন গ্র্যাজুয়েশানও শেষ। মার্কেট রিসার্চার হিসেবে কাজ করছিলাম কি? ও, না, মনে পড়সে। তখন কাজ করতাম বিকফোর্ডে। ওদের মেঝে ঝাড়ু দিতাম। তখন আসলে কাজকর্ম জোটানো খুব মুশকিল ছিল।
নিকি : আসলেই?
গিন্সবার্গ: হ্যাঁ, হ্যাঁ। আবার এমন হতে পারে আমারই সমস্যা। একটা নিয়মিত ভদ্রস্থ চাকরী করা খুব কঠিন ব্যাপার ছিল আমার জন্য।
আচ্ছা আমরা যে যাচ্ছি, ওখানে যায় কিভাবে? কই জানি যাচ্ছি, নিউয়ার্ক না?
স্যাম: হ্যাঁ।
স্যাম: আচ্ছা, নিউয়ার্কের কথা যখন আসলই, আপনার অনেকে কবিতাতেই নিউয়ার্ক আর প্যাটারসনের খুব প্রবলভাবে আসে। “আন্ট রোজ” কবিতার কথা মনে পড়ছে। তারপর “কাড্ডিশ” এর কিছু অংশে পেয়েছি।
গিন্সবার্গ : আরেকটা কবিতা আছে। নাম হচ্ছে গিয়ে ‘গার্ডেন স্টেট”।
নিকি: হ্যাঁ ঠিক ঠিক “গার্ডেন স্টেট”।
গিন্সবার্গ: তারপর “ডোন্ট গ্রো ওল্ড” কবিতাটা ধরতে পারেন। ওখানে প্যাটারসানের আশেপাশে প্রকৃতির কিছু বর্ণণা আছে। ১৯৭৬ সালের কবিতা এইটা। আর গার্ডেন স্টেট কবিতা লেখা হইসে ১৯৭৭ বা আটাত্তর,উনআশি সালে।
নিকি: নিউয়ার্ক আর প্যাটারসনে বেড়ে ওঠা নিয়ে যদি কিছু বলেন…
গিন্সবার্গ: বলি নাই যে একদম তা না। কবিতায় খুব বেশী অবশ্য বলা হয় নাই। এই জায়গাগুলোতে আমার জীবনের প্রথম ভাগের বেশীরভাগটুকু কেটেছে। সেই অনুপাতে তারা আমার কবিতায় আসতে পারেনি। “এম্পটি মিররে” কিছু বর্ণনা ছিল। সেইটা পড়ে উইলিয়ামসের মুগ্ধতা হয়েছিল, এরকম জেনেছি। লাইনটা ছিল এমন যে,’নদীতে জং ধরা লোহায় পাছাপাছটরি করছে নিগ্রোরা’। ‘সানফ্লাওয়া সুত্রা’ তে কিছু উল্লেখ আছে। ওখানে ঐ এলাকার নদীর কিনারার কথা আসছে, “কনডম আর পাতিল, লোহার ছুড়ি, স্টেনলেইস না কোনটাই”। এইটা পাসাইক রিভারের পাশ দিয়ে একদিন হাঁটছিলাম, ওখান থেকে লেখা। এই হাঁটার সময় আমার সাথে ছিল উইলিয়াম কার্লোস উইলিয়ামস। নদীর কিনার দেখতে দেখতে হাটতেছিলাম আমরা। তো এরকম অনেক জায়গাতেই বলেছি। কিন্তু আপনে ঠিক কি জানতে চাইছেন, সেটা বুঝি নাই। যদি একটু সুনির্দিষ্ট করে প্রশ্নটা করেন, তো সুনির্দিষ্ট উত্তর দিতে পারি।
নিকি: নিউয়ার্ক ছেড়ে যাওয়ার সময় আপনার বয়স কত ছিল, সুনির্দিষ্ট করে বলেন তো।
গিন্সবার্গ: আমার জন্মই হইছে ওখানে। তবে যখন এক বছর বয়স তখনই নিউয়ার্ক ছেড়ে আসি।
নিকি: আচ্ছা….
