পর্ব ৮: অন্ধকারের নীচে, ছায়ার ছায়ায়
আয়নু এখন কুয়ার নিচে পাওয়া সেই রহস্যময় পথ ধরে এগিয়ে চলেছে। পেছনে বন্ধ হয়ে যাওয়া পাথরের দরজাটা যেন আরেক পৃথিবীর দরজা খুলে দিয়েছে—একটা এমন জগত, যেখানে আয়নু একা… কিন্তু হয়তো ইজানও আছে, কোথাও।
সেই গোপন ঘর, সেই অচেনা নীল আলো, আর দেয়ালে লাগানো কাঁচের কেবিনগুলো—সবই যেন এক ভয়ংকর বিজ্ঞানের প্রমাণ। একেকটা কেবিনে ছিল কঙ্কালসার শরীর, কারো কারো মুখ আজও বিকৃত আতঙ্কে জমে আছে। দেয়ালের বড় স্ক্রিনে ভেসে উঠছে কিছু নথি—
"Project JANTRA - Active Subject: Arya-12 | Status: Awakened"
তাঁর শরীর শীতল হয়ে আসে। তার মানে সে… একটা প্রজেক্ট?
তার নাম আয়নু নয়, আরিয়া। তার পুরো অস্তিত্বটাই হয়তো সাজানো?
ঠিক তখনই তার কানে আসে পদচারণার শব্দ। কণ্ঠস্বর চেনা, কিন্তু অদ্ভুত—
“তুমি ঠিক সময়েই এসেছো। সত্য জানার সময় হয়ে গেছে।”
পেছনে ঘুরে দেখে, সেই কালো কোর্ট পরা লোকটি দাঁড়িয়ে আছে। মুখ দেখা যাচ্ছে না, কিন্তু কণ্ঠে একরাশ ছায়া।
লোকটি এক ধাক্কায় দেয়ালে রাখা লিভার নামায়। হঠাৎ পুরো ঘর কাঁপতে শুরু করে। দেয়ালের একপাশ সরে গিয়ে বেরিয়ে আসে গোপন টানেল, যেখানে চলছিল আরও গবেষণা।
ছায়ার ভেতরে পরিচিত মুখ
আরিয়া সেই টানেলে ঢুকতেই সে দেখতে পায়—কেউ একজন তাকে অনুসরণ করছে। পেছনে তাকিয়ে দেখে—তার মা!
কিন্তু আয়নু বুঝে ওঠে না, মা এখানে কেন? মা তাকে সাহায্য করতে এসেছে নাকি… নজরদারি করতে?
মা তাকে জড়িয়ে ধরে কাঁদতে থাকে।
“তুই জানিস না, এই সমাজ কতটা নিষ্ঠুর… ইজান তোকে রক্ষা করতে চেয়েছিল বলেই ওকে সরিয়ে দেওয়া হয়! তোর আসল পরিচয় জানলে তোরা কেউই বাঁচতিস না।”
এই প্রথম সে নিশ্চিত হয়—ইজান মারা যায়নি, বরং তাকে দূরে সরিয়ে রাখা হয়েছিল, বোনকে রক্ষা করার জন্য।
ইজানের ছায়া ও প্রহেলিকা
ঠিক তখনই, দেয়ালে লাগানো স্ক্রিনে আবার একটা মেসেজ ভেসে ওঠে—
written by forhad
“ARYA-12, I am watching. You’re stronger than you know. — E”
আরিয়ার (আয়নুর) চোখে জল আসে।
সে জানে, ইজান কাছেই আছে—এই ছায়ায়, এই প্রকল্পের নিচেই।
সমাজের ছদ্মবেশ খুলে পড়ছে
এক গোপন কক্ষে আরিয়া পায় একটি রিপোর্ট—প্রকল্প JANTRA-র উদ্দেশ্য শুধু জেনেটিক এক্সপেরিমেন্ট না, বরং পুরো সমাজকে “নতুনভাবে নিয়ন্ত্রণ” করার এক ভয়ংকর প্রয়াস। আর এই কাজের নেতৃত্বে রয়েছে কিছু চেনা মুখ—শিক্ষক, সাংবাদিক, নেতা—যারা সমাজের চোখে মহান, কিন্তু আদতে “মানুষ তৈরির যন্ত্র” চালাচ্ছে।
পরবর্তী পদক্ষেপ… যুদ্ধের আগুন
আরিয়া এখন জানে তাকে থামানো হবে—তাকে আর ইজানকে একত্র হতে দেওয়া হবে না।
তবে এই যাত্রায় সে একা নয়। মা পাশে আছে, কাকা ছায়ার মতো আগলে আছে, আর ইজান?
সে অপেক্ষা করছে… ঠিক সময়ের জন্য।