রাত আনুমানিক বারোটার বেশি। ছেড়ে বাসায় ফিরছিলাম। হঠাৎ দেখি একটি মেয়ে গাড়ির সামনে দাঁড়িয়ে আছে রাস্তায় দেখে একটু চিন্তিত হলাম। মেয়েটি দেখতে খুবই সুন্দর কিন্তু এই মুহূর্তে এখানে মেয়েটি কি করছে। আমার যেতে যেতে বাইক একটু কৌতুহল হবে। আমি ধীরে ধীরে স্পিড কমিয়ে আস্তে আস্তে চলতে লাগলাম। কাছাকাছি আসতেই মেয়েটি আমাকে সিগনাদিল। আমি আস্তে আস্তে তার সামনে গিয়ে ব্রেক করলাম। সে আমাকে রিকোয়েস্টের ভঙ্গিমায় খুব সুন্দর কন্ঠে বলল ভাই।ভাই আপনার কাছে কি একটু টুল বক্স হবে। আমি না খুব বিপদে পড়ে গেছি আমার গাড়িটা স্টার্ট হচ্ছে না কি হলো বলতেও পারতেছি না। প্লিজ যদি একটু আপনার টুল বক্সটা আমাকে একটু দিতেন। তাহলে আমার খুব ভালো হতো আমার গাড়িটা আমি ঠিক করে চলে যেতে পারতাম মেটির কথা শুনে আমার মনে হল যে সে অবশ্যই তার গাড়িটি না হয় কিছু সমস্যা হয়েছে। তবে আমি জানতাম বরাবরই মেয়েরা বিপদে পড়লে এইভাবেই আকার অঙ্গীতে ভঙ্গিমায় পুরুষের সাহায্য চায়। এটি আবারো বললো ভাই একটু দেখুন না। তবে আমি চিন্তা করলাম যে মানুষ বৃষ্টিতে তাকে আমার সাহায্য করার দরকার। আমি আমার বাইকটি থামিয়ে বক্স খুলে টুলবক্স বের করলাম। বের করে তাকে জিজ্ঞেস করলাম আপনি কি আপনার কোনটা দরকার। সে বলল ভাই সবগুলোই দেখিনা। আমি টুলবক্স টি তার হাতে দিলাম। দেওয়ার পরে বক্সটি নিয়ে সে তার গাড়ির দিকে চলে গেল। আমি চিনতে করলাম এই মনে আমার লেট হয়ে গেল। কিন্তু মনেরও বুঝ দিতে পারতেছিলাম না। যে এত রাত্রে একটি মানুষ এখানে দাঁড়িয়ে আছে। রাস্তার উপরে চতুর্দিকে কোন লোক নেই জন নেই বিশেষ করে হাইওয়ে রোডে লোকজন একটু কমই থাকে কিছুক্ষণ পর পর একটি গাড়ি আসে আবার ফাঁস করে চলে যায়। আমি আমার বাইকের সামনে দাঁড়িয়ে রইলাম। মেয়েটি দেখতেছি কিছুক্ষণ ধরে খুটিনাটি খুঁটিনাটি গাড়িটা টুলবক্স নিয়ে ঘুঘর করতেছে। আমি ভাবলাম সে গাড়ি মেরামতের সাময়িক সবই কাজ জানে কিন্তু দেখলাম যে সে ঘুডুগুটি করতেছে কোন কাজের কাজ করতে পারতেছে না। তখন আমি আমার বাইকের লক করে চাবি পকেটে নিয়ে সামনের দিকে এগুলাম। গিয়ে দেখি সে ম্যাক্সিমাম জিনিসই খুলে ফেলেছে। অবশ্য আমি গাড়ি সম্বন্ধে না জানলেও পড়াশোনার ব্যাপারে জাস্ট একটু শিখেছিলাম তার ভিতরে কিছু মেকানিক্যাল কাজও ছিল। মেয়েটির কাছে যেতেই নীতি মস্তি একটি হাস দিয়ে ফেস করুন। কখনো বুঝতে পারিনি আশপাশে একটি পশুর গন্ধ লাগছিল। হঠাৎ মেয়েটি বলল আমাকে একা রেখে যাবেন না আমি চিন্তিত হয়ে