গিন্সবার্গ: তো, আমি তাহলে বড় হইসি প্যাটারসানে। যখন ষোল বছর বয়স, তখন কলম্বিয়ার উদ্দেশ্যে রওয়ানা হলাম। তো প্যাটারসান থেকে আমি দূরে আছি, মানে বাড়ি ছাড়া হয়েছি, সেই ষোল বছর বয়স থেকেই। তবে সুযোগ পেলেই যাই। আমার পরিবার নিউয়ার্ক আর প্যাটারসানে থাকে। আমি সবসময়ই ওদেরকে দেখতে যাই। অনেক পরিচিত, আত্নীয় স্বজন ওখানে। তবে আব্বা মারা যাওয়ার পর থেকে সম্পর্কগুলা একটু দুর্বল হয়ে আসছে। আমার বৃদ্ধ চাচা, চাচী, ফুপু এরা সবাই থাকে বৃদ্ধাশ্রমে। ওয়েস্ট অরেঞ্জ আর হিলাসাইডে আমার প্রচুর কাজিন ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে। কিন্তু ওদের কাছে যাই না। আমার সৎমা থাকত প্যাটারসান, এল্মউড টেরেসের ঠিক বাইরে। প্যাজাইক নদীর কিনারায়। তাই ওখানে প্রায়ই যাই। যেমন গত শনি রবিবার ছিলাম ওখানে।
নিকি : তাহলে ধারণা করতে পারি ঐ এলাকা নিয়ে আপনার এক ধরণের আবেগ কাজ করে, মানে যা সব ঘটেছে ঐখানে, আরকি।
গিন্সবার্গ: কি বুঝাইতে চাইলেন আমি ঠিক বুঝতে পারি নাই। মানে, ঐ এলাকায় আমি বড় হয়েছি। মনের ভেতরে কিছু তো থাকবেই।
নিকি : আপনার আবেগগুলোকে কি একটু স্পষ্ট করে বলা যায়?
গিন্সবার্গ: আপনার প্রশ্নটা কি একটু স্পষ্ট করে করা যায়? যে, ঠিক কি আপনি জানতে চান। এত পেচাইন্না প্রশ্ন করেন আপনারা। আমারও একটা পেচাইন্না উত্তর দেওয়া ছাড়া উপায় থাকে না। এইসব বালের প্রশ্নের উত্তর দিতে দিতে আমি হদ্দ হয়ে গেছি। কি বাজে ব্যাপার! মাফ করবেন আমাকে। সারাক্ষণ লোকজন আমাকে এসব জটিল পেঁচানো সব প্রশ্ন করে। ‘আচ্ছা ওখানে যা ঘটল তা নিয়ে আপনার ফিলিংস কিরকম”। আদ্ধূউর। ওখানে যা ঘটল বলতে আপনি কিসের কথা বোঝান? আমি তো জানি না। কি ঘটে গেছে রে ভাই? দেখেন, ১৯৪৪ আমি ঐ এলাকা ছেড়ে আসার পর থেকে সেটা দশটা ভিন্ন ভিন্ন পর্যায় অতিক্রম করেছে। যেখানে আমি থাকতাম, সেই পুরো এলাকাটায় এখন শুধু কালোরা থাকে। মূল বাণিজ্যিক এলাকাটা তো পুরোপুরি ধ্বংস হয়ে গেছে। ধ্বংসের পরে আবার সেখানের একটি বড়লোকিকরণ ঘটল। তারপর আবার অবক্ষয়। অবক্ষয়ের পরে আবার বড়লোকিকরণ।
নিকি: এরকম যে হবে আপনি কি জানতেন? মানে আশা করেছিলেন? এলাকার এই অবস্থা দেখে কি আপনি অবাক হন?
গিন্সবার্গ : খুব হই!
নিকি : আপনার কি কষ্ট হয়? মন কেঁদে ওঠে?
গিন্সবার্গ : না। এসব হল স্টিরিওটাইপ। গৎবাঁধা মুখস্থ চিন্তাভাবনা। এধরণের আবেগগুলো হল মুখস্থ আবেগ। তো, না। আমার কোন কষ্ট হয় না। অবাক হই অবশ্যই। অবাক এবং বিস্মিত। এই নিয়ে আমার একটা কবিতা আছে। চায়নায় থাকার সময় আমি এই কবিতাটি লিখেছিলাম। কবিতার বিষয় হচ্ছে, ষোল বছর বয়সে আমি প্যাটারসান ছেড়ে গিয়েছিলাম, তারপর আবার ফিরে এসেছি। কবিতার শেষটা এরকম যে -
“ আমার পুরনো বাড়িগুলোর একটাও আর নেই। ব্রডওয়ে জুড়ে থাকা সমস্ত পুরনো দোকানগুলো উধাও,
শুধু দি গ্রেট ফলস আর পাযাইক নদী বয়ে চলে আওয়াজ আর কুয়াশা সঙ্গে নিয়ে আগের মত, একইরকম রয়ে গেছে ইট কারখানার পাশগুলো।”
নিকি : আচ্ছা, এটা তো ভাল। আপনার অনুভূতি বুঝতে পারলাম।
গিন্সবার্গ: বুঝলেন, বটে।
স্যাম : আচ্ছা আমার একটা কৌতুহল, যে, রাশিয়ায় যে ছিলেন, আপনার অভিজ্ঞতাটি কি?
