Posts

চিন্তা

মোন্তাজ চাজি, জেমস ও মহাজনের আলাপ

October 24, 2025

সাজিদ রহমান

164
View

মোন্তাজ চাজিকে ফোন দিয়েছি। খুশিতে নয়, ঠেলায় পড়ে।

কয়েক দিন ফোন দিছলেন। ধরতে পারিনি। আসলে ফোন ধরতে না চাইলে বহু বাহানা রেডি থাকে। ডান কিংবা বাম হাতের চেয়ে অজুহাত দ্রুততার সাথে কাজ করে।  আমি অবশ্য সত্যিকার অর্থে বিজি ছিলাম। চাজি সেটা বোঝতে চায় না। একে ওকে বলে বেড়াচ্ছে, আমার খুব ভাব হইছে। বাধ্য হয়ে কল দিলাম।

-চাজি, কেমন আছেন?

অল্প কথা বলে চুপ করে থাকি। চাজির ভাবগতিক বোঝার জন্য।

-আছু একরকম ছইল? তোমার #চিংকু দাদার গোড়োত আলছু এনা।

চিংকু দাদা ধনী মানুষ। এর ওর টাকা লাগলে ধার দেন। ফেরত দেয়ার সময় কিছু অতিরিক্ত টাকাও দিতে হয়। চিংকু দাদা আসলে মহাজন। সবাই ডাকে চিংকু মহাজন নামে।

-কেন চাজি?

-আর কননা বাহে ছইল, মোর বেটি #সুখী র খুব অসুখ। সুখী নামটা থোয়া ভুল হইছে। সারা বছর অসুখ। মোক দেখলে মানুষে হাসে। কও তো বেটা, মুই কী বুঝছুনু। ইংকা হইবে! চিংকু মহাজনের কাছে কিছু টাকা ধার নিবার আলছু। কয়টা টাকা দিবে সুদ আসলে ফেরতও দেয়া লাগবে। তা তোমরা ঘরে কী নিয়া ব্যস্ত?

- ৩ দিন ধরে জেমস (GEMS) শিখতেছি, চাজি।

- তায় নাকি? জেমস লোকটার গান মোক খুব ভালো লাগে। তোমার চাচির একটা চাচাতো বইন আছিল, মানে শালি আরকি। ওর নাম আছিলো কবিতা। ওক দেখলে মুই জেমসের "কবিতা তুই স্বপ্নচারিণী হয়া খবর নেইস না" গানটা কইতাম। তোমার চাচি খুব ক্ষেপী যাইত অবশ্য। তা বাহে, সেই জেমস বলে ৬১ বছর বয়সে বাপ হইল!! যা হউক, জেমস চেংড়ার পানিত ভালোয় জোর আছে!!  তা, ওমাক নিয়ে কী শেখোছেন? জেমস হবার চাওছেন নাকি? দুঃখের মধ্যেও হাসি পাওছে মোর।

-না চাজি, এইটা বিশ্বব্যাংকের একটা ট্রেনিং। দুর থেকে কাজ কাম দেখা শুনা করার উপায়।

- ওহ, তোমরা নিজেরা ফাঁকি দিয়া কাজের গোড়ত যাবান নান। আর উল্টা মাইনসের ভুল ধরবেন! আর তোমরা চাকরি করেন কখন? খালিতো শুনি টেননিং আর টেননিং। হামরা জানি তুই বড় ইন্জিনিয়ার। আসলে কী তুই পাশ করা ইন্জিনিয়ার? নাকি রাস্তার ধারের ইন্জিনিয়ারিং ওয়ার্কশপ পাশ মিস্ত্রি?  

-লাগে চাজি, ট্রেনিং লাগে। যত ট্রেনিং নিবেন তত কাজের সুবিধা হয়।

- উলা কথা নিজের কাছে থোন। আর দরকার হইলে ধুইয়া ধুইয়া পানি খান তোরা। ওর চাইতে হামার ছিটপাগলা #বেনজু ভালো। কওয়া শেষ হওয়ার আগে কাম করা শ্যাষ। আচ্ছা, ঐ যে কী নাম কইলেন... বিশ্বব্যাংক না ফ্যাংক... ওট ফির কী জিনিস?

-ও চাজি, বড় বড় রাস্তা, ব্রিজ, বিদ্যুৎ কেন্দ্র, হাসপাতাল বানানোর সময় সরকারের টাকা কম পড়লে বিশ্বব্যাংকের কাছে টাকা ধার নেয়।

-ও মানে ওটা বড় মহাজন! এই তো কথা!

-তা বলতে পারেন, চাজি।  এছাড়াও এডিবি, জাইকা সহ অনেক ডোনার আছে।

-তার মানে মোর মত তুইও মহাজনের বাড়িত ঘোরপাক খাওছিস। তাও ফির ৩ দিন ধরি! তোমার বিশ্বব্যাংকের চায়া তো হামার চিংকু মহাজন ভালো। ১ দিন আসলে টাকা দিয়ে দেয়। ওতো ঘোরপাক খাওয়া লাগে না। খালি সময় মত সুদে আসলে টাকা দিলে হইল। তা অবশ্য চিংকুর সুদের হারটা বেশি।

-আচ্ছা চাজি, এখন রাখি। পরে কথা হইবে।

- তা শমন পাঠাইছে নাকি বাহে!! যাও যাও, না হইলে ফির লাল দালানের ভাত খিলবার পারে। ☺️😄

Comments

    Please login to post comment. Login