বালির গন্ধে, নদীর হিম নিঃশ্বাসে,
চাঁদহীন রাতে যখন আকাশ নিজেকেই লুকায়,
আমি দেখেছিলাম এক ছায়া—
ধীরে সরে যাচ্ছে—
কোনো শব্দ করেনি, শুধু জানিয়ে দিয়েছিল—
সব ফেলে-আসা মুখ একদিন ফেরে অন্য মুখ হয়ে।
একটা অরণ্য ছিল, শব্দহীন—
যেখানে ঘুমিয়ে ছিল ঝড়, পাতার আড়ালে,
আমি তাকে ডাকিনি নামে—
শুধু নিঃশব্দ এক স্পর্শ ছুড়ে দিয়েছিলাম বাতাসে।
তোমার নামে কোনো প্রতিধ্বনি ছিল না তাতে—
সেখানে শুধু মৌনতা ছিল, আর ছিল কিছু থেমে-যাওয়া অভিসার,
তুমি ছিলে না আয়নার কাঁপা ছায়া,
ছিলে না নদীর ধারে সেই পাথর,
যাকে আমি একদিন, মুঠোভরা অভিমান ছুঁড়ে বলেছিলাম— “থাকো।”
আমি এখন একটি ধ্বংসস্তূপে দাঁড়িয়ে,
ধূলোর নখে খুঁজি এমন এক বীজ—
যেটি জন্ম নেয়নি কখনও,
তবুও প্রতিদিন পচে গেছে, অনুল্লিখিত ইতিহাস হয়ে।
আমার ভিতরে যে আগুন,
তাতে শিখা নেই, শুধু ভস্ম;
এ আগুন কোনো দহন নয়,
এ এক নির্বাসিত সূর্যের আত্মজ্বালা,
যার আলো নিজেকেই পোড়ায়।
আমি ফিরিয়ে দিতে চেয়েছিলাম সেই আলো—
একটি শূন্য মাঠের দিকে,
যেখানে কারো নাম নেই, নেই কোনো ঋণ—
শুধু নৈঃশব্দ্য, এবং ঘুমন্ত এক প্রতীক্ষা।
তোমাকে নয়,
তোমার মুখও নয়— এমনকি সেই হাসিকেও নয়।
আমি নিভে যাই প্রতিদিন—
একটি পাথরের মতো,
যার নিঃশব্দতায় জেগে থাকে সমস্ত উচ্চারণ।