Posts

উপন্যাস

তাকদীর ও হালাল ভালোবাসার সংঘর্ষ – চ্যাপ্টার ১ (পার্ট ৮-১০): ইফতারের কান্না, মাতৃত্বের ইশারা, আর একটি করুণ পরিণতি

June 23, 2025

Morsalin

95
View

📖 উপন্যাস: তাকদীর ও হালাল ভালোবাসার সংঘর্ষ
✍️ লেখক: Morsalin Ahmad
📚 অধ্যায়: চ্যাপ্টার ১ (পার্ট ৮-১০)
🔗 আগের পর্ব পড়ুন: https://fictionfactory.org/posts/12008


---

✨ পার্ট ৮: ইফতারের টেবিলে কান্না, প্রথম রমজানের দোয়া, আর তাকদিরের আরেকটি ইশারা

🌙 “যখন হালাল ভালোবাসা রমজানে একত্রে ইফতার করে, ফেরেশতারা তখন গোপনে বলেন— ‘যেমন রোজা কবুল, তেমনি হোক ভালোবাসাও কবুল আল্লাহর দরবারে।’”

১️⃣ নতুন সকাল, নতুন জীবনসঙ্গিনী — এক টুকরো জান্নাতের ঘ্রাণ


বিয়ের পর প্রথম সকাল। তাহমীদ সিজদায় গিয়ে দোয়া করে যেন সে একজন উত্তম স্বামী হতে পারে। পাশে থাকা আইমানা কাঁদতে কাঁদতে বলে—
“তুমি যদি আমাকে কবুল করো, তবেই আমি তোমার জন্য পরিপূর্ণ হবো।”
তাদের ঘর তখন কুরআনের আলো ও ভালোবাসার সুবাসে পূর্ণ, যেন জান্নাতেরই একটি প্রতিচ্ছবি।


--- 

২️⃣ প্রথম রমজান — ভালোবাসার ইফতার ও চোখের ভাষা 

রমজানের প্রথম দিন, তাহমীদ দরজায় ইফতারের মেন্যু হিসেবে লেখে— সিজদার প্রশান্তি, খেজুর-ভেজানো শরবত, ও সম্মিলিত দোয়া।
ইফতারে আইমানা নিজে কিছু না খেয়ে শুধু তাকিয়ে থাকে তাহমীদের দিকে।
সে বলে— “তুমি আমার হাতে তৈরি খাবার দিয়ে ইফতার করেছো,
কিন্তু আমি করেছি তোমার ভালোবাসার দোয়ার মাধ্যমে।”
তাহমীদের চোখে পানি চলে আসে। সে চায়, এই অশ্রুগুলো যেন জান্নাতে তার কবরকে আলোকিত করে।


--- 

৩️⃣ তাহাজ্জুদের রাত — দুই হৃদয়ের এক দিক সিজদাহ 

রাতের তাহাজ্জুদের সময় তাহমীদ আইমানার হাত ধরে বলে—
“চলো, আজ একসাথে তাহাজ্জুদের নামায আদায় করি।”
দুজনে নামাজে দাঁড়ায়। তাহমীদ দোয়া করে—
“যদি কখনো রাগ করি, আমার জিহ্বা যেন তখন কুরআনের আয়াত পড়ে।”
আইমানা বলে—
“আমার কপালে যদি জাহান্নামের ধোঁয়া থাকে,
তবে সে যেন চোখের পানি দিয়ে তা মুছে দেয়।”
নক্ষত্রজ্বল আকাশের নিচে, তাদের ঘরে নামে অদৃশ্য এক প্রশান্তি।


--- 

৪️⃣ তাকদিরের ইশারা — এক স্বপ্ন, এক ডাক 

তাহমীদ ঘুমে দেখে এক শিশু এসে ডাকে— “আব্বু, আমার নাম রাখো রাহমা। আমি তোমার দোয়ার ফল।”
ঘুম ভেঙে সে অঝোরে কাঁদে।
তখন থেকেই সে প্রতিদিন সূরাহ মারইয়াম তিলাওয়াত শুরু করে।
আইমানা দোয়া করে— “হে আল্লাহ, যদি আমার গর্ভে তোমার রহমত আসে,
সে যেন জন্ম নেয় কুরআনের আলোতে।

✨ পার্ট ৯: মাতৃত্বের ইশারা, প্রথম কুরআন খতম, আর সমাজের নিষ্ঠুর ফিসফাস

🕯️ “যে ঘর আল্লাহর নৈকট্য পায়, তার বাতাসে দোয়ার সুবাস থাকে। স্ত্রীর গর্ভেও রহমতের বীজ পড়ে।”

১️⃣ মাতৃত্বের অনুভব — দোয়ার উত্তর 

এক সন্ধ্যায় আইমানা হঠাৎ চুপচাপ হয়ে পড়ে।
পরদিন তার মা তাকে জড়িয়ে ধরে বলে— “তুই মা হতে চলেছিস।”
কাঁদতে কাঁদতে আইমানা বলে—
“আমার প্রথম সন্তান যেন কুরআনের আলোতে জন্ম নেয়— এই ছিল আমার একান্ত প্রার্থনা।”


--- 

২️⃣ কুরআন খতম — হাতে হাত রেখে এক অনন্য অঙ্গীকার 

তাহমীদ প্রস্তাব দেয়— “চলো একসাথে কুরআন খতম করি।”
তারা প্রতিদিন রুকুতে তিলাওয়াত করে, আর সিজদায় কান্নায় ভিজে দোয়া করে।
৪০ দিনে তারা কুরআন শেষ করে।
শেষ আয়াত পড়ার পর তাহমীদ বলে—
“হে আল্লাহ, এই খতম হোক আমাদের সন্তানের তাকদিরে তোমার পক্ষ থেকে একটি অর্ঘ্য।”


