অনেক দিন আগের কথা তখন বাংলাদেশে ইসলামিক গানের কোনো চলন ছিল না।সেই সময় চলত ভজন সংগীত, শ্যামসংগীত,চর্যাপদ ইত্যাদি।
এমনই এক দিন কাজী নজরুল ইসলাম কে আব্বাস উদ্দীন বলল " অনেক প্রকার গানই তো গাওয়া হলে চলুন এবার একটু ইসলামিক গান লেখা হোক।
আব্বাস উদ্দীনের কথাটা কাজী নজরুল ইসলামের পছন্দ হলো।কিন্তু উপায় নেই কারন এরকম গান লেখা হলেও আমাদের কেউ গানটির রেকর্ড তৈরি করতে দেবে না। কারণ সেই সময় ইসলামিক গজল থেকে ভজন সংগীত বেশি জনপ্রিয় ছিল। বলতে গেলে সে সময় কেউ তেমন একটা ইসলামিক সংগীত গাইত না। যাও গাওয়া হত তা ছিল হিন্দি, আরবি বা তুর্কি ভাষায়। আর এটাই কারণ ছিল ইসলামিক গান পছন্দ না করার প্রধান কারন।
সে যাই হোক আব্বাস উদ্দিন তার পরিচালক কে এ বিষয়ে বললে, তিনি এক কথায় না বলে দেন।
আব্বাস উদ্দীনও ছিল নাছোর বান্দা যতখন না পরিচালক রাজি হচ্ছে ততক্ষণ পযন্ত যা করা লাগে তিনি সবই করলেন। শেষমেস আব্বাস উদ্দীন পরিচালক ও কোম্পানির রিহার্সেল-ইন-চার্জ ভগবতী ভট্টাচার্য কে রাজি করাতে সক্ষম হলেন।
এবার আব্বাস উদ্দীন গেলেন কাজী নজরুল ইসলামের কাছে।তাকে সব খুলে বললেন। নজরুল সব শুনে খুবই খুশি হলেন এবং তিনি গান লিখতে শুরু করলেন। আব্বাস উদ্দীন জানত কবি সাহেবের কাজে যদি পানের ডালা রাখা হয় তাহলে তিনি আরো সহজে গান লিখতে পারবে। কারণ নজরুলের একটা অভ্যস ছিল তিনি লিখতে বসলে আগে পানের ডালা তার পাশে রেখে লিখতেন ও পান চাবাতেন।
এভাবেই পান খেতে খেতে লিখে ফেললেন এক অমর সংগীত '' ওগো রমজানের ও রোজার শেষে এল খুশির ঈদ"
লেখা হলো, রেকর্ড ও করা হলো কিন্তু পাবলিক করতে কিছু দিন সময় লাগল।তখন ঈদের ছুটির বেতর এই গান টি প্রকাশ করা হলো।
ঈদের ছুটি শেষ করে আব্বাস উদ্দীন রেলে করে কাজে ফিরছেন। এমন সময় এক ব্যাক্তি গেয়ে উঠলেন " ওগো রমজানের ও রোজার শেষে এল খুশির ঈদ" গান শুনে আব্বাস উদ্দীন অনেক খুশি হলেন। তিনি বুঝতে পারলেম তাদের গাওয়া গানটি মানুষ পছন্দ করেছে।
খুশি মনে কাজে ফিরলেন। অফিসের বেতর প্রবেশ করার সাথে সাথেই অবাক হয়ে যান তিনি। কারণ তিনি জানতে পারেন তাদের গাওয়া সেই গজল টা এখন পযন্ত সবচেয়ে বেশি বিক্রি করা এ্যালবামের তালিকায় উঠে এসেছে।
এমন পরিস্থিতি তে সয়ং কোম্পানির রিহার্সেল-ইন-চার্জ ভগবতী ভট্টাচার্য, আব্বাস উদ্দীন ও কাজী নজরুল ইসলাম কে আরো বেশি বেশি ইসলামিক গান লিখতে বললেন। আর এভাবেই শুরু হলো বাংলায় ইসলামী সংগীতের এক নতুন শাখা।
বিস্তারিত দেখতে এখানে ক্লিক করুন।