হঠাৎ সে নিজেকে মিছিলের মাঝে আবিষ্কার করে। কিন্তু মিছিলে সে কি করছে? শত শত মানুষ। কার যেন বিচার চাই, ফাসি চাই। কিন্তু এসব বিচার দিয়ে কি হবে? সে কিছুই মনে করতে পারছেনা। বুঝতেও পারছেনা কিছুই। দম বন্ধ হয়ে আসছে। তাই রাস্তার পাশে রাখা একটা লম্বা টেবিলে বসে পড়ে। ধীরে ধীরে মিছিল চলে যায়। কিন্তু সে কিছুতেই কিছু মনে করতে পারছেনা।
অনেকক্ষণ বসে থেকে মাথাটা ঠান্ডা করলো।
একটু সামান্য দূরে আরেকটা টেবিলে একটা ছেলে আরেকটা মেয়ে বসেছে। মেয়েটাকে চেনা মনে হচ্ছে। কিছু বলবে ভাবছিল, তবে থেমে গেল। কারণ মেয়েটা যদি আসলেই তার পরিচিত না হয়?
শুধু শুধু গণধোলাই খেতে হতে পারে।
সে তার নিজের নামটাও মনে করতে পারছেনা। মাথা একদম খালি হয়ে গেছে। কোথায় থাকে বা বাসার ঠিকানা, কিছুই মাথায় আসছেনা।
অনেক চিন্তা করার পর মনে হলো তার নাম মঞ্জু। পরক্ষণেই আবার খেয়াল করলো, পাশে বসে দুটো ছেলে কথা বলছে। তাদের একজন আরেকজনকে মঞ্জু বলে ডাকছেম সে পরিস্কার হয়ে গেল যে তার নাম মঞ্জু না। কি আর করবে?
ভেবেছিল একটু শান্ত হয়ে তারপর কোন কিছু মনে করবে। তবে কেমন যেন একটা অস্বস্তি লাগছে। কেউ একজন যেন তাকে দৌড়াচ্ছে পেছন থেকে। কিছু না ভেবেই সে দৌড়াতে শুরু করে। কোথায় যাচ্ছে তা জানেনা। পেছনে কে আছে তাও দেখার ইচ্ছে করেনি। একমনে দৌড়াচ্ছে তো দৌড়াচ্ছে। অনেকটা দৌড়ানোর পর সে হাপিয়ে উঠেছে। এবার একটু সামান্য দাঁড়িয়ে দম নিল৷ পেছন ফিরে দেখল, যে এতক্ষণ তাকে দৌড়াচ্ছে সেও ক্লান্ত। ওই ব্যক্তি চেহারা অবিকল তার মতোই। তাকে ভালো করে না দেখেই সে আবার দৌড়াতে শুরু করলো। অত্যন্ত দ্রুত দৌড়াতে লাগলো যেন পিছনে পড়ে থাকা ব্যক্তির থেকে অনেক দূড়ে সড়ে যেতে পারে। অনেক দৌড়ানোর পর খেয়াল করলো, সেই ব্যক্তিটা তার আরো কাছে চলে এসেছে। সে আবার দৌড় শুরু করলো। এভাবেই নিজ থেকে দূরে পালিয়ে যাওয়ার জন্য সে নিরন্তর ব্যর্থ চেষ্টা করে চলেছে।।