আচ্ছা শেষ পর্যন্ত দেশটা কাদের হাতে নিরাপদ?
আমার মনে হয় বাংলা সিনেমার পরিচালকদের হাতে।
আজ কয়েকদিন ধরে কাজের ফাঁকে ফাঁকে সালমান শাহ, শাবনুর, ফারুক, ববিতা, গোলাম মোস্তফা অভিনীত 'জীবন সংসার' সিনেমা দেখলাম। জীবন সংসার এর আগে সিনেমা হলে দেখেছিলাম। পার্বতীপুরের বিখ্যাত সিনেমা হল 'উত্তরা টকিজ' এ। সালমানের এই সিনেমাটা আমার সবচেয়ে প্রিয় ছিল।
সেটা এই সময়ে এসে কেমন লাগে সেটা দেখতে চাইছিলাম। বনফুলের 'পাঠকের মৃত্যু' এর সেই পাঠকের মত করে। সত্যি বলতে আগের সেই আবেগ না থাকলেও বেশ ভালো লেগেছে। সালমানের অভিনয় ও স্টাইল সেন্স সেই লেভেলের ছিল। শাবনুর, ববিতার অভিনয়ও দুর্দান্ত মানের। আর গোলাম মোস্তফার ভরাট কণ্ঠের জাদু সত্যি অন্য মাত্রার।
সিনেমা দেখার এর মধ্যে পরিচালক জাকির হোসেন রাজুর একটা ইন্টারভিউ চলে আসে ইউটিউবে। সেখানে জানতে পারলাম, এটি ছিল উনার প্রথম সিনেমা। সিনেমা শুরুর পর সালমানের সাথে তাঁর গ্যাঞ্জাম লাগে। পরে মিটমাট হয়ে যায়। পরিচালক রাজু সেখানে একটা কথা বলেন। 'এটা আমার জীবনের প্রথম সিনেমা, যদি ডুবি নিজের বুদ্ধিতে ডুবতে চাই, বাঁচলেও নিজের বুদ্ধিতে বাঁচতে চাই', অন্তত আফসোস থাকবে না।' রাজুর কথাটা ভালো লেগেছে।
এবার আসি আসল কথায়। দেশটাও যদি পরিচালকের কথা মত চলতো! সিনেমায় গোলাম মোস্তফারা ভুল করে, একটা সময় ভুল বুঝতে পেরে মাফও চায়। মাফ পেয়েও যায়। সিনেমার ভিলেনারা মারামারির সময় একজন একজন করে সামনে আসে, নায়ক বা নায়িকার ফাইটিং করতে সুবিধা হয়। এরকম ডিসিপ্লিন আমাকে মুগ্ধ করেছে। ভিলেনেরা যদি এরকম ডিসিপ্লিন হতে পারে, আমরা আম আদমিরা কেন পারবোনা।
গতকাল ছিল নিরাপদ সড়ক দিবস। সড়ক যারা ব্যবহার করি তাঁরা যদি ডিসিপ্লিন থাকতেন, সড়ক নিরাপদ হতে বেশি সময় লাগতো না। নিরাপদ সড়কের দায়িত্ব জাকির হোসেন রাজু, মালেক আফসারি, শহীদুল ইসলাম খোকন কিংবা দেলোওয়ার জাহান ঝন্টুর হাতে দিলেও মন্দ হয়না! নিরাপদ দিবস নিয়ে আলাপ করতে গিয়ে ইলিয়াস কাঞ্চনের কথা না বললে খুব অন্যায় হয়। আমার কাছে বাংলাদেশের সিনেমার একজনই নায়ক, তিনি ইলিয়াস কাঞ্চন। তিনি রুপালি পর্দা ফুড়ে এসে বাস্তবের নায়ক হয়েছিলেন। তিনি ক্যান্সারে আক্রান্ত। তিনি সুস্থ হয়ে উঠুন। নিরাপদ সড়ক চাই (নিসচা) আন্দোলন আরও গতিময় হোক।
সালমানের মৃত্যু কিংবা হত্যা নতুন মোড় নিয়েছে। আলোচনায় এসেছে সামিরা, আজিজ মোহাম্মদ ভাই, ডনেরা।
আমার আলাপও দীর্ঘায়িত হচ্ছে। সূর থাকতেই শেষ করা ভালো। অথচ আমি বরাবর বেসুরো। তারপরেও সহ্য করার জন্য ধন্যবাদ।