গিন্সবার্গ: রাশিয়ার কোন অভিজ্ঞতা? আমি একমাস ছিলাম রাশিয়ায়। একমাসের পরিমাণ অভিজ্ঞতা হয়েছে। এর ঠিক কোন অংশটি নিয়ে আপনার আগ্রহ?
স্যাম :মূল আগ্রহটা যে, আপনি তো গে। এই বিষয়টির প্রতি রাশিয়ানদের প্রতিক্রিয়া কি ছিল?
গিন্সবার্গ: আচ্ছা। এটা দীর্ঘ, বিশদ, জটিল একটা আলাপ। তবে খুবই ইন্টারেস্টিং। তো, আমি ওখানে গেছিলাম, প্রথমতঃ সোভিয়েত রাইটার্স ইউনিয়ানের একজন প্রতিনিধি হিসেবে (সোভিয়েত রাইটার্স ইউনিয়ানের একটি প্রতিনিধি দলের সাথে)। তো, সোভিয়েত লেখক সংঘ থেকে একটা দল ছিল আর আমেরিকানদের একটা দল ছিল। আর্থার মিলার ছিলেন। আরও যারা যারা নাগরিক অধিকার স্বাধীনতা এগুলা নিয়ে মাতেন, সেরকম কয়েকজন ছিলেন। তো, আমার বক্তৃতায়- আমি চেষ্টা করছিলাম এই ইস্যুটা নিয়ে আপনে রাশিয়ার কিভাবে ডিল করবেন তার একটা পথ বের করার। তো, যেটা করলাম যে সেই অনুযায়ী একটা বক্তৃতা তৈরী করলাম ( সবার প্রতি দাবি ছিল যে একটা বক্তৃতা দিতে হবে)। তারপর যখন, আমাকে ডাকল মঞ্চে, আমি শুরুতেই বললাম যে, যদি একটা বক্তৃতা দেই, তাহলে সবই মিথ্যা কথা বলতে হয়। বললাম যে, আমার মনে হয় একে অন্যের সাথে গাদাখানিক মিথ্যে কথা বলাবলি করা ছাড়া আমাদের কোন উপায়ও নাই। কারণে নাহলে, এমন সব বিষয় নিয়ে কথা বলতে হয় যেগুলাতে আমরা আসলেই ইন্টারেস্টেড। যেমন আমার ইন্টারেস্টের বিষয়, জেলে আটকে রাখা লেখক, গে’দের সামাজিক মুক্তি, ড্রাগস, যৌনসাহিত্য, রাষ্ট্র বিরোধী কাজকর্ম এসব। আর এসব কথা নিশ্চই আমি এই বক্তৃতার মঞ্চে বলতে পারি না। সুতরাং, সুধীবৃন্দ আমি যে বক্তৃতাটি দিতে যাচ্ছি সেটি সমস্তই মিথ্যে। আপনারা আমাকে ক্ষমা করবেন। কিন্তু ওর মধ্যেই আমার সব ইন্টারেস্টগুলার তালিকা ঢুকায়ে দিলাম। তো, এরকম মজার একটা উপায় বের করসিলাম আরকি।
স্যাম : যাকে বলে অ্যাক্ট অফ প্রিটেরিটিও?
গিন্সবার্গ : কি বললেন? এটা কি জিনিস?
স্যাম : মানে আপনি কোন বিষয়গুলাকে উল্লেখ করা যাবে না সেটা বইলে দিয়ে, আসলে কৌশলে সেগুলাকে উল্লেখই করলেন।
গিন্সবার্গ: হ্যাঁ ঠিক। আপনি যে কথাটা বললেন সেটা কি?
