Posts

ভ্রমণ

কায়রোর নীলচিঠি ও অন্যান্য .৮

May 2, 2025

মুয়ায আবদুল্লাহ

104
View

আমার কি খুব ভার লাগে আজকাল নিজেকে! নিজের বোঝা বইবার ক্ষমতা হ্রাস পাচ্ছে বোধয়। প্রিয়মুখ ভাবা মানুষেরা কেন যে বদলে যায়, কী যে সুখ পায় তারা গোপনে ছুরি বসিয়ে! কেবল শাশ্বত দুঃখকে এড়িয়ে চলি বলে—আঁচড়ে যাচ্ছো বিষের নখর!

ঘরে বসে ছিলাম বলে এইসব ভাবনারা ফেনিয়ে উঠছিলো। তবে দুঃখের পরিচর্যা করার মতো মন আর নেই, অতএব নীলের দিকে হেঁটে চলা।

কায়রোর একটা অংশে নীল নদ দু’ভাগ হয়ে একটা সবুজ দ্বীপের জন্ম দিয়েছে। অভিজাত, মনোরম এই দ্বীপটার নাম জামালেক। চারদিকে নীলের জল, ছোট ছোট ঢেউ, আজ হাওয়া দিচ্ছে প্রবল। হাঁটতে থাকি, হাঁটার কথা ভুলে।

এখানে অনেক ক্যাফে, গ্যালারি, সাংস্কৃতিক কেন্দ্র আর দূতাবাস আছে, আছে ফরাসি ও ব্রিটিশ ঔপনিবেশিক আমলের ছোঁয়া লাগা ভবনগুলো। চিরসবুজ গাছে ছাওয়া রাস্তাগুলোতে হাঁটতে হাঁটতে—ধানমণ্ডি লেকের কথা মনে পড়ে। মনে পড়ে বেঙ্গল বই, একটা বিকাল।

হেলদি আবহাওয়া, তবুও অকারণ তেষ্টা পায়। আপেলের জুস পানসে লাগে। বাইরে থেকে বন্ধ মনে হওয়া বুকস্টোর কাম পাবলিশিং হাউসটায় কি মনে করে ঢুকে যাই। সাজানো, দ্বিতল, পরিপাটি। শিশুতোষ এতো কাজ এদের, অবাক হই!

দারুণ একটা বই নিয়ে আবার পথে নামি। পথজুড়ে ফুলের কেয়ারিগুলো ভালো লাগে, ঘ্রাণ দেয়। পেয়ারাফুল বোধয় প্রথম দেখি, অথবা ভুলেই গেছি শৈশবের দেখে থাকা।

তখনও সূর্যাস্তের অনেক বাকি, কাছাকাছি আরও একটা বুকশপে উঁকি দিতে মানা নেই তাই। গ্রাউন্ড ফ্লোরে, পুরোনো, ক্ল্যাসিক ভাইবের একটা বইঘর এটা। ঢুকতেই শান্তি শান্তি লাগলো। এমন একটা ঘরের স্বপ্ন পূরণ কি হবেই না! হয়তো।

বইয়ের চেয়ে ম্যাগাজিনগুলোর পুরোনো সংখ্যা আমাকে টানে। আঙুল কালো হয়ে যায় ঘেঁটে ঘেঁটে। একটা মার্জারের দেখা মেলে এখানে। আমার মনে পড়ে যায় এলিফ্যান্ট রোডের পুরোনো একটা বাড়িতে পেন্ডুলাম’র বইঘরটার কথা। ওখানে মোজাবাবুটার এখন কী অবস্থা কে জানে!

এতোসব স্মৃতিবাহী আমাদের জীবন—ছেড়ে যেতে মায়া হয় না কারও!

Comments

    Please login to post comment. Login