Posts

গল্প

সেদিনের বিকেলে।

October 17, 2025

Shafin pro

155
View

বিকেল তিনটে। মা বললো কোথায় যাচ্ছি। আমি বললাম প্রতিদিনের মতো যে কাজে যাই সে কাজেই যাচ্ছি। কিন্তু আমার মনে হল। মা হঠাৎ করে কোথায় যাচ্ছি শব্দটি কেন জিজ্ঞেস করলো। ভয়ে আমার বুক কাঁপছিল। মার কাছে কি ধরা পড়ে গেলাম। মা বলল এখানে যাওয়ার দরকার নাই। আমি বললাম জরুরী একটা কাজ আছে। আমি কখনো মার কথা অবহেলা করি না। মাকে জিজ্ঞেস করলাম তোমার কিছু কি লাগবে। সে বলল না। আমি আবার জিজ্ঞেস করলাম। তাহলে। সে বলল পায়েস রান্না করেছি খেয়ে যাও। এদিকে তো আমি চিন্তায় আছি। তখনকার সময় মোবাইল সবার হাতে আসেনি। তবে আমার একটি মোবাইল ছিল। কিন্তু আমি যে মোবাইলটি দিয়ে ওকে ফোন করে বলবো একটু দেরী হবে। তুমি আরো পরে বের হও। তা আর বলতে পারলাম না মোবাইলের অভাবে। এর ভিতরে মা পায়েশ নিয়ে চলে এলো। দেখলাম আকাশে খুবই রোদ্দুর আছে। পায়েস খেতে খেতে চিন্তা করলাম। মার মনে হয় আর কোন প্রশ্ন নাই। পায়েস খেতে দেরি হওয়াতে রজ্জু চলে গেল হঠাৎ করে মেঘলা এসেই বৃষ্টি শুরু। মনটা খুব খারাপ লাগলো বাইক নিয়ে বের না হলে এত তাড়াতাড়ি কিভাবে যাব। প্রাকৃতিক গিয়ে দেখি। মা রান্না করে চলে গেছে আমি তাড়াহুড়া করে একটু পর্দা যুক্ত রিক্সা দেখে সামনের দরজাটা টান দিয়ে হুট করে রিকশা নিয়ে চলে গেলাম। পথিমধ্যে আমার এক বন্ধু দেখি বাইকে ভিজে আমার বাসার দিকে চলে আসতেছিল। দেখে আমাকে দাড় করালো। দেখি মনের ভিতর খুব উস্কো। আমি রিকশাটির থামালাম মোটরসাইকেল টি ওরা সাইট করে রেখে দোকানে দাঁড়ালাম। বলল তুই তাড়াতাড়ি চলে যা। ও খানে বসে আছে এখনো। আমি বললাম ওখানে কি। কেন তুই নাকি ওকে পার্কে যেতে বলেছিস। আমরা তো ওকে অনেকক্ষণ দেখলাম ওখানে বসে আছে। দেরি দেখে দেখে আমার দিকে এসে বলল। আপনার বন্ধু কোথায় আমি বললাম কেন। সে বলল তার তো এখানে আসার কথা ছিল তিনটায়। তাহলে তুই আমাকে একটু মোবাইল করে জানাতে পারতি তো ওরে বন্ধু আমি তো আজকে মোবাইল নেইনি। কেন মোবাইল কি হয়েছে। কেন তোর মোবাইলে কি হয়েছে। মোবাইল তো আমি বাসায় রেখে এসেছি। তাহলে ও এখন কোথায় আছে। আমি জসিমের ক্যাফেতে বসে রেখে এসেছি। তুই কথা না বাড়িয়ে তাড়াতাড়ি রিক্সা নিয়ে চলে যা। মেয়ে মানুষ বলে কথা রাগ হয়ে ফিরে গেলে আর তোর সাথে কোনদিন কথা বলবে না। আমি আর দেরি না করে বৃষ্টি অবস্থায় রিক্সায় উঠে গেলাম। এমন একটি অবস্থা বর্তমান দিনে তো সবার হাতেই মোবাইল থাকে নেটওয়ার্ক থাকে। কিন্তু সেসময় সবখানে নেটওয়ার্ক ও ছিল না সবার কাছে মোবাইলও ছিল না। তখনকার সময় মোবাইলে কথা বলতে গেলে ফোনের দোকানে গিয়েদেখি  এক মিনিট দশ টাকায় কথা বলতে হতো‌। রিক্সাওয়ালাও অবশ্য বয়সে ছিল। তাকে আমি বললাম চাচা একটু জোরে চালাল। চাচা বলল চালাইতে তো চাইতেছি কিন্তু বাতাসে তো চালাইতে পারতেছি না। এদিকে বৃষ্টির পানিতে রাস্তাঘাট পানিতে ভরপুর হয়ে গেছে। রিক্সাওয়ালাকে বললাম