--- 

৩️⃣ সমাজের সন্দেহ — ভালোবাসার উপর ছায়া 

চারপাশের কিছু লোক বলে—
“এই মেয়েটা কি একটু বেশি ধর্মপ্রীত নয়? সব সময় কুরআন, নামায, পর্দা!”
তাহমীদের এক বন্ধু পর্যন্ত বলে—
“তুই একটু তো দুনিয়াদারি করিস না কেন?”
রাতে তাহমীদ কবরের পাশে দাঁড়িয়ে বলে—
“হে আল্লাহ, সমাজ তো শুধু চেহারা দেখে, কিন্তু তুমি তো জানো কার অন্তরে তোমার ভালোবাসা আছে।”


--- 

৪️⃣ জবাব আসে আকাশ থেকে — খতিবের কণ্ঠে সমাজের জবাব 

পরদিন জুমার খুতবায় খতিব বলেন—
“আজকের সমাজ হালাল প্রেমকে সন্দেহ করে, আর হারাম প্রেমকে বলে আধুনিকতা।”
তাহমীদ চোখ বন্ধ করে ফিসফিসায়—
“আমি তার কুরআনপ্রেমেই প্রেমে পড়েছি।”
আইমানা বলে—
“জান্নাতে তুমি যেন আমাকে এই ভালোবাসার কান্নাতেই আবার ভিজিয়ে দাও।”


---

✨ পার্ট ১০: গর্ভকালীন রাতের কান্না, রহস্যময় চিঠি, আর শফিকের করুণ পরিণতি

🌙 “যে ঘরে সন্তানের আগমনের প্রতীক্ষা চলে দোয়ার ছায়ায়, সে ঘরে ফেরেশতারা আসে পা টিপে টিপে।”

📖 চ্যাপ্টার ১ – পার্ট ১০: গর্ভকালীন রাতের কান্না, রহস্যময় চিঠি, আর শফিকের করুণ পরিণতি 

🌙 "যে ঘরে সন্তানের আগমনের প্রতীক্ষা চলে দোয়ার ছায়ায়,
সে ঘরে ফেরেশতারা আসে পা টিপে টিপে।"


--- 

১️⃣ গর্ভের ব্যথা — মা হওয়ার কষ্টে দোয়ার ছায়া 

রাতের গভীরে আইমানা ব্যথায় কাঁদে। তাহমীদ তার কপালে হাত রেখে বলে—
“এই কষ্ট যেন তার হৃদয়ে আল্লাহর নাম হয়ে গেঁথে যায়।”
আইমানা ফিসফিসায়—
“আমি কষ্ট পাই না, ভয় পাই যদি আমার সন্তান তোমার পথ থেকে দূরে সরে যায়।”


--- 

২️⃣ রহস্যময় চিঠি — একটি হারানো আত্মার খোঁজ 

সকালে দরজায় পড়ে থাকে একটি চিঠি—
✉️ “যাকে আল্লাহ ভালোবাসেন, তাকেই কাঁদিয়ে দেন।”
আইমানা চিঠিটি দেখে চিনে ফেলে— “এটি আমার শৈশবের বান্ধবী হুসনার হাতের লেখা…
সে হারাম প্রেমে জড়িয়ে হারিয়ে গেছে।”
তাহমীদ জিজ্ঞেস করে—
“তুমি কি তাকে খুঁজতে চাও?”
আইমানা বলে—
“আমি শুধু বলতে চাই— আল্লাহ আজও তোমাকে ডাকছেন। ফিরে এসো…”


--- 

৩️⃣ শফিকের পরিণতি — হারামের প্রেমে মৃত্যু 

তাহমীদের আত্মীয় শফিক প্রেমে পড়েছিল এক মডেলের, যেখানে ছিল দেহের আকর্ষণ, আত্মার নয়।
একদিন সেই মেয়ে জানায়,
“আমার ক্যারিয়ারের জন্য আমাকে লন্ডন যেতে হবে, তুমি আমাকে আটকে রাখতে পারবে না।”
সেই রাতে শফিক আত্মহত্যা করে।
শেষে বলে যায়—
“আমি তার চোখ ভালোবেসেছিলাম, কিন্তু সে আমার রূহকে ছুঁয়েও দেখেনি।”


--- 

৪️⃣ কবরের পাশে প্রতিজ্ঞা 

শফিকের কবরের পাশে দাঁড়িয়ে তাহমীদ বলে—
“হে আল্লাহ, এই কবর যেন আমার শিক্ষা হয়। আমি আমার স্ত্রীকে কখনো হারামের পথে নয়, শুধু জান্নাতের পথে নেবো।”
পেছনে দাঁড়িয়ে থাকা আইমানা চোখের পানি মুছে বলে—
“আমাদের সন্তান যেন একদিন জানে—
তার মা-বাবা একে অপরকে ভালোবেসেছিল শুধু তোমার সন্তুষ্টির জন্য।”


---
🔜 পরবর্তী পর্বে আসছে:

সন্তানের জন্মের আগেই এক ভয়ানক বিপদ!

আইমানার হাসপাতালে রাত কাটানো

তাহমীদের ঈমানের বড় এক পরীক্ষা


📢 ফলো করুন আমাদের পেজ: 


---
 

Comments

    Please login to post comment. Login