লালীকে অস্বীকার করা হরিপদর পক্ষে সম্ভব না। অস্বীকার করেওনি হরিপদ। একাত্তরের জুন মাসের মাঝামাঝি সময়। তখন ঢাকার কেন্দ্র থেকে পাকিস্তানি ঘাতক বাহিনীর থাবা প্রসারিত হয়ে পড়েছে প্রত্যন্ত গ্রাম পর্যন্ত। যখন খবর পাওয়া গেলো যে সাদুল্লাপুরে রাতের অন্ধকারে নিরস্ত্র গ্রামবাসীদের উপর হামলা করেছে পাক বাহিনী । পুরো গ্রাম আগুন আর রক্তের লালে ছেয়ে গেছে। সোমত্ত পুরুষ থেকে শিশু সবাইকে গুলি করে হত্যা করা হয়েছে । আর গ্রামের মেয়েদেরকে গনধর্ষণের পাশাপাশি জিপে তুলে ক্যাম্পে নিয়ে গেছে তখন আর স্থির থাকতে পারেনি হাস্নাপুর গ্রামবাসী। গ্রামের মোড়ল সালাম মাদবরের উঠানে গোপন বৈঠকে সিদ্ধান্ত হয় যে যেভাবে আছে সেভাবেই রাতের অন্ধকারে বর্ডার পাড়ি দিয়ে আগরতলার আশ্রয় শিবিরে চলে যাবে। অনেকেই বলছে যে সেখানে ভারত সরকার সবধরনের সহায়তা দিচ্ছে।
হরিপদ আর মাধবী মাটিতে মাদুরের উপর মুখোমুখি বসে আছে। হরিপদর সামনে ভাতের থালা। দুই নলা ভাত মুখে তুলেছিলো কিন্তু এর বেশি আর গলা দিয়ে নামেনি। মাধবী স্বামীর দিকে তাকায়। হরিপদ ল্যাম্পের আলোর দিকে তাকিয়েই আছে। বিছানায় ঘুমিয়ে আছে সঞ্জয়। দরজার কাছেই একটা চটের উপর বসে আছে লালী। মাধবী হরিহরের নিরবতা দেখে কিছুটা শঙ্কিত হয়। নিরবতা ভাঙতে চায়