গেলাম। কারন আমার এখান থেকেও বাসায় ফিরতে পাক্কা এক ঘন্টার কম লাগবেনা। মেয়েটি বলল ভাই একটু দেখুন না কি হয়েছে। এখন আমার মনে পড়ে গেল নামাজের সেই কথাটি আমি জুম্মার নামাজ পড়ে শেষ করে ফেলেছি রাস্তায় দাঁড়িয়ে থাকে। কিন্তু আমার পাশে যে ভদ্রলোকটি দাঁড়িয়ে ছিল তার নামাজ এখনো শেষ হয়নি। কিন্তু আমাকে লোকজন বলল ভাই চলেন যাই। কিন্তু বললাম ভাই আপনারা যান আমি আসতেছি। তারা আবারো জিজ্ঞেস করল কেন আপনার নামাজ তো শেষ আমি এখন বলতেও পারতেছি না যে নামাজের পার্টিটা আমার ওই ব্যক্তির নামাজ শেষ না করলে আমি পার্টি নিয়ে কিভাবে বাসায় যাব। তাই সেই ভাবেই আমার ওই কথাটা মনে পড়ে গেল। যে মেয়েটির যদি গাড়ি সারাতে নাও পারি তাহলে আমার আমার টুলবক্সটি কিভাবে ফেরত চাই। তাই নিজের ইচ্ছা না থাকতো গাড়িটিতে আমি হাত দিলাম। আমার আবার সব সময় একটি অভ্যাস ছিল। কোন কাজ করার শুরুতেই আমি বিসমিল্লাহ পড়ে শুরু করতাম। কাজটি শুরু করতে গিয়ে একের পর এক ব্যাটারি দেখলাম পিলাক দেখলাম। কার্বুরেটর দেখলাম সবগুলোই দেখলাম ঠিকঠাক মত আছে। তাহলে গাড়িটির কি সমস্যা। এই বলে আমি ফ্লাপটি কাবার টান দিতেই দেখি ফ্লাট লুস আছে। প্ল্যাকটি ঠিকমতো পরিষ্কার করে কাবার টিপ দিয়ে আটকে দিল। তাকে বললাম তখন গাড়িটি স্টার দিন। সে বলল আপনি একটু দেখুন না ভাই। আমি বললাম আপনার গাড়ি আপনি দেখুন। ভিতরে যাওয়ার ব্যাপারে খুব অনিয়া প্রকাশ করল তার ভাব দেখে মনে হল। আমি এর ভিতরে আমার টুল বক্সের সব টুলস গুলো গুছাতে শুরু করলাম। আমি একপর্যায়ে তাকে জোর করে বললাম আপনি স্টার দিন। সে গাড়িটির দরজা খুলতেই তার পায়ের দিকে তাকিয়ে যাই আমি। তাকিয়ে দেখি তার পা অন্যদিকে ফেরানো। আমি বুঝতে পারি সে মানুষ না। এতক্ষণ ধরে সে মানুষের সদ্য ফেস ধারণ করেছিল। আমি ব্যাপারটি বুঝেও না বুঝার ভান করলাম। কারণ সাধারণত মানুষের পা থাকে একদিকে আর যিনিদের পা থাকে উল্টা। আমি বুঝেই দোয়া পড়তে শুরু করলাম। অমনি সে আমার দিকে তাকিয়ে রাগাম্বিত হয়ে গেল। এখন সেও বুঝতে পারল যে আমি যে ব্যাপারটা বুঝে গেছি। যে এগুলো ছিল নিশাত বাহানা। কিন্তু আমার সাহসের কমতি ছিল না বিধায়। সে এতক্ষণ পর্যন্ত আমার কোন কিছুই করতে পারেনি। তাই সে দ্রুত ঢুকে গাড়িটি স্টার দিল। গাড়িটি সে ওভার ব্রিজ ছাড়া অমনি অমনি উপরের দিকে ওভার ব্রিজের মত চালিয়ে গেল। হঠাৎ দেখি যে গাড়িটি আমার সামনে থেকে উধাও হয়ে চলে গেল। তখন আমি বুঝতে পারলাম যে এটি মানুষ ছিল না এটি ছিল জিন ভূত।