Posts

উপন্যাস

নীল চিঠি"

July 30, 2025

JINEDIN JIDAN

76
View

"নীল চিঠি"

১: চিঠির শুরু

১৯৭০ সালের শেষ দিক। ঢাকার মধুবাগে এক মেয়ের নাম — সায়েরা। আর চট্টগ্রামে তার প্রেমিক — তাহমিদ। তারা একে অপরকে ভালোবাসত, চিঠিতে কথা বলত — মোবাইল ছিল না, ছিল শুধু হাতে লেখা নীল খাম

তাহমিদ তার শেষ চিঠিতে লিখেছিল:

“আমি দেশকে ভালোবাসি, আর তোকে। যদি ফিরে আসি, তোর হাতে চুড়ি পরাব। আর যদি না আসি... আমার চিঠিগুলো তুলে রাখিস।”

২: যুদ্ধ

১৯৭১ সাল। যুদ্ধ শুরু। তাহমিদ চলে যায় সীমান্তে — একজন মুক্তিযোদ্ধা হয়ে।

সায়েরা প্রতিদিন একটা চিঠি পেত। তাহমিদ লিখত:

“আজ আমি শত্রুর মুখোমুখি দাঁড়ালাম। কিন্তু মনে শুধু তোর কথা আসে। জানিস, তুইই আমার সাহস।”

একদিন চিঠি আসা বন্ধ হয়ে যায়।

এক সপ্তাহ, এক মাস... সায়েরা বুঝে — তাহমিদ আর ফিরবে না

৩: অপেক্ষা

১৯ বছর পার হয়ে গেছে। সায়েরা বিয়ে করেনি, সেই নীল চিঠিগুলোকে বুকের ভেতর লুকিয়ে রেখেছে। সেই ঘরের দেয়ালে এখনো লেখা: “তুই বাঁচিস, তাহলেই আমি অমর।”

৪: ফিরে আসা

এক সন্ধ্যায়, হঠাৎ দরজায় কড়া নাড়ে এক বৃদ্ধ মুক্তিযোদ্ধা। চোখে ছানি, হাতে লাঠি, মুখে দাড়ি। সে শুধু বলে — “তুই কি এখনো নীল চিঠিগুলো রেখেছিস?”

সায়েরা বিস্ময়ে কাঁপতে কাঁপতে বলে — “তুই… তাহমিদ?”

তাহমিদ যুদ্ধের পর পাকিস্তানে বন্দি ছিল ১৮ বছর। সেই প্রেম, সেই চিঠিগুলোই তাকে বাঁচিয়ে রেখেছিল।

৫: শেষ চিঠি

তারা আর বিয়ে করেনি। তবে শেষ জীবনে একসাথে থাকত, প্রতিদিন একটা চিঠি লিখত একে অপরকে — তাদের ভালোবাসা হয়ে উঠেছিল একটি নীল উপন্যাস

 শেষ লাইন:

“চিঠির কালি শুকায়, কাগজ পুরোনো হয়, কিন্তু ভালোবাসা যদি সত্যি হয় — তা একদিন ঠিক ঠিক ঠিকানায় পৌঁছায়।”

Comments

    Please login to post comment. Login