পোস্টস

পোস্ট

মৃত্যু শোকের ঘ্রাণ

১২ সেপ্টেম্বর ২০২৩

মুয়ায আবদুল্লাহ

মূল লেখক মুয়ায আবদুল্লাহ

আমাদের মনের ভেতরে কি নিমগাছের বসবাস হয় অজান্তে? ধীরে ধীরে,  সুদূর স্থিরতায় অসংখ্য ঝরা পাতায় কি ছেয়ে যায় অলি-গলি,  নিজস্ব উঠোন হৃদয়ের? কী জানি—উদ্ভট লাগলেও কেবল আমার চিন্তায় এইসব আজগুবি প্রশ্নেরা ভীড় করে যুগপৎ প্যাঁচ লাগায়ে রাখে।
আচ্ছা, বিষাদের কি রঙ থাকে—নিমফুল পাতার মতোন? কী জানি—দখিনমুখী জানলাকে ঢেকে রাখা নিমগাছটার ছায়ায় লিখতে বসলেই ভেতর থেকে টের পাই তথাগত বিষাদের খুশবু। সন্ধ্যা ফুরিয়ে আসা রাতে শবযাত্রায় অংশ নিয়ে দেখি—গোটা শহরে আজ শোকের মাতম চলছে। নীরব কান্নার প্রগাঢ় যন্ত্রণায় বোবা হয়ে আছে ধূসর আকাশ। হঠাৎ করেই কী যেন হয়ে গেলো কোলাহলমুখর এই নগরীর! শোকের কালো ব্যানারে ছেয়ে গেছে শ্যাওলাধরা দেয়ালগুলো। রঙ চটে যাওয়া অকেজো সিঁড়ির শেষ ধাপে বসে আছে—কাফনে মোড়ানো গভীরতম শোক। নিদারুণ, নিশ্চুপ।
নম্র জোছনার মিনারে উচ্চারিত হলে একটি শোক সংবাদ—একদিকে ভেঙে যায় পাঁজরের মায়া,  ছিঁড়ে যায় বন্ধনের হলুদ সুতো। অন্যদিকে কারো মুখে খেলে যায় বিদঘুটে হাসি। মমতাশূন্য এই নগরে যেটুকু গড়ে ওঠে প্রীতি—সেটুকুও নির্জীব হয়ে পড়ে আত্মকেন্দ্রিক ব্যস্ততায়। আজনবী, অচেনায় রূপান্তরিত হয় আজন্ম চেনা মুখগুলো। আচরণে ধরা পড়ে সৌহার্দ্যের মাত্রা। সমস্তটা বোঝাপড়া-লেনদেন যেনো শুধুই আনুষ্ঠানিকতা! দ্বিপাক্ষিক উদারতা ভুলতে বসেছে মানুষ। ফলে বিদ্বেষের বীজ অজান্তেই বপন হয়ে যাচ্ছে হৃদভূমে। কী ভয়ানক রিরংসা লালন করে চলছে মানুষ একে অন্যের প্রতি! কোথাও একটুখানি শান্তির সুবাতাস নেই। অস্থিরতার লু হাওয়া বইছে চারদিকে। বাতাসে ভাসছে কাতর শোকের মাতম। তীক্ষ্ণ এই মর্সিয়া উপেক্ষা করে করে—আমরা কি হয়ে যাই একাকি নিমগাছ, চিরায়ত দগ্ধ ফানুস?!