পোস্টস

পোস্ট

জানলায় আমার দুঃখলতা

২২ সেপ্টেম্বর ২০২৩

মুয়ায আবদুল্লাহ

মূল লেখক মুয়ায আবদুল্লাহ

জীবনের প্রায়ান্ধ গলি-ঘুপচি একা মাড়িয়ে নিজেকে পরিণত করেছি ক্ষুধার্ত শ্বাপদে। যে অসীম দীর্ঘঃশ্বাস বুকের ক্ষতে—বড়ো পৈশাচিক মৌনতায় পুড়িয়ে দিতে পারে সমাজরীতি-নির্মাতাদের তখতে শাহী। নিয়মের গেঁয়ো শৃঙ্খল ভেঙে ভেঙে অনিয়মের ত্রাস সৃষ্টি করি আর অভিশাপের নীল আগুন দিয়ে বুভুক্ষু ক্ষুধা মিটাই প্রত্যহ। আশ্চর্যের কিছু নাই আমার পৃথিবীতে কিম্বা অত্যাশ্চর্যের কিছু থাকলে—সে অন্ধকারের আফিমে অভ্যস্ত জীবনকে অধীনস্থতার শেকলে বাঁধবার দুঃসাহস। যে হৃদয় সবুজ অন্ধকারের রোশনাইয়ে ভরপুর—শৃঙ্খলিত জীবনের মেকি আলোর অভিশাপ তার কাছে তুচ্ছ। ক্ষুধার্ত অভিশাপের লাভা উদগীরণ করে যে, ফের তাকেই অভিশাপের হুমকি দেয়া—কার সাধ্যি!
২.
এভাবে কতদূর হেঁটে যাবো? দুরারোগ্য জ্বরের করতলগত পলকা শরীর—দুলে ওঠে নিমের ছায়ায়। কি করুণ অনিশ্চয়তা সময়ের ভাঁজে ভাঁজে, বিষণ্ন হাওয়ার ভিতর—হাতে হাত রাখবার কেউ নেই। মৃত্যুর মতো সত্য‌‌‌ও কেমন আড়ালে দাঁড়িয়ে রয়, একা। ব্যস্ততামগ্ন জুমাবারের বিকেলগুলো হাওয়ায় ভেসে থাকে অগুনতি গল্পের আসর হয়ে। পরিচিত মেঘেরা ফিরে আসে না কেনো, কেনো অপার দূরত্ব মেখে অন্য মুখে বাদল ঝরায়? এই শোকেই বুঝি খেয়াঘাটে আজ হল্লা নেই। নিঝুম অন্ধকার ঝুলে আছে চারদিকে। নদীর ঘোলা জলে ভেসে চলা কচুরির ঝোপ দেখে বুঝে যাই স্রোতের গতি কেমন। যেমন চুম্বনের অধীরতা বুঝিয়ে দেয়—মনের কন্দরে বয়ে চলা ঝড়ের বিস্তৃতি কতদূর গভীর।
৩.
সন্ধ্যার আকাশটা এভাবে প্রায়ই হারিয়ে যায় অন্ধকার বুকে করে—আরও দূরের কোনো আকাশে। এইখানে তখন একান্তে লেগে থাকে বিষাদের হাওয়া। বিরহিয়া বৃষ্টি ঝরে খুব। এই ঝড়-জলের রাতে কোথাও অপেক্ষা করে নেই কেউ। ফলত বিষাদের বিষ-জমা চোখ নিভে গেলে দেখি—জারুল গাছটার ডালে থোকা থোকা বিষণ্নতা ফুটে আছে যেনো। ক্রমশ ধুলোপথের দূরত্ব ভেঙে ছুটে যেতে ইচ্ছে করে—যেখানে সকরুণ জেগে থাকে আমার মায়ের ভেজা নিঃশ্বাস। 
৪.
এভাবে কাশফুলের দিন উড়ে এলে হাওয়ায়—বুকের ভিতর সন্ধ্যা জাগে। নদী নদী হয়ে বয়ে চলে স্মৃতির সাম্পান। পাহাড়ের সবুজিয়া কোল, সাগরের নুনগন্ধা বাতাস বুকে পাশাপাশি বসে থাকা—রেখা আঁকে সমূহ মায়ার।