চাচা মাঝখান দিয়ে চালায়। চাচা মিয়া মাঝখানে যেতেই ধোপস রিক্সার সামনে ফর ভেঙ্গে চাচা মিয়া আর আমি দুপুর করে পানিতে পড়ে গেলাম রাস্তার উপরে। চাচা মিয়া  প্রথমে উঠে বলল আপনি ব্যাথা পেয়েছেন আমাকে জিজ্ঞেস করলেন আমি বললাম আপনি কি ব্যথা পেয়েছেন। চাচা মিয়া হাত মারছিল  ব্যথা কিন্তু সে বলল আপনি কি ব্যাথা পেয়েছেন। আমি বললাম না। কিন্তু আমি বুঝতে পারলাম সে ব্যথা পেয়ে। আমি তাড়াহুড়ো করে আমি আর চাচামিয়ার  রিকশাটি ভিজে ভিজে  রাস্তার কিনারায় নিলাম। এখন এমন একটি অবস্থা চাচা মিয়া কে দেখেও যেতে পারে। রিক্সাটা রাস্তার পারে আনতেই দেখে হতাশ চাচামিঞার হাত থেকে রক্ত বের হচ্ছে। অবশ্যই যেখানেই দৃশ্যটি পড়েছিল সে জায়গাটি আমার খুব পরিচিত। তাই আমি ছুটে গেলাম একটা ফার্মেসিতে চাচা মিয়াকে নিয়ে। ফার্মেসির কম্পাউন্ডার চাচা মিয়া কে দ্রুত একটি ব্যান্ডেজ করে দিল। আমি বললাম চাচা মিয়া আপনার বাসা কোথায়। সে বলল যে কথা দেখি যে আমার বাসার পিছনেই তার বাসা। তার মানে আমাদের এই ভাড়াটিয়া এখন খেলা কিভাবে সামলাই। আমি জিজ্ঞেস করলাম আপনি কি আমাকে চিনেন। কারন আমি তো তাকে কখনো দেখিনি। সে বলল আমি তো আপনাদের ভাড়াটিয়া। আপনি আমাকে চেনেন না। আমি কামরুলের বাবা। তারমানে কামরুল আংটির শামীম ইনি ‌। কামরুল আন্টি হ্যালো বন্ধুরা আমার আম্মার সহ কর্মী সারাদিন আমার মার পিস পিস থাকে। কখন কি লাগবে কোনটা ঝাড়ু দেওয়া লাগবে কোনটা মোছা লাগবে এ নিয়ে সারাদিনই আমাদের বাসায় কাজ করে। এখন পড়লাম পুরা বাটে না। এখন চিন্তা করে পারছি না চাচা মিয়া কি বাসায় নিয়ে যাব না এখানে বসে রাকব। কি আর করা দুজনেই বৃষ্টিতে ভিজে গেলাম। চাচা মেয়েকে একটি রিকশায় উঠিয়ে দিয়ে। তার রিকশাটি গ্রেজে পাঠিয়ে দিলাম একটা ভ্যান গাড়িতে করে। আমি আবার একটা ইচ্ছা করে দিল চলে গেলাম ওর উদ্দেশ্যে পার্কের লিগে। দ্রুত পার্কে চলে আসলাম রিক্সা ভাড়া দিয়ে তাড়াতাড়ি ভিতরে ঢুকলাম জসিমের দোকানের দিকে  যাওয়ার জন্য ইতিমধ্যে দেখি যে আমাদের বড় মিয়া হাজির হয়ে গেছেন পার্কের দিকে আমি বড় মিয়াকে দেখে সাইট কাটতে চেয়েছিলাম। কিন্তু হঠাৎ করে বড় মিয়া ডাক দিয়ে বলল কি নেতাজি সুভাষচন্দ্র রায় আপনি হঠাৎ করে বৃষ্টিতে ভিজে দৌড়ে কোথায় যাচ্ছে। আমি বড় কে দেখে বললাম ভাই জসিমের দোকানে যাই। সে আমাকে ডাক দিতেই তার কাছে একটি ফোন চলে আসে। আমি দ্রুত তার কাছ থেকে সরি পড়ি। ছুটে যাই জসিমের দোকানে। জসিম দেখে আমাকে খুব ফায়ার। বলল এত দেরি হয়েছে কেন। নাই সে বৃষ্টি দেখে অনেকক্ষণ এখানে বসে ছিল। কিন্তু তোমার অপেক্ষা করতে করতে রাগ করে সে বাসায় ফিরে গেল। বিকেলটি যেন ধারাস করে মাটিতে পড়ে গেল। এই সেই সেদিনের বিকেল।

Comments

    Please login to post comment. Login

  • Shafin pro 1 month ago

    গল্পটির ভিতরে আরও কিছু আরো কিছু ঘটনা ঘটেছিল যা বলার সময় হয়নি পরবর্তীতে আরো কিছু গল্প বের করে দেব