
অধ্যায় ১ — নারায়ণগঞ্জ জেলা কারাগারের সকাল
নারায়ণগঞ্জ জেলা কারাগারের পুরনো, স্যাঁতসেঁতে সেলে বসে সাজিদ চুপচাপ দেয়ালের দিকে তাকিয়ে ছিল।
দেয়ালের ফাটলের ভেতরে জমে থাকা সবুজ শ্যাওলা যেন বহু বছরের জমে থাকা পাপের মতো।
ভোরের আলো ম্লান হয়ে ঢুকছে লোহার গ্রিলের সরু ফাঁক দিয়ে, আলোয় ধুলো কণাগুলো ভেসে বেড়াচ্ছে।
দূরের কোনো মসজিদ থেকে আজানের ধ্বনি ভেসে আসছে, কিন্তু সাজিদের মন যেন সেই সুরও শুনতে চায় না।
পাশের সেলে এক কয়েদি কাশতে কাশতে শ্বাস নিচ্ছে, অন্য প্রান্তে কেউ ধীরে ধীরে কোরআন পড়ছে।
তবুও সাজিদের মনে শূন্যতা—এমন শূন্যতা, যেখানে কোনো শব্দই পৌঁছায় না।
সে জানে, আজও দিনটা যাবে আগের দিনের মতোই—লোহার দরজা খোলা, নাম ডাকা, কাজ… তারপর আবার সেলের ভেতরে ফিরে আসা।
তবুও আজ তার মন অন্যরকম।
আজ তার বুকের ভেতরে যেন এক অদৃশ্য হাত দরজা খুলে দিচ্ছে, আর স্মৃতিগুলো বের হয়ে আসছে ধোঁয়ার মতো।
স্মৃতিতে ভেসে উঠল তার মায়ের মুখ।
সকালে ফজরের পর মা ডাক দিতেন—
মা: “বাবা সাজিদ, ওঠ… নামাজ পড়ে আয়।”
তারপর হাতে গরম রুটি আর ডালের বাটি তুলে দিতেন।
সাজিদ খাওয়ার সময় মায়ের মুখে শান্তির হাসি থাকত।
কালাদি মাদরাসার সেই দিনগুলো—
শীতের সকালে কুয়াশা ভেদ করে মাদরাসায় যাওয়া,
বিকেলে মাঠে বন্ধুদের সাথে ফুটবল খেলা,
আর রাতে প্রাইভেটে হাফিজ সাহেবের কাছে কোরআন তিলাওয়াত শেখা।
সবাই বলত, সাজিদ মাদরাসার সবচেয়ে মেধাবী ছাত্র।
শিক্ষকরা গর্ব করে বলতেন—
শিক্ষক: “দেখো সাজিদকে, কত মন দিয়ে পড়ে। একদিন বড় আলেম হবে।”
সাজিদের বুক তখন গর্বে ভরে যেত।
বাবা প্রতিবেশীদের বলতেন—
বাবা: “আমার ছেলে একদিন আমাদের মুখ উজ্জ্বল করবে।”
কিন্তু এই স্মৃতির মাঝে এক মুখ সবসময় স্পষ্ট হয়ে উঠত—ফাতেমা।
ফাতেমা ছিল শান্ত স্বভাবের, বড় চোখের, মিষ্টি হাসির একটি মেয়ে।
কোরআন তিলাওয়াত প্রতিযোগিতার দিন সাজিদ প্রথম হয়েছিল, আর পুরস্কার নেওয়ার সময় ফাতেমার চোখে যে গর্বের ঝিলিক সে দেখেছিল—তা সাজিদের হৃদয়ে যেন স্থায়ী হয়ে গিয়েছিল।
আজ জেলের অন্ধকার সেলে বসে সেই মুহূর্তগুলোর কথা ভাবলেই বুকের ভেতর মোচড় দেয়।
যে চোখ একদিন তাকে গর্বে ভরিয়ে দিয়েছিল, আজ সেই চোখ হয়তো ঘৃণায় মুখ ফিরিয়ে নিয়েছে।
দূরে কারারক্ষীর সিটি বাজল।
তবুও সাজিদ নড়ল না, শুধু মাটির দিকে তাকিয়ে রইল।
পাশের সেলের এক কয়েদি ডাক দিল—
কয়েদি: “শুনছিস সাজিদ? এত চুপ কেন?”
