Posts

উপন্যাস

তাকদীর ও হালাল ভালোবাসার সংঘর্ষ – পার্ট ৩ ও ৪

June 20, 2025

Morsalin

304
View

📘 উপন্যাস: তাকদীর ও হালাল ভালোবাসার সংঘর্ষ

 🌙 চ্যাপ্টার ১: অদেখা দোয়ার আলো। 

🧕 পার্ট ৩: হারানো আমানতের খোঁজে। 

✍️ লেখক: Morsalin Ahmad.

🕋 “যে সম্পর্কের শুরু হয় ইখলাস দিয়ে, তার গন্তব্য হয় আল্লাহর আরশের ছায়ায়।” 🌸


---

১১. শামিলা খাতুনের কবরের পাশে কাঁদা রাত!

রাতে নিঃসঙ্গ কবরস্থানে বসে আছেন শামিলা খাতুন। তাঁর হাতে তসবীহ, ঠোঁটে চুপ দোয়া আর চোখে নদীর স্রোত। এই কবরটি তাঁর ছোট বোন রেহানার, যে ভালোবেসেছিল এক হাফেজ ছাত্রকে কিন্তু পরিবারের নিষেধে তা পরিণয়ে রূপ পায়নি। রেহানা আত্মহনন করেনি, বরং হিজরত করেছিল সব আকাঙ্ক্ষা থেকে।

একদিন এই কবরেই পাওয়া যায় একটি চিঠি:

> “আপু, যদি তোমার মেয়েও কখনো কাউকে ভালোবাসে, তবে তার ঈমান আগে দেখো, রক্ত নয়। কারণ আমি হেরেছি, কারণ আমার তাকদীরে মানুষ নয়, সমাজ লিখেছিল।”

শামিলা আজও সেই কবরে গিয়ে দোয়া করেন:

> “হে আল্লাহ, আমার বোনকে জান্নাতে দিন আর আমার মেয়েকে এমন একজন দিন, যে তার ভালোবাসার নামাজে ইমাম হবে।”


---

১২. তাহমীদের সামনে এক প্রশ্ন — দাওয়াত, নাকি দুশ্চিন্তা?

তাহমীদ একা বসে আছেন রুমে, দেয়ালে কা’বার ছবি। হাতে একটি চিঠি, যা এসেছে আন্তর্জাতিক ইসলামি দাওয়াহ কাউন্সিল থেকে:

> “আমরা আপনার দাওয়াহ আন্তর্জাতিক মঞ্চে নিতে চাই, তবে এর জন্য আপনাকে ১ বছর মালয়েশিয়ায় থাকতে হবে।”

তাহমীদের অন্তরে দ্বন্দ্ব: একদিকে দেশে থাকা ছাত্র ও কুরআনের শিক্ষা, অন্যদিকে সুনাম ও সুযোগ।

তবে তার হৃদয় বলে:

> “হে আল্লাহ, যদি এই দাওয়াত তোমার কাছেই নিয়ে যায়, তবে আমি যাবো। আর যদি এতে কোনো হারিয়ে যাওয়া সম্পর্ক, যেটা তুমি দিয়েছিলে, শেষ হয়ে যায়— তবে তুমি পথ বন্ধ করে দাও।”


---

১৩. আইমানার জীবনে এক নতুন আগন্তুক

আইমানা কুরআন তিলাওয়াত শেষে মায়ের কাছে এলে মা জানান:

> “তোমার খালাতো ভাই শফিক আসছে দেখা করতে... তারা প্রস্তাব দিতে চায়।”

শফিক, মালয়েশিয়ায় গাড়ির ব্যবসায়ী, কিন্তু ইসলামের জ্ঞান নেই।

> “মা, আপনি জানেন সে কুরআন পড়তে জানে না?” “তুমি জানো না, মানুষ কখন বদলে যায়... হয়তো তোমার হাত ধরে।” “আমি হিদায়াত দিতে পারি না মা, আমি নিজেই পথিক।” “আমি এমন কাউকে চাই, যে নিজেই জান্নাতের পথে হাঁটে — এবং আমাকেও পথ দেখায়।”


---

১৪. তাহমীদের আত্মসমর্পণ

রাতে তাহমীদ সিজদায় পড়ে, চোখ ভিজে কাঁধ ভারী।

> “হে আল্লাহ, আমি যাকে আজও দেখিনি, যদি সে আমার তাকদীর হয়— তাকে আমার জন্য হালাল করে দাও। আর যদি না হয়, তবে হৃদয়কে এমন করো যেন হারাম কোনো চাওয়া তার মাঝে স্থান না পায়।”


---

📘 উপন্যাস: তাকদীর ও হালাল ভালোবাসার সংঘর্ষ 🕊️ চ্যাপ্টার ১: অদেখা দোয়ার আলো ✨ পার্ট ৪: কবরের পাশে তাকদীরের ডাক ✍️ লেখক: Morsalin Ahmad

🌧️ "কখনো কখনো, তাকদীর আমাদের এমন জায়গায় নিয়ে আসে — যেখানে কেবল দোয়ারাই একে অপরকে চিনে নেয়।" — নাজাফের ইমামবাড়ার একটি পুরনো চিঠি


---

১. মেঘলা আকাশের নিচে দুই নামহীন তাওয়াক্কুল

বিকেল ৫:১৮। আকাশ মেঘলা, আলোর চেয়ে অশ্রু বেশি। তাহমীদ দাঁড়িয়ে আছেন সাদা পাঞ্জাবি, জুব্বা ও পাগড়িতে। মুখে কুরআনের নূর। আইমানা ঘোমটা টেনে আসছেন নীরবে। এক বৃদ্ধ কবরস্থানে বলেন:

> “কবরের পাশে দাঁড়িয়ে তাকদীর বদলায় না, তবে দোয়ার লোক হলে আল্লাহ 'না' বলেন না।”

আইমানা বলেন:

> “আমি দোয়ার উত্তর দেখতে এসেছি, কোনো দাবিদার হয়ে নয়।”


---

২. প্রথম দেখা — না বলা শব্দের দ্যুতি

তাহমীদ ও আইমানা পাশাপাশি দাঁড়িয়ে, কেউ কারও দিকে তাকান না। একটি ফুল পড়ে মাঝখানে। ফুল যেন বলে— “তোমরা কথা বলো না, তোমরা দোয়া করো।”


---

৩. কথোপকথন — শব্দের বদলে সিজদা

তাহমীদ জিজ্ঞেস করেন:

> “আপনার বাবা কোথায়?” আইমানা একটি কবর স্পর্শ করে বলেন: “এটাই আমার বাবার কবর।”

তাহমীদ বলেন:

> “আমি দোয়া করবো তিনি জান্নাতে থাকেন। আর আপনি যেন পান এমন একজন, যে আপনাকে জান্নাত পর্যন্ত ইমাম হয়ে নিয়ে যাবে।”

আইমানা বলেন:

> “আপনি যদি তাকদীরের উত্তর হন — তবে আমিও দোয়ার সাক্ষী হতে চাই।”


---

৪. হঠাৎ শফিকের প্রবেশ — এক বিষাক্ত আগুন

শফিক বাইকে এসে কবরের পাশে বলেন:

> “তুই হুজুর হইছোস, তাই ভাবসোস তুই মেয়ে নিয়া দাওয়াত দিবি?”

তাহমীদ বলেন:

> “আমি কাউকে দাওয়াত দিতে আসিনি, আমি হালাল প্রস্তাব দিতে এসেছি।”

শফিক হুমকি দেয়:

> “এই মেয়ে আমার খালাতো বোন, আমি চাইলে বিয়ে করাই ফেলতে পারি।”

তাহমীদ বলেন:

> “আমি কাউকে টক্কর দিই না, আমি শুধু ইমান দিয়ে দাঁড়াই।”


---

৫. এক অলিখিত প্রস্তাব — ফুলের সাক্ষর

সন্ধ্যার আজান হয়। তাহমীদ বলেন:

> “আমি প্রেমের নামে কিছু লিখবো না। তবে চাই, আল্লাহর নামে একটি চিঠি লিখি — যার নাম হবে ‘নিকাহ’। আপনি যদি রাজি থাকেন, আমার মা কালকেই আপনাদের বাড়িতে আসবেন।”

আইমানা বলেন:

> “আপনি জানেন আমাদের ঘর গরীব?”

তাহমীদ বলেন:

> “জান্নাতে প্রশ্ন হবে — ঘরটা ঈমানের ছিল কি না।”


---

৬. বিদায় — কিন্তু মন দু’টি রয়ে গেল কবরের পাশে

তাহমীদ ফিরে যান। আইমানা পরে এসে একটি গোলাপের পাশে রাখা চিঠি খুঁজে পান। চিঠিতে লেখা:

> “আমি আপনাকে ভালোবাসি, কারণ আপনি কুরআনের আয়াতের মতো — দেখিনি, তবু বিশ্বাস করি।” – আপনার সম্ভাব্য স্বামী, যদি আল্লাহ চান 💌
 

🔗 পূর্বের পর্ব (Part 2):

পূর্বের পর্ব পার্ট 2 পড়তে নিচের লিংকে চেপে ধরে রাখুন। 

📖 https://fictionfactory.org/posts/11955
তাহমীদের এক সেজদাহে ছিলো এমন এক দোয়ার কান্না, যা পৌঁছে গিয়েছিল আইমানার অজানা হৃদয়ে। সেই কান্না বদলাতে চলেছে দুইটি তাকদীর।


---

🧩 পরবর্তী পর্বের টিজার (Part 5 Preview):

📜 পরবর্তী পর্ব: দোয়ার নাম লিখে দেওয়া এক নিকাহ

> যখন একটি পবিত্র ‘প্রস্তাব’ রাখা হয় কবরে নামাজের পাশে, তখন সেটা আর প্রেম থাকে না—তা হয়ে ওঠে একটি আমানত।
তাহমীদ ও আইমানার নিকাহ কি সত্যিই হবে?
নাকি শফিক নামক আগুন আবারও ভস্ম করে দেবে হালাল ভালোবাসার ছায়াকে?
তাকদীর এবার কোন দিক লিখছে—নিকাহ, না বিরহ?

🔗পরবর্তী পর্ব (Part 5)এর লিংক:-

👉https://fictionfactory.org/posts/12008

লেখকের আরও অন্যান্য উপন্যাস:

 "তাকদিরের ছায়ায় তুমি"

👉https://fictionfactory.org/posts/11768

 "হারানো গোধূলির সন্ধানে"

👉https://fictionfactory.org/posts/11686

পড়ে ভালো লাগলে অবশ্যই কমেন্টে মতামত জানাতে ভুলবেন না। এবং শেয়ার করে অন্যান্য বন্ধুদের পড়ার সুযোগ করে দিন। 

Comments

    Please login to post comment. Login