স্যাম : (বানান করে) প্রিটেরিটিও
গিন্সবার্গ : মারাত্নক ব্যাপার তো। আমি জীবনে কোনদিন শুনি নাই। ভাল জিনিস জানলাম। তো, তারপর আমি সুধীবৃন্দদের বললাম, ওয়াল্ট হুইটম্যানের কথা। যে ওয়াল্ট হুইটম্যানকে তো আপনারা সবাই ভালোবাসেন। ওয়াল্ট হুইটম্যান বলেছেন আগামীর কবিদের একটা মূল বৈশিষ্ট্য হবে যে, তারা তাদের লেখায় স্পষ্টবাদি হবেন। রাখঢাকের বিষয় থাকবে না। আমি বললাম, হুইটম্যানের এই কথাটা আমাদের স্মরণ করা দরকার। যে সমস্ত বিট জেনারেশানের ( যেই ব্যাপারে জানতে ওদের খুব আগ্রহ ছিল)মূল ভিত্তিটাই হইছে হুইটম্যান প্রস্তাবিত এই লেখালেখির স্পষ্টবাদিতা। যাতে, আমাদের লিখিত শব্দ যেন স্বাধীন মুক্ত হতে পারে। কিন্তু জিনিসটা মাঝখান থেকে হয়ে গেল আধ্ন্যাতিক মুক্তি। তার একটা অনাকাঙ্ক্ষিত প্রতিক্রিয়ায় এক ধরণের সাহিত্য মুক্তি আন্দোলন শুরু হল। যেমন ‘লেডি চ্যাটারলিস লাভার’ আর জন গেনেট আর হেনরি মিলারের আদালত যাত্রায় দেখসি আমরা। আর এই আন্দোলন থেকে আসল কালোদের মুক্তি ( এটা বললার পর খুব হর্ষধ্বনি উঠল) আর নারী মুক্তি (এবারও এরা তালি টালি বাজায়ে অস্থির) এবং সমকামীদের সামাজিক মুক্তির আন্দোলন। সমকামীর কথাটা উচ্চারণ করতেই সবাই মূর্তির মত স্থির চুপ করে গেল! আর আমি সব মুক্তির তালিকা দিয়ে যাইতেসি। যেমন গ্রে প্যান্থারদের মুক্তি, আরও যা যা লাগে আরকি। তো, মানে গে’র বিষয়টাকে আমি স্পষ্টবাদিতার আলোচনার ভিতরে ঢুকায়ে দিলাম। আপনারা হয়তো ‘টাইমস’ পত্রিকায় এই বিষয়ে লেখা পড়ে থাকবেন। সেখানে এই মাহফিল নিয়ে একটা প্রতিবেদন করেছিল। পনের প্যারাগ্রাফের একটা লেখা লিখেছে। তার মধ্যে সাতটাতেই খালি সমকামিতার কথা আলোচনা করেছে। কোথাও হুইটম্যান, সাহিত্যে স্পষ্টবাদিতার চর্চা, নারী মুক্তি, কালো মুক্তি, সমকামীদের মুক্তি এসব নিয়ে একটা অক্ষরও লিখল না। যে প্রেক্ষিত থেকে আমি কথাগুলা বলসিলাম, সেটাকে সম্পূর্ণ উহ্য রেখে দিল। অথচ এই প্রেক্ষিতটা ছাড়া আপনে আমার কথাগুলা বুঝবেন কেমনে ঠিকমত? বুঝবেনই না। কারণ, দেখেন, হুইটম্যানের আকুতি তো সমকামের নয়; সাহিত্যে স্পষ্টবাদিতার। তো, আমার অভিজ্ঞতা হচ্ছে, সোভিয়েত সংবাদ মাধ্যম পুরো বিষয়টাকে উল্লেখই করতে চাইল না। আর অন্যদিকে আমেরিকান প্রেস, পুরো জিনিসটাকে - কি জানি বলে- ফুলিয়ে ফাঁপিয়ে রঙ চড়িয়ে এমন ভাবে উপস্থাপন করল যেন একটা গন্ডগোল বাঁধিয়ে দেয়া যায়। দুই দেশের সংবাদ মাধ্যমের আচরণকেই আমার কাছে একইরকম স্বৈরাচারী কর্তৃত্ববাদী আচরণ বলে মনে হয়েছে।”
( চলবে)