সাজিদ: “ভাবছি…”
কয়েদি: “কি ভাবছিস?”
সাজিদ: “যা ভেবে লাভ নেই… তবুও থামাতে পারি না।”
সে জানে, অতীতের স্মৃতি ভুলতে চাইলে ভুলা যায় না।
কারণ সেখানে আছে মায়ের হাসি, শৈশবের স্বপ্ন, আর সেই ভয়ংকর রাতের অভিশাপ—যা তাকে এখানে এনে ফেলেছে।
অধ্যায় ২ — মেঘ জমতে শুরু
জেলের অন্ধকার সেলে বসে সাজিদ চোখ বন্ধ করল।
হঠাৎই স্মৃতির দরজা খুলে গেল—
সে যেন আবার ফিরে গেল রুপগনঞ্জের কানচঞ্চ গ্রামের সেই দিনগুলোতে, যখন তার জীবন ছিল স্বপ্নে ভরা।
শীতের সকালের কুয়াশা ভেদ করে সে হেঁটে যেত কালাদি মাদরাসার পথে।
পথের এক পাশে শীতলক্ষ্যা নদী অন্য পাশে ধানক্ষেত, মাঝে মাঝে ভোরের শিশিরে ভেজা ঘাসের গন্ধ বাতাসে ভেসে আসত।
পিঠে বইয়ের ব্যাগ, হাতে কোরআনের কপি—সব মিলিয়ে সে যেন গ্রামের গর্ব।
মাদরাসায় ঢুকেই সহপাঠীদের হাসি-আড্ডা, শিক্ষকের স্নেহমাখা দৃষ্টি—সবকিছুই ছিল সাজিদের কাছে আশীর্বাদ।
সে পড়াশোনায় এতটাই মনোযোগী ছিল যে শিক্ষকরা প্রায়ই বলতেন—
“সাজিদ, তোমার মতো ছেলে গ্রামে একটাও নেই। তুমি একদিন নাম করবে।”
কিন্তু সেই মধুর স্মৃতির ভেতরে সবচেয়ে উজ্জ্বল ছিল ফাতেমার মুখ।
ফাতেমা—শান্ত স্বভাবের, মায়াবী চোখের, বিনয়ী স্বরে কথা বলা এক মেয়ে।
প্রথম পরিচয় হয়েছিল কোরআন তিলাওয়াত প্রতিযোগিতায়।
সেই দিন সাজিদ ছেলেদের মধ্যে প্রথম হয়েছিল, ফাতেমা মেয়েদের মধ্যে।
পুরস্কার নেওয়ার মুহূর্তে তাদের চোখ একবার মিলেছিল, আর সেই দৃষ্টি যেন সাজিদের হৃদয়ে চিরস্থায়ী হয়ে গিয়েছে।
তাদের কথা বেশি হতো না, কিন্তু ক্লাসের বই বা নোট বিনিময়ের সময় ছোট্ট কিছু আলাপ হতো।
সেই ক্ষণিকের কথা সাজিদের মনে দিনের পর দিন রঙ ছড়াত।
কিন্তু মানুষের জীবনে সব সময় সবকিছু মনের মতো হয় না।
একদিন সহপাঠীদের মধ্যে কানাঘুষা শুরু হলো—
“ফাতেমা নাকি অন্য কারও সাথে বেশি কথা বলে এবং সম্পর্কো আছে।”
কেউ কেউ ইঙ্গিত করল, কেউ হাসল।
সাজিদ কিছুই প্রমাণ পেল না, কিন্তু মনে অদ্ভুত এক কষ্ট জন্ম নিল।
সেদিন থেকেই পড়াশোনায় মন বসানো কঠিন হয়ে পড়ে।
ক্লাসে বসেও মন চলে যেত অন্য দিকে।
বিকেলে ফুটবল খেলতেও আর আগের মতো মজা লাগত না।
মায়ের স্নেহের ডাক, বাবার গর্বের কথা—সবকিছু যেন দূরে সরে যাচ্ছিল।
এমন সময় তার জীবনে ঢুকল নাসির, রনি আর সোহাগ—মাদরাসার বাইরের কিছু ছেলে।
ওরা বাজারে সময় কাটাত, সিগারেট খেত, অশ্লীল রসিকতা করত।
একদিন স্কুল শেষে নাসির বলল—
“ভাই সাজিদ, তুই তো সবসময় সিরিয়াস থাকিস। একদিন আমাদের সাথে আয়, মজা করবি।”
