রাহুল আর ইমন—দুইজন একই পাড়ায় বড় হয়েছে।
ছোটবেলা থেকেই একসঙ্গে খেলাধুলা, স্কুলে যাতায়াত, পরীক্ষার প্রস্তুতি—সব কিছুই একসঙ্গে করত। তাদের বন্ধুত্ব এতটাই গভীর ছিল যে কেউ একজন না থাকলে অন্যজন যেন অপূর্ণ থাকবে।”
স্কুল পেরিয়ে কলেজে উঠলেও বন্ধুত্বে ভাঁটা পড়েনি।
তবে সময়ের সঙ্গে সঙ্গে রাহুল ইঞ্জিনিয়ারিংয়ে ভর্তি হয়, আর ইমন সাহিত্যে। একসময় ইমন কবিতা লিখে কে গ্রামেই। যোগাযোগ কিছুটা কমে যায়, কথাবার্তা হয় মাঝে মধ্যে।
একদিন রাহুল শুনল, ইমন ঢাকায় নিজের লেখা বইয়ের প্রকাশনা অনুষ্ঠানে তাকে দাওয়াত দিয়েছে। অনেক দ্বিধার পর রাহুল গেল।
অনুষ্ঠানে ইমন সবার সামনে বলল, “আমার আজকের এই জায়গায় আসার পেছনে সবচেয়ে বড় অবদান রাহুলের।
যখন সবাই আমাকে হেয় করত, রাহুলই বলত, ‘তুই পারবি।’ আমার প্রতিটি কবিতার প্রথম পাঠক ও সমালোচক ছিল সে।”
রাহুলের চোখে পানি চলে এলো। সে বুঝল, সত্যিকারের বন্ধুত্ব কখনো হারায় না, সময় বা দূরত্বে ম্লান হয় না।
অনুষ্ঠান শেষে ইমন রাহুলকে জড়িয়ে ধরে বলল, “বন্ধু, তুই না থাকলে আমি আজ কিছুই হতে পারতাম না। এখন তুই বল, তোর স্বপ্ন কী? আমি পাশে আছি।”
সেই দিন থেকে রাহুল নিজের একটা ইলেকট্রনিক্স দোকান খোলার পরিকল্পনা শুরু করে। ইমন তার পাশে ছিল শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত।
আজ তাদের দুজনেই সফল। তবে তাদের সবচেয়ে বড় অর্জন—একটি অবিচ্ছেদ্য বন্ধুত্ব, যা যেকোনো বাধা পেরিয়ে দাঁড়িয়ে থাকে মাথা উঁচু করে।