নাটকের নাম: অতীতের কাহিনী
ধরন: ড্রামা | সামাজিক বাস্তবতা | প্রেম-সংগ্রাম
অবস্থান: একটি গ্রাম (বাংলাদেশ)
দৈর্ঘ্য: ~৪৫ মিনিট
স্টাইল: সিনেম্যাটিক ড্রামা (ফোকাস: অনুভূতি, মুখোমুখি দৃশ্য, চরিত্রের গভীরতা)
প্রধান চরিত্রসমূহ (১২ জন)
রিদয় (নিলয় আলমগীর) — শান্ত, বুদ্ধিমান, কষ্টে বড় হওয়া যুবক। পেশায় কামলা, একসময় উচ্চশিক্ষিত ছিল, জীবন বদলে যায় এক দুর্ঘটনায়।
মিতা — ধনীর মেয়ে, রিদয়ের প্রেমে পড়ে, কিন্তু তার পরিবার এই সম্পর্ক মেনে নেয় না।
রাশেদ মেম্বার — মিতার বাবা, গ্রামের প্রভাবশালী নেতা। ক্ষমতার দাপটে মানুষকে দমন করেন।
আব্দুল হাকিম — বুড়ো মানুষ, রিদয়ের দাদু, সব জেনে সব সহ্য করেন।
সিরাজুল — গ্রামের অন্য কামলা, রিদয়ের প্রতিদ্বন্দ্বী, ঈর্ষান্বিত।
কবিরা বেগম — রিদয়ের মা, অসুস্থ, ছেলেকে অনেক ভালোবাসে।
সুলতানা — রাশেদের স্ত্রী, মিতার মা, প্রেমের বিরুদ্ধে কিন্তু নরম মনের।
শাকিল — মিতার পাকা বিয়ের ছেলে, শহর থেকে এসেছে, দাম্ভিক।
মাহি — গ্রামের এক সাধারণ মেয়ে, রিদয়ের খুব কাছের বন্ধু (প্লেটোনিক রিলেশন)।
মোস্তফা — মসজিদের ইমাম, সমাজের বিবেকের প্রতীক।
জাহাঙ্গীর — রাশেদের সহযোগী, খারাপ কাজে সহায়তা করে।
শাহেদ — ঢাকায় পড়তে যাওয়া গ্রামের যুবক, নাটকে টার্নিং পয়েন্টে আসে।
কাহিনির সংক্ষিপ্ত সার:
রিদয় এক সময় শহরে পড়াশোনা করতো, কিন্তু বাবার মৃত্যুর পর গ্রামে ফিরে আসে। মা অসুস্থ। চাকরি নেই। পেটের দায়ে কাজ করে কৃষিজমিতে। কিন্তু তার মধ্যে এখনো আছে সম্মান, আদর্শ, ও গভীর প্রেম।
তার প্রেম মিতা, গ্রামের প্রভাবশালী নেতার মেয়ে। কিন্তু সমাজ তাদের প্রেম মানতে নারাজ। রাশেদ মেম্বার ওর বিয়ে ঠিক করে ফেলে শহরের দাম্ভিক ছেলের সঙ্গে।
রিদয় তা জেনে নিজের কষ্ট লুকিয়ে যায়। কিন্তু যখন সে জানতে পারে, রাশেদ মেম্বার শুধু তার প্রেম নয়, তার পিতার জমিও দখল করেছে — তখন অতীত জেগে ওঠে।
নাটকের মূল স্ক্রিপ্ট (সংলাপ ও দৃশ্যধারণ)
[দৃশ্য ১]
পাকা রাস্তার পাশে মাঠে রিদয় কুলিতে কাজ করছে। ঘামছে, পাশে সিরাজুল চোখ মারে।
সিনেম্যাটিক ফোকাস: ঘামের ফোঁটা, হাই কনট্রাস্ট লাইটিং
সিরাজুল:
“তুই শহরের ছেলে ছিলি রে, এখন কামলা হইলি কেমনে?”
রিদয় (হালকা হাসি দিয়ে):
“মানুষের পরিচয় কাপড়ে না, কাজে হয়... মনে রাখিস।”
[দৃশ্য ২]
রাশেদ মেম্বারের বাড়িতে বিয়ের আলাপ চলছে। মিতা চুপচাপ।
রাশেদ:
“বিয়ে ঠিক, মাস শেষে ঢাকার শাকিল আসবে। এই সম্পর্ক আর টানাটানি করিস না।”
মিতা (চোখে জল):
“আপনি কী জানেন না, আমি কাকে ভালোবাসি?”
রাশেদ:
“সে কামলা! সমাজ হাসবে!”
[দৃশ্য ৩]
রিদয় মসজিদের পাশে বসে আব্দুল হাকিমের সঙ্গে কথা বলছে।
রিদয়:
“দাদু, কেন সব হারানোর পরেও মানুষ চুপ থাকে?”
হাকিম:
“কারণ সময় নিজের কথা নিজে বলে রে বেটা... আর তুই সময়ের ছেলে।”
[দৃশ্য ৪]
বাজারে শাকিল এসে সবাইকে গালাগাল দেয়।
শাকিল:
“এই মফস্বলের প্রেমিকটারে দূর করে দেন। মিতার স্বামী আমি হবো।”
রিদয় (চোখে চোখ):
“প্রেম জিতার জিনিস না, প্রমাণের — তুমি সাহস থাকলে সম্মানে জিত।”
[দৃশ্য ৫]
জমির কাগজ নিয়ে রিদয় থানায় যায়। জমি আসলে তার পিতার নামে ছিল, জাহাঙ্গীর জাল দলিল করেছে। সমাজ রাশেদের বিরুদ্ধে যায়।
মোস্তফা ইমাম:
“অন্যায় করে কেউ বেশিদিন টেকে না। রিদয় নিজের অধিকার নিয়েছে।”
[শেষ দৃশ্য]
মিতা বাড়ি ছেড়ে চলে আসে। রাশেদ হাল ছাড়ে। গ্রামের মানুষ রিদয়কে সম্মান দেয়।
রিদয় (মিতার দিকে):
“তুই আমার ছিলি, আছিস... কিন্তু এই পথটা এখন আমি একাই পার হবো। তুই আমার অতীত — আমি এখন ভবিষ্যৎ।”
ব্যাকগ্রাউন্ড সাউন্ড সাজেশন:
স্লো ফোক বাংলা সাউন্ড
মন খারাপের সময় তবলার টোকা
শেষ দৃশ্যে রাবাব বা বাঁশির সুর
বার্তা:
এই নাটক দেখাবে –
সম্মান, ভালোবাসা ও অতীত কখনো মুছে যায় না।
আর একজন সৎ, কষ্টে বড় হওয়া মানুষ সমাজকে বদলে দিতে পারে।