প্রথমে সাজিদ না করল, কিন্তু ভেতরে একটা শূন্যতা তাকে টানছিল।
যেন হারানো আনন্দ ফেরত পাওয়ার জন্য সে কিছু খুঁজছিল—
আর সেই খোঁজই তাকে এমন পথে নিয়ে যাবে, যেখান থেকে আর ফেরার রাস্তা থাকবে না।
জেলের স্যাঁতসেঁতে দেয়ালে হেলান দিয়ে সাজিদ দীর্ঘশ্বাস ফেলল।
তার মনে হচ্ছিল, যদি সেদিন নাসিরের সাথে যাওয়া বাদ দিত… হয়তো আজ সে এখনো মায়ের কাছে, মাদরাসায়, ফাতেমার দৃষ্টিতে সম্মানিত থাকত।
কিন্তু অতীত বদলানো যায় না।
সে শুধু ফাঁকা চোখে দেয়ালের ফাটলগুলোর দিকে তাকিয়ে রইল—
যেন প্রতিটি ফাটল তার জীবনের একেকটি ভাঙা স্বপ্নের চিহ্ন।
অধ্যায় ৩ — অন্ধকারের প্রথম স্বাদ
জেলের ঠান্ডা মেঝেতে বসে সাজিদ সেই দিনটার কথা মনে করল—
যেদিন প্রথমবার নাসিরের সাথে কানচঞ্চ বাজারে চায়ের দোকানে গিয়েছিল।
সন্ধ্যার বাতাসে ধুলো উড়ছিল, দোকানের টিনের ছাউনি টুপটাপ শব্দ করছিল।
চা-দোকানির পাশে বসে কয়েকজন লোক সিগারেটের ধোঁয়া ছাড়ছিল, আর কোণে নাসির, রনি, সোহাগ হাসাহাসি করছিল।
চা খেতে খেতে নাসির পকেট থেকে ছোট্ট একটি প্যাকেট বের করল।
ভেতরে সাদা গুঁড়া—
নাসির ফিসফিস করে বলল,
“এই জিনিসটা খেলে সব টেনশন শেষ। মাথা হালকা, দুনিয়া নতুন লাগে।”
সাজিদ প্রথমে ভয় পেয়ে গেল। সে বলল।
“না ভাই, এসব ভালো না,”
কিন্তু নাসির হেসে উত্তর দিল—
“আরে, তুই একবার চেষ্টা কর। তোকে দেখতেছি, মন খারাপ করে বসে আছিস এতদিন। এটাই তোর ওষুধ।”
সাজিদ কিছুক্ষণ চুপ রইল।
মনে পড়ল ফাতেমার কথা, ভাঙা বিশ্বাসের কষ্ট, পড়াশোনায় মন না লাগার যন্ত্রণা।
হঠাৎ মনে হলো, হয়তো সত্যিই এটা কিছুক্ষণের জন্য সব ভুলিয়ে দেবে।
এক মুহূর্ত দ্বিধার পর সে নাসিরের হাত থেকে গুঁড়োটা নিয়ে এক চুমুকের মতো টান দিল।
প্রথমে গলা জ্বলে উঠল, চোখে পানি চলে এলো, কিন্তু কিছুক্ষণ পর মাথার ভেতরে এক অদ্ভুত হালকা ভাব ছড়িয়ে গেল।
সব দুঃখ, সব চিন্তা যেন মিলিয়ে গেল।
সেদিন বাড়ি ফিরল সে অন্যরকম অনুভূতি নিয়ে।
মা যখন খাবার দিলেন, তার চোখে সেই স্নেহমাখা দৃষ্টি ছিল, কিন্তু সাজিদ যেন দূরের কোনো জগতে হারিয়ে ছিল।
দিন যেতে যেতে সেই নেশা তার কাছে নিয়মিত হয়ে উঠল।
প্রথমে সপ্তাহে একদিন, পরে দুদিন, তারপর প্রতিদিন।
মাদকের জন্য টাকার প্রয়োজন বাড়তে লাগল।
প্রথমে নিজের জমা পয়সা খরচ করল, তারপর বাবার পকেট থেকে লুকিয়ে নিল।
মায়ের চোখে ধরা পড়ার ভয় ছিল, কিন্তু মাদক তার ভয়কেও ধীরে ধীরে মুছে দিল।
একদিন মা বললেন,
“বাবা, তোর চোখ লাল কেন? এত রাতে কোথায় থাকিস?”
