পোস্টস

পোস্ট

ইঁদুর, হানিট্রাপ ও রিকশায় ফেরা

২৪ মে ২০২৪

সাজিদ রহমান

মূল লেখক সাজিদ রহমান



জুম্মার নামাজ পড়ে বাপ-বেটা মিলে সিটি বাজারে গেছিলাম। কাজ সেরে রিকশা চেপে বাসায় ফিরছি। 

গগনে গনগনে রোদ, টিকে থাকাই দায়। ব্যাটারি চালিত রিকশা। চলা শুরু করলে বেশ আরাম লাগে। বাতাস কেটে কেটে এয়ারকুলারের মত কাজ করে। 

অনেকটা পথ চলে এসেছি। হঠাৎ রিকশাওয়ালা বলে, বাজারে ব্যাক করতে হবে। এজন্য বাড়তি ভাড়া লাগবে না।  

জিজ্ঞেস করলাম, কেন?
-মোবাইল ফেলে এসেছি।
- আচ্ছা যান, অসুবিধা নাই। সাফিনও খুশি। আরও একটু এয়ারকুলারের বাতাস খাওয়ার ব্যবস্থা হলো। বিনে পয়সায়। 

আজকে এটাই প্রথম বাজারে যাওয়া নয়। সকালেও গেছিলাম। 

ইঁদুর নিয়ে বিপ্লব দাসের একটি গল্প আছে। খুব বিখ্যাত ছোটগল্প। ওরই এক জাত ভাই কয়দিন হলো বাসায় ঢুকেছে। চিপায় চাপায় ঢুকে থাকতেছে। হেগে মেগে, গন্ধ ছড়িয়ে যাচ্ছে। 

মেয়ে আলাদা রুমে থাকে। ওর মাকে জিজ্ঞেস করেছে, খাটে উঠতে পারে কিনা? ওর মা কি কি বলে ওকে সান্ত্বনা দিয়ে রেখেছে। বুয়াও বিরক্ত। খুঁজে খুঁজে ইদুরের হাগু পরিষ্কার করতে হচ্ছে। 'ছেড়ে দে মা কেঁদে বাচি' অবস্থার একটা স্বার্থক চিত্রায়ন চলছে বলা যায়। 

গিন্নি যুথী ভাবির পরামর্শ পেয়েছে। যুথী ভাবির নাম  প্রায়শই বিথী ভেবে বসি। আমার স্কুল বন্ধু আছে, যুথী বিথী। দুই বোন। নামের উলোটপালট টা মূলত একারনেই। 

ইদুরের হানি ট্রাপ কিনি। একটা সুন্দর বই। সেখানে মজা নিতে গেলেই ইদুর ধরা। এভাবেই দুনিয়া জুড়ে ইন্দুর-বিলাই খেলা চলে। হানিট্রাপ চলে। Hide & Seek. আল্লাহর দুনিয়াতে এরকম অনেক হানিট্রাপ আছে। হানিট্রাপের সাথে মানির একটা ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক আছে। সেদিক আর না যাই। মশা মারতে আর কামান না দাগাই। 

অল্প করে সবজি কিনি। কাচা আম কিনি। গিন্নির পছন্দ। ছেলের পছন্দ পাকা আমা। এখনও খাওয়া হয়নি। সাতক্ষীরার আম চলে এসেছে। আমের দোকানে দাড়িয়ে থাকতে থাকতেই  ২ জন পরিচিত মানুষের সাথে দেখা হয়। তাদের একজন মাত্রই সাতার কেটে এসেছেন। তিনি দ্রুত চলে যান। অনেকদিন দেখা হয়না বলে ২য় জন অভিযোগ দিলো। কিন্তু ২ মিনিটেরও কম সময় দিয়ে সেও চলে গেলো। আচ্ছা বলেন দেখি, তার দেখা না হওয়ার অভিযোগ ধোপে টিকবে কি? বাসায় ডিম নাই, সেও কিনি। 

বাসায় এসে দেখি, আম পাকাটা এসেছে। কাচার নামগন্ধ নেই। গিন্নির অবস্থাটা বুঝেন একবার!! আমারটাও বুঝেন!!!  কয়টা কাচা আম খেতে চেয়েছে, সেখানেও ব্যর্থ!!! 

জুম্মার নামাজ পড়ে সেই কাচা আম নিতেই ফের বাজারে গেছিলাম। গিয়ে শুনলাম, সকালে দোকানদারও নাকি কাচা আম নিয়ে আমাকে খুঁজে বেড়িয়েছে। অথচ পাশেই ডিম কিনছিলাম আমি। খুঁজে পায়নি। ৩০ টা ডিম কেনাতে হালিতে ১ টাকা ৬৭ পয়সা কমও পড়লো। অতগুলো ডিম নিয়ে রিকশায় ফেরাও কম ঝাক্কির নয়। বহুবার বহু ডিম ভেঙে বাসায় ফিরেছি। ফিরেই হালকাবকরে গিন্নির মুখ ঝামটাও দেখেছি!! 

সব ঝামেলা চুকিয়ে রিকশা করে ফিরছি। জুম্মার নামাজের পর বেশ একটা খিদে পায়। রিকশাচালক  মোবাইল ফেলে এসেছেন। ফিরে চললাম। তার মেবাইল অন্য একজন অন্য একটা সিম লাগিয়ে কথা বলছিলো। সেটা নিয়ে ঘরে ফিরি। আজ আর বিশেষ কিছু ঘটেনি। আজ এ পর্যন্তই।