নাটক: অপেক্ষা
চরিত্রসমূহ:
নিলয়: ২৬ বছর বয়সী, মেধাবী ও সংযত যুবক। মেয়েদের থেকে দূরে থাকার চেষ্টা করে, ভালোবাসা নিয়ে খুব সিরিয়াস।
স্যাম: একই বয়সী, বন্ধুবান্ধবদের মাঝে জনপ্রিয় প্লে বয় টাইপ, কিন্তু হৃদয়ে গভীর দুঃখ লুকিয়ে রাখা মানুষ।
নীলিমা: রূপবতী ও আত্মবিশ্বাসী মেয়ে, অতীতে ভালোবাসায় বিশ্বাসঘাতকতার শিকার হওয়ায় এখন ভীত ও সাবধানী।
প্রিয়া: স্যামের প্রাক্তন প্রেমিকা, তার মৃত্যুই স্যামের জীবনের মোড় ঘুরিয়ে দেয়।
নীলিমার বাবা: একজন গম্ভীর প্রকৃতির ব্যক্তি, সমাজ ও সম্মানকে গুরুত্ব দেন।
অন্যান্য চরিত্র: বন্ধু, পুলিশ, বিচারক, আত্মীয়স্বজন।
---
দৃশ্য ১: আদালত - সকাল (আদালতের ভেতর গম্ভীর পরিবেশ। পুলিশ স্যামকে নিয়ে আসে। কাঠগড়ায় দাঁড় করানো হয়। বিচারক মৃদু গলায় কথা বলেন।)
বিচারক: স্যাম আহমেদ, আপনি কি স্বীকার করেন যে আপনি নীলিমা রহমানকে খুন করেছেন?
স্যাম (চোখে জল, শান্ত গলায়): হ্যাঁ, আমি স্বীকার করি। কিন্তু এর পেছনে রয়েছে একটি দীর্ঘ কাহিনী। আমি শুধু একজন ভাই ছিলাম... একজন বন্ধু...
(লাইট হালকা হয়ে যায়। ফ্ল্যাশব্যাক শুরু হয়।)
---
দৃশ্য ২: বিয়ে বাড়ি - সন্ধ্যা (হাসি, গান, আলো আর সাজসজ্জায় মুখর। নিলয় ও স্যাম ঢুকে পড়ে।)
স্যাম (হাসতে হাসতে): কিরে ভাই, আজ তো তুই একেবারে রঙে রঙে! চল, দেখি খাবারে কী আছে।
নিলয় (হঠাৎ চুপ): দাঁড়া… ও মেয়েটা কে? ওই যে নীল রঙের শাড়ি পরা...
(স্যাম তাকায়)
স্যাম: কে? ওইটা? বেশ সুন্দর তো!
নিলয়: আমি ওকে চিনি। মানে... চিনে ফেলেছি…
---
দৃশ্য ৩: মাঠ - দিন (নিলয় ক্রিকেট খেলছে, হঠাৎ নীলিমা হেঁটে যায়। ধীরে ধীরে তার দিকে তাকিয়ে থাকে।)
নিলয় (ভয়েস ওভার): এই মেয়েটার চোখে একটা জাদু আছে… যেন আমার সমস্ত চিন্তাকে গিলে নিচ্ছে।
(সে নীলিমার ফেসবুক খুঁজে পায়, ফ্রেন্ড রিকুয়েস্ট পাঠায়। দিন যায়, রিকুয়েস্ট একসেপ্ট হয়। সে সাহস করে মেসেজ করে। কিন্তু নীলিমা দূরে থাকে। অবশেষে হতাশ হয়ে ব্লক করে দেয়।)
---
দৃশ্য ৪: হোস্টেল রুম - রাত (দুজন মেঝেতে বসে চা খাচ্ছে)
নিলয়: ভাই, তোরে একটা জিনিস দেখাই...
(ছবি দেখায়)
স্যাম (হাসে): আরে ব্যাটা, এটা তো আমার মামাতো বোন নীলিমা!
নিলয় (অবাক): কী?!
---
দৃশ্য ৫: প্রেমে পড়া ও প্রত্যাখ্যান - দিন/রাত (নিলয় সাহস করে আবার মেসেজ করে। স্যাম সাহায্য করে, বোঝায়। কিন্তু নীলিমা পাত্তা দেয় না। অবশেষে নিলয় নিজেই প্রকাশ করে যে সে নীলিমাকে ছাড়া বাঁচতে পারবে না।)
নিলয়: আমি ভালোবাসি তোমাকে। সত্যি। তুমি ছাড়া বাঁচতে পারবো না।
(স্যাম যায় বোঝাতে, কিন্তু নীলিমা রেগে যায়।)
নীলিমা (রেগে): তুমি প্লে বয় টাইপ! তোমাদের বিশ্বাস করাই ভুল।
(নিলয় শুনে রাগে গর্জে ওঠে, নীলিমাকে চড় মারে)
---
দৃশ্য ৬: স্যামের অতীত - ফ্ল্যাশব্যাক (স্যাম আর প্রিয়া প্রেম করছে, একসাথে সময় কাটাচ্ছে। হঠাৎ প্রিয়ার বিয়ে ঠিক হয়।)
প্রিয়া: স্যাম, আমি তোমাকে ছেড়ে যেতে চাই না…
(প্রিয়া জোর করে বিয়ে দেয়া হয়। কিছুদিন পর আত্মহত্যা করে। স্যাম নিজেকে দোষী মনে করে বদলে যায়, নারীদের অবিশ্বাস করতে শুরু করে।)
---
দৃশ্য ৭: নতুন প্রেম ও বাধা - দিন (নীলিমা ক্ষমা চায়, সম্পর্ক শুরু হয়। কিছু রোমান্টিক মুহূর্ত। হঠাৎ নীলিমা আবার দূরে সরে যায়।)
নিলয়: আবার দূরে যাচ্ছো কেন?
(সে খোঁজ নিয়ে জানতে পারে নীলিমার অতীতে কেউ তাকে প্রতারণা করেছিল।)
---
দৃশ্য ৮: বিয়ের প্রস্তাব ও আত্মহত্যা
নিলয় (হাঁটু গেড়ে): নীলিমা, আমি তোমাকে বিয়ে করতে চাই!
নীলিমা: আমার বাবা রাজি নয়। আর আমি এই বিয়ে মেনে নিচ্ছি।
(নিলয় বলে, "তুমি যদি আমার না হও, তবে আমি থাকবো না।" নীলিমা পাত্তা না দিলে নিলয় আত্মহত্যা করে।)
---
দৃশ্য ৯: প্রতিশোধ - রাত (স্যাম পাগলের মতো ছুটে যায়, শ্বশুরবাড়িতে গিয়ে সব বলে।)
স্যাম: তুমি কি বুঝো না তুমি একজনকে মেরে ফেলেছো? তবুও আফসোস নেই?
নীলিমা (ঠান্ডা গলায়): আমি কী করেছিলাম? ওর নিজের সিদ্ধান্ত ছিল। আমি দোষী নই।
স্যাম: তুমি আমার বোন… তুমি আমার বন্ধুর ঘাতক! আজ আমি তোমায় শেষ করবো।
(স্যাম তাকে হত্যা করে।)
---
দৃশ্য ১০: আদালত - বর্তমান (আদালতে ফিরে আসা)
বিচারক: আপনি মৃত্যুদণ্ডে দণ্ডিত।
স্যাম (চোখ বন্ধ করে): অপেক্ষা… আজ শেষ হলো।
---
সমাপ্তি