Posts

পোস্ট

জীবনের গল্প (১)

May 4, 2025

সাজিদ রহমান

157
View

২০০৫ সাল। পাশ করে বের হয়েছি। ওমেকার মিজান ভাই বললেন, জয়েন করো। এরপর আমাদের কয়েকজনকে শান্তিনগর ব্রাঞ্চে পাঠিয়ে দিলেন।

মালিবাগে একটি ছেলেকে আগে থেকে পড়াতাম। এ লেভেল এর ফিজিক্স আর ম্যাথ দেখাই। অ্যান্টি নাশতা দিতে এলেই জিজ্ঞেস করেন, পাশ করেছ চাকরি করোনা কেন? উনার ছেলেকে পড়াই, সেটা চান। কিন্তু চাকরির নাম নিচ্ছি না দেখে তিনি বিরক্ত।

আমি নিজেও লজ্জায় পড়ে গেলাম। এর মধ্যে আবার ওমেকার পাশাপাশি আরও এক স্টুডেন্টকে (ওমেকায় কোচিং করতো, পরে বুয়েটে চান্স পায়) পড়ানো শুরু করেছি। সেই স্টুডেন্টের বাবা এক ডেভেলপার কোম্পানির ডিরেক্টর, আর সেই কোম্পানির মালিকের বাড়ি আমাদের উপজেলায়। সেই সুবাদে তিনি ইন্টারভিউ এর ব্যবস্থা করলেন। মালিক নিজে ইন্টারভিউ নিলেন। মনে হল, চাকরি হবে। কিন্তু পরে আর ডাকেন না। পরে জানতে পেরেছি, এলাকার এক ছেলে চাকরি নেয়ার কয়েক মাস পরে চলে গেছেন বলে এলাকার কাউকে চাকরি দেন না। সে যাক গে।

 কোচিং এর সিজন শেষ। এবার সত্যি সত্যি চাকরি দরকার। তিতুমির হলের সিনিয়র শরীফ ভাইয়ের সাথে যোগাযোগ করলাম। শরীফ ভাই ছিলেন ৬ ফুট ৬ ইঞ্চি, একই ফ্লোরে থাকতাম, হলের চকিতে এক্সট্রা কাঠ দিয়ে দৈর্ঘ বাড়িয়ে সেটাতে ঘুমাতেন। উনি যতদিন বুয়েটে ছিলেন, বাস্কেট বলে অন্য কোন হল চ্যাম্পিয়ন হতে পারেনি। তিনি তখন বাংলালিংকে চাকরি করেন। উনার সুপারিশে বাংলালিংকের কন্সাল্টিং ফার্মে চাকরি হল। সেটা আমার প্রথম ইঞ্জিনিয়ারিং চাকরি, যদিও ক্যামেরা নিয়ে টাওয়ারের বিভিন্ন কাজের ছবি তোলা ছাড়া তেমন কোন কাজ ছিলোনা।

১ মাস ১৬ দিন পর সেই চাকরি ছেড়ে দিই। বিসিএস এর রিটেন দিবো বলে। রিটেন শেষ হলে রুয়েটের পান্না ভাইয়ের সুপারিশে দ্বিতীয় চাকরি পাই। ১ মাস ১৬ দিনের সেই ১ম চাকরি করতে গিয়ে পান্না ভাইয়ের সাথে পরিচয় হয়। সেই সুত্রে তিনি চাকরির খোঁজ দেন, পান্না ভাই এখন কানাডা থাকেন। নতুন ফার্মের মালিক ছিলেন বুয়েটিয়ান ২ সিনিয়র ভাই। সেখানে ২ মাস ৮ দিন পর একটা ভালো জবের সন্ধান দেন ঐ ফার্মে চাকরি করা আরেক  রুয়েটিয়ান বড় ভাই। মজার ব্যাপার, বুয়েটিয়ান বড় ভাইদের সেই ফার্মের অফিসে থেকে নতুন চাকরি করি অনেক দিন।

এর মাঝে ওয়ান ইলাভেন আসে। চাকরির বাজার অস্থির। প্রায় বেকার হয়ে পড়ি। আমাকে মাল্টিন্যাশনাল একটা কোম্পানিতে চাকরি দেয় আমারই এক ক্লোজ বন্ধু। এবং সে সেই অফিসে আমার বস।

আমি আজও সেই বুয়েটিয়ান, রুয়েটিয়ান সিনিয়র ভাই, আমার বন্ধুর কাছে কৃতজ্ঞ।

চাকরি দেয়া, বুয়েটিয়ান সিনিয়র, আরও অন্যান্য বিষয় নিয়ে বেশ আলাপ হচ্ছে। আমার চাকরির অভিজ্ঞতা শেয়ার করলাম।

কেউ যদি অন্যকে সহায়তা করে বা চেষ্টা করে, তাহলে তাঁর বিপদের দিনে সে (যাকে সে সাহায্য করেছে) এগিয়ে না আসলেও অন্য কেউ অবশ্যই অবশ্যই হাত বাড়িয়ে দিবে।

জীবন নিয়ে ছোট অভিজ্ঞতার আলোকে এটা মনে হয়েছে।

Comments

    Please login to post comment. Login