📖 উপন্যাস: চিঠির আড়ালে পর্ব 6 : সেই কুয়োর নিচে..

📖 উপন্যাস: চিঠির আড়ালে 

পর্ব 6 : সেই কুয়োর নিচে...

রাতের অন্ধকার যেন আজ একটু বেশিই ঘন। চারদিক নিস্তব্ধ, শুধু কুকুরের মাঝে মাঝে হেঁকে ওঠা আওয়াজ, আর বাতাসে পাতার কাঁপুনি। আয়নু একা দাঁড়িয়ে স্কুলের পেছনের সেই পুরোনো কুয়োর সামনে। কুয়োটা বন্ধ নেই, তবে ভেতরে তাকালে কিছুই দেখা যায় না — শুধু ঘন অন্ধকার আর হালকা কুয়াশা যেন উপরে ভেসে উঠছে।

সে জানে, এই কুয়োই তার উত্তরগুলো লুকিয়ে রেখেছে। কিন্তু ভয় করছিল। ছোটবেলায় মা বলেছিল, "ওখানে কেউ থাকেনা আয়নু, তবে কিছু আছে — যেটা জেগে ওঠে শুধু নির্বাচিত একজনের জন্য।"

কিন্তু আয়নুর মনে পড়ে, মা তাকে "আয়নু" বলে ডাকলেও, তার ছোটবেলার নামে ছিল "আরিয়া"। তখন থেকেই শুরু হয় সন্দেহ — সে কি তবে সেই আরিয়া? কেন নাম পাল্টানো হলো?

🌫️ কুয়োতে ফেলা রশি ধরে আয়নু নামতে শুরু করলো। প্রতিটি ধাপ যেন অতীতের পরত ছুঁয়ে যাচ্ছে — মা-বাবার চোখ এড়িয়ে রাখা গোপন কথা, আর বাড়ির পুরনো ঘরে লুকানো সেই ছবিগুলো, যেগুলোর কোনোটাতে ছিল না আয়নু, অথচ ছিল এক কিশোর — যার মুখটা অনেকটা... ইজানের মতো!written by Forhad

📜 হঠাৎ কুয়োর দেয়ালে আঁকা পুরনো প্রতীক চোখে পড়লো — তাতে লেখা "Project JANTRA – Phase One: Truth Separation"

“জন্ত্র?” আয়নু ফিসফিস করে বলে ওঠে।

🎭 কুয়োর এক প্রান্তে একটা ছোট চেম্বার — সেখানে পড়ে থাকা একটা পুরোনো চিঠি। খোলা চিঠিটায় লেখা:

"তুমি আয়নু নও। তুমি আরিয়া। সমাজ তোমাকে ভুল নাম দিয়েছে, ভুল পরিচয়। ইজান মারা যায়নি। ও-ই তোমাকে রক্ষা করছে — তবে এ সমাজ ওকেও ছাড়বে না। ফিরে যাও... নয়তো তোমার সত্য জানাও হবে অভিশাপের মতো।”

তখনই আয়নুর কানে আসে কারো পায়ের শব্দ... ধীরে ধীরে এগিয়ে আসছে কেউ — সেই কুয়োর উপরে দাঁড়িয়ে থাকা কালো কোর্ট পরা লোকটা। এবার স্পষ্ট দেখা যাচ্ছে তার মুখ। কিন্তু—

🌀 অবাক হয়ে যায় আয়নু — লোকটার মুখটা যেন... অনেক পরিচিত! বাবার মতো? না কি... ইজান নিজেই? তবে সে কিছু বলার আগেই চারপাশে ভেসে ওঠে অস্পষ্ট সুর, যেন কারো কণ্ঠে ধরা এক পুরোনো লালন গান... “যারে তুমি ভাবে অচিন, সে তো তোমার চেনা...”
written by  Forhad