সাজিদ রাগে উত্তর দিল,
“আপনি আমাকে সন্দেহ করেন কেন?”
তার সেই কণ্ঠে যে বিষ ছিল, তা মা আগে কখনো শোনেননি।
সেই মুহূর্ত থেকেই পরিবারে ফাটল শুরু হলো—
বাবা রেগে যেতেন, মা কাঁদতেন, আর সাজিদ নাসিরদের সাথে আরও বেশি মিশতে লাগল।
জেলের সেলে বসে সাজিদ আজ বুঝতে পারে—
সেদিন যদি সে প্রথম টানটা না দিত, হয়তো সবকিছু ভিন্ন হতো।
কিন্তু আফসোসের কোনো দাম নেই।
অধ্যায় ৪ — সেই অভিশপ্ত রাত
জেলের স্যাঁতসেঁতে দেয়ালে হেলান দিয়ে সাজিদ চোখ বন্ধ করল।
অন্ধকারের ভেতর থেকে ভেসে উঠল সেই রাতের প্রতিটি দৃশ্য—
যেন প্রতিটি মুহূর্ত তাকে শিকল বেঁধে ধরে রেখেছে।
দিন কয়েক ধরে তার হাতে কোনো টাকা ছিল না।
নাসির বারবার ফোন দিয়ে বলছিল—
“ভাই, আজকে একটু নিয়ে আয়, না হলে খেতে পারবি না।”
মাদক ছাড়া সাজিদের শরীর কাঁপছিল, মাথা ব্যথায় ফেটে যাচ্ছিল, চোখে ধোঁয়া ভাসছিল।
বাবা তখন বাইরে, মা রান্নাঘরে রাতের খাবার রাঁধছিলেন।
সে মায়ের কাছে গিয়ে বলল,
“মা, আমাকে এক হাজার টাকা দাও।”
মা অবাক হয়ে তাকালেন,
“কিসের জন্য?”
“জরুরি দরকার।”
“তুই কি আবার ওই বাজে ছেলেদের সাথে ঘুরছিস?”
সাজিদের বুকের ভেতর রাগ জমে উঠল।
“মা, টাকা দাও, কথা বাড়িও না।”
মা কড়া গলায় বললেন,
“না, আমি তোকে এক টাকাও দেব না। তুই বদলে গেছিস সাজিদ। তোর চোখ, তোর কথা—সব বদলে গেছে।”
এই কথা যেন আগুনে ঘি ঢালল।
নেশার তীব্র চাহিদা তার মাথা অসাড় করে দিল।
রাগে, হতাশায়, আর নেশার টানে সে রান্নাঘরের পাশে রাখা লোহার রড তুলে নিল।
“তুই সবসময় আমার পথে দাঁড়াস!”—চিৎকার করে সে রড দিয়ে আঘাত করল।
মা চিৎকার করে উঠলেন,
“আল্লাহ… সাজিদ…!”
