📖 অধ্যায় ৪: চাবির রহস্য ও ছায়ার ফাঁদ
দুপুর পেরিয়ে বিকেল। আয়নুর ঘর তখন অন্ধকারে নিমজ্জিত। জানালার পর্দা টানা, আলো ঢুকছে না। বিছানায় বসে সে দ্বিতীয় চিঠিটার অক্ষরগুলো পড়ছে বারবার। “আমি ছায়া… আমি এখনো দেখি তোকে দূর থেকে…”
তার মন বারবার ফিরছে সেই স্কুলের ধ্বংসাবশেষে। অথচ আজ সে বুঝে গিয়েছে— সবই কাকতালীয় নয়। কেউ ইচ্ছা করে ওকে একটা পথ দেখাচ্ছে।
আয়নুর ঘরে একটা পুরনো কাঠের ট্রাংক আছে— যেটা ওর বাবা-মা ব্যবহার করতো, কিন্তু গত ৫ বছর ধরে সেটা বন্ধই পড়ে আছে। অদ্ভুতভাবে দ্বিতীয় চিঠিটার সাথে যে ছোট পিতলের চাবিটা পাওয়া গিয়েছিল, সেটা ট্রাংকের তালায় ঢুকিয়ে আয়নু ঘুরাতেই এক “চিক” শব্দে খুলে গেল!
ভেতরে কী আছে জানো?
একগুচ্ছ পুরনো ছবি, চিঠি, আর একখানা লাল মলাটের ডায়েরি— যার উপর নাম লেখা:
ইজান (তার হারিয়ে যাওয়া শৈশবের বন্ধু)
আয়নুর চোখ ছানাবড়া!
প্রথম পাতায় লেখা:
"যদি এটা তুই পড়িস, তাহলে জানিস— সবকিছু শুরু হয়েছিল ২০১৪ সালের সেই দুর্ঘটনার দিন। কিন্তু আমি বেঁচে ছিলাম। ওরা আমাকে বাঁচতে দেয়নি।"
"আমি পালিয়ে ছিলাম… কিন্তু তোর পাশে ছিলাম। ছায়া হয়ে।"
"তুই এখন যা ভাবিস, তার সবটাই ভুল। তোর পরিবার, তোর স্মৃতি, এমনকি তোর নাম… সবকিছুতেই আছে রহস্য।"
আয়নুর শরীর ঠান্ডা হয়ে আসে। “আমার নাম তো আয়নু… তাহলে… তাহলে কি?”
সেই রাতেই আয়নুর ঘুম ভাঙে এক দুঃস্বপ্নে— সে নিজেকে দেখে ছোট্ট মেয়ে হিসেবে, কিন্তু আশেপাশের মানুষগুলো অচেনা। মা-বাবার মুখ ঝাপসা। ভাই নেই। এক অচেনা কণ্ঠ বলে,
“তোর নাম আয়নু না… তোকে ভুল পরিচয়ে বড় করা হয়েছে।”
এই স্বপ্নটা বারবার ফিরে আসে। ভোরবেলা আয়নু বুঝে যায়— কেবল ইজান নয়, নিজেকেও সে চিনে না।
সন্ধ্যায় হঠাৎ দরজায় কড়া নাড়ে কেউ। মা তখন বাড়িতে নেই।
আয়নু দরজা খোলে— বাইরে দাঁড়িয়ে আছে একটা কালো কোট পরা লোক। চেহারাটা অন্ধকারে দেখা যায় না।
লোকটি শুধু একটাই কথা বলে—
“যদি সত্যি জানতে চাস, তাহলে কাল দুপুরে সেই স্কুলের পেছনের কুয়ায় আয়… একা।”
তারপর কিছু বলার আগেই লোকটা হাওয়ার মতো মিলিয়ে যায়।
written by : MD Forhad
সেই রাতে আয়নু আবার ডায়েরি খুলে পড়ে। কিন্তু এবার সে খেয়াল করে, ডায়েরির একটা পাতার কোণা কেটে রাখা। কাটা অংশে কিছু লেখা ছিল—
সে আলো জ্বেলে ভালো করে দেখে, পাতার নিচে চাপা লেখা浮ে আসে:
“ডায়েরিটা আমার না। কেউ ইজানের নামে লিখেছে। তোর মন গুলিয়ে দিতে।”
আয়নু চমকে ওঠে। তাহলে সে যে এতদিন ধরে যাকে ইজান ভাবছিল… সেটা কি আসলেই ইজান?
নাকি কেউ তাকে ইচ্ছা করে এই খেলায় জড়াচ্ছে?
🔚
আয়নু আয়নার সামনে দাঁড়ায়। নিজেকে দেখে— কিন্তু কেন যেন মনে হয়, এই মুখটা… তাও কি সত্যিকারের আয়নুর?
next part comming soon ....