ভাগ্যিস ঢাকা আলাদা কোন রাজ্য নয়, আর আমরাও কোন পণ্য নই। সেরকম কিছু হলে মাশুল অবধারিত ছিল।
আমরা উঠেছি দ্বিতীয় তলায়। বাসার পাশে এক তলা বাড়ি। বেশ গাছগাছালি আছে। বারান্দা লাগোয়া একটা কাঁঠাল গাছ একরকম ছায়াময় পরিবেশ তৈরি করেছে। রাত শেষে ঢাকার প্রথম সকালে দেখি, কাঁঠাল গাছে একটা বানর নাক ডেকে ঘুমাচ্ছে। মুরুব্বি গোছের, দেখে তাই মনে হল। ২/৩ দিন পর আবার সে আসে। প্রথম দিন এসেছিলো স্বাগত জানাতে। পরের দফায় দেখে যায়, কেমন আছি। এরপর আর তার দেখা নেই।
নওগাঁয় থাকতে এমনটা ঘটেছিলো। কয়েক দিনের ব্যবধানে দুই দফা বানর এসেছিলো। সেই সব নিয়ে 'হনুমান ও একজন আদম সন্তানের পত্র বিনিময়' নামক আলাপচারিতা হয়েছিলো। কিন্তু ঢাকার এই দফায় কোন আলাপই হলো না। যা হোক, আর দশ জনের যেমন চলে, দিন চলে যাচ্ছিলো।
প্রাচীন আমল থেকে মাশুল প্রথা চালু আছে। এসবের মধ্যে ডাকমাশুল অন্যতম প্রাচীন। আগে মাশুল ছিল মূলত ফসলের উপর। আস্তে আস্তে এই জাল বিস্তার হয়েছে। আয়কর, পৌরকর, কাস্টমস ডিউটি বা আবগারি শুল্ক, আছে মূল্য সংযোজন কর। একজন শিশুর জন্ম হলেই তার উপর মাশুল দিতে হয়। বেবিফুড বলি বা কাপড়-চোপড়, ভ্যাট নামে মাশুল চালু আছে। যে ভিখিরি ৩ বেলা খেতে পায়না, তাঁকেও মাশুল দিতে হয়।

ঢাকায় এসে মাশুল দিতে হয়নি। হয়ত চুপ মেরে ছিল। সুযোগের অপেক্ষায়। সেই সুযোগ এলো গত শুক্রবার (১১ জুলাই ২০২৫) বের হয়েছিলাম। নিউমার্কেট, নুরজাহান মার্কেট ঘুরে সংসদ ভবন ঘুরতে যাই। ভিতরে যাওয়ার সুযোগ ছিল। ঢাকার ভিতরে বিশুদ্ধ সবুজ চত্বরে হাঁটলাম।
বাসায় ফিরেই শাশুড়ির অবস্থা খারাপ হতে থাকে। সকাল হতে হতে মাসুমারও একই অবস্থা। গাঁয়ে প্রচণ্ড ব্যথা, জ্বর। বাথরুমে যাওয়ার শক্তি নেই। দ্রুত সিদ্ধান্ত নিলাম। নিয়ে গেলাম বাংলাদেশ স্পেশালাইজড হাসপাতালে। এমারজেন্সিতে ভর্তি হলো। মানসিক দুশ্চিন্তা বাড়তে থাকলো।
অবশেষে বিকেলে জানা গেলো ডেঙ্গু নয়, কোভিড নেই। ভাইরাস জ্বরে ভীষণ কাহিল হয়ে থাকলো। দুইদিন যেতে না যেতেই সাফিনের জ্বর। ঢাকা তার মাশুল নেয়া শুরু করলো। মাঝ পথে মনে হচ্ছিলো সাফিয়াও আক্রান্ত হবে। না, সে সুস্থ আছে।
আজ এই ফিরিস্তি লিখছি। শরীরে ব্যথা মনে হচ্ছে। গাঁয়ে জ্বর আছে।একটু আগে নাপা, গ্যাসের ট্যাবলেট খেলাম।
দেখা যাক, মাশুল নেয়া কখন থামে।