কিন্তু সেই চিৎকার ধীরে ধীরে থেমে গেল।
রক্ত মাটিতে ছড়িয়ে পড়ল, আর সাজিদের হাতে কাঁপুনি শুরু হলো।
মুহূর্তের মধ্যে তার চোখ থেকে রাগ মিলিয়ে গিয়ে ভয় এসে জায়গা নিল।
সে বুঝতে পারল কী করেছে, কিন্তু তখন আর কিছু ফেরানোর ছিল না।
পাশের বাড়ির লোকজন দৌড়ে এলো, কেউ পুলিশে খবর দিল।
সাজিদ বসে পড়ল মায়ের নিথর দেহের পাশে—
“মা… আমি তো শুধু টাকা চেয়েছিলাম… কেন তুমি…”
পুলিশ এসে তাকে হাতকড়া পরাল।
গ্রামের মানুষ, যারা একসময় তার গর্বের কথা বলত, আজ ঘৃণায় মুখ ফিরিয়ে নিল।
তার বাবার চোখে ছিল শুধু অশ্রু আর অভিশাপ।
জেলের সেলে বসে সাজিদ আজও সেই রাতের শব্দ, গন্ধ, আর দৃশ্য ভুলতে পারে না।
সে জানে—ওই এক রাতেই সে শুধু মাকে নয়, নিজের জীবনকেও হত্যা করেছে।
অধ্যায় ৫ — শেষ সিদ্ধান্ত ও জীবনের বার্তা
নারায়ণগঞ্জ জেলা কারাগারের স্যাঁতসেঁতে সেলে সাজিদ একাকী বসে ছিল।
তার চোখ ছিল বিষণ্ণ, মনে ভেসে উঠছিল অনেক স্মৃতি — মায়ের স্নেহময় হাসি, ফাতেমার মায়াবী চোখ, বাবার দুঃখপূর্ণ নীরবতা।
সবকিছু যেন এক ভয়ানক কাব্য, যার শেষটা খুব করুণ।
তার হাতে আজ পুলিশের নোটিশ—ফাঁসির দিন নির্ধারণ করা হয়েছে।
মায়ের হত্যা অপরাধের দায়ে তার জীবন শেষ হতে চলেছে।
সে জানে, তার রাগ আর মাদক তাকে একসময় অন্ধ করে দিয়েছিল, কিন্তু সেই অন্ধকারে তার মা সবচেয়ে বড় শিকার হয়েছিল।
সাজিদ মনে মনে বলল "মা, তোমার কাছে আমার ক্ষমা চাওয়ার মুখনেই, মা... আমি যে তোমার হত্যাকারী ," সাজিদ মনে মনে আবারও বলল, "তুমি আমার সবকিছু ছিলে। আমার এই দুঃখের ভেতর তোমার মায়া আজো বাঁচে।"
জেলের দেয়ালে ঠেস দিয়ে সে দাঁড়িয়ে, জানালার বাইরে ধোঁয়াটে আকাশের দিকে তাকালো।
মেঘ জমে আছে, কিন্তু একটু দূরে সূর্যের কিরণ ফোঁটেছে—একটা নতুন জীবনের প্রতিশ্রুতি।
কিন্তু তার জন্য সে সুযোগ আর আসবে না।
সাজিদ নিজেকে বলল,
"আমার মতো যারা মাদকের আঁধারে হারিয়ে গেছে, তাদের বলি—এ পথ বেছে নেবেন না।
মাদক জীবনের ধ্বংস, যা শুধু নিজেকে নয়, প্রিয়জনদেরও ধ্বংস করে।
অপরাধের পরিণতি কখনো মিষ্টি হয় না, আমার ফাঁসিই তার সাক্ষ্য।
আমি ভুল করেছি, আর তাই দণ্ড পেয়েছি।
তাই তোমরা ফিরে এসো, এই ধ্বংসাত্মক পথে চলো না।"
সাজিদের মুখে ছিল গর্বহীন অনুশোচনা, চোখে বুক ফাটানো কান্না।
তার জীবনের শেষ প্রহরে সে একটা বার্তা রেখে যেতে চেয়েছিল—
মাদক থেকে দূরে থাকো, নিজের ও পরিবারের ভবিষ্যত বাঁচাও।
এই হলো গল্পের সমাপ্তি — সাজিদের বেদনার শেষ অধ্যায়।
যা মাদকের ভয়াবহ পরিণতি ও অপরাধবোধের এক জীবন্ত শিক্ষণীয় গল্প।