এলাকায় কিশোর অপরাধ খুব বেড়ে গেছে। কিশোর গ্যাং বেড়ে গেছে। সারাদিন স্কুল পড়ুয়া ছেলেরা মারামারি করে বেড়াচ্ছে। কিছু ছেলে তো আবার অস্ত্র নিয়ে দাপিয়ে বেড়াচ্ছে এলাকা। উঠতি নেতারা আবার এদের আশ্রয়ও দিচ্ছে। প্রয়োজনে ড্রাগও সাপ্লাই দিচ্ছে। তাই দিন-দুপুরে নেতার পাওয়ারে ছেলে-বুড়ো সবাইকে এরা অস্ত্র হাতে ভয় দেখাচ্ছে। এমনিতেই ছোট দেশে এত বেশি মানুষ বসবাস করে। এদেশের জন্য এটা একটা বড় সমস্যা।
টিভিতে খবরে দেখাচ্ছে, কিশোর গ্যাং এর ১৪জন সদস্য ধরা পড়েছে৷ কিন্তু কালকেই তো এদের ছেড়ে দিবে। কোন বড় নেতা ফোন করলেই হবে। সজিব এর বাবা খবর দেখে নানা কথা বলছিলেন। সজিবকে জিজ্ঞেস করলো, তার ছোট ভাই কোথায় আছে। সজিব জানে, তার ছোট ভাইও এদের সাথে কম বেশি উঠাবসা করে। একেবারে অপরিচিত হয়েও এলাকায় থাকা যায় না।
সজিবের বাবা বললেন,"এই যে ছেলে-পেলেরা কিশোর গ্যাং বানাচ্ছে, এখন করণীয় কি?"
সজিব ভেবে বললো, "আমরা কি করবো? আমরা কিছু করতে গেলে ওরা আমাদের জবাই করবে। দিনের বেলায় অস্ত্র নিয়ে ঘুরে বেড়ায় ওরা। কেউ কিচ্ছু বলার সাহস পায়না।"
সজিবের বাবা বললেন, "মা-বাবাও অনেক ক্ষেত্রে দায়ী। অনেক মা-বাবা ছেলেরা এমন বখে গেলে তাকে নিয়েও গর্ব করে। মানুষকে ভয় দেখায়।"
সজিব জানালো, তার ছোট ভাই খেলার মাঠ না থাকায় অনেক দূরে যায় খেলার জন্য। তার মতে পর্যাপ্ত খেলার মাঠ না থাকায় এসব আরো বেশি বেড়ে যাচ্ছে।
তার বাবা তার সাথে একমত হলো।
অনেক কারণের মাঝে এটাও একটা কারণ যা সবাই হয়ত এড়িয়ে যাচ্ছে। সব খেলার মাঠা বড় বড় নেতারা দখল করে নিয়েছে। এখন সেখানে উন্নয়ন হচ্ছে।
সজিব বললো,"স্কুল-কলেজ-ইউনিভার্সিটি, এদের কারো তেমন খেলার মাঠ নেই। যাদের আছে তারা আবার বাউন্ডারি দিয়ে রেখেছে। বিকাল হওয়ার আগেই তালাবদ্ধ করে রাখে। এমনকি ছুটির দিনগুলোতে তো সারাদিনই তালাবদ্ধ থাকে। এমন অবস্থায় খেলাধুলার সুযোগ না থাকায় ওরা আরো বিগড়ে যাচ্ছে।"
ওর বাবা বললেন," খেলাধুলা করার সুযোগ পেলে ওরা মেয়ে নিয়ে পার্কে গিয়ে বসে থাকতো না।"
সজিব বললো,"ছুটির দিনে ঢাকার অনেক স্কুল-কলেজ -ইউনিভার্সিটিতে নানা প্রকারের চাকরির ওবং প্রফেশনাল পরীক্ষা। ফলে তালাবদ্ধ থাকে।"
ওর বাবা বললেন,"খেলাধুলা না করলে তো ভবিষ্যত প্রজন্ম অলস হয়ে যাবে৷ এই যেমন সারাদিন মোবাইল নিয়ে বসে থাকে।"
সজিব বললো,"ভবিষ্যৎ প্রজন্ম পঙ্গু হয়ে যাবে। চারদিকে ডায়াবেটিসসহ নানা প্রকারের অসুখ বিসুখ যেমন শিকড় গেড়ে বসছে। যে যুবক আজকে খেলাধুলা করছেনা, সে চল্লিশ বছর বয়সের আগেই দুর্বল হয়ে পড়বে হয়ত।"
কথাগুলো ওদেরকে খুবই ভাবায়। হয়ত সবাইকে ভাবায় না। তাই তো মাঠের সংখ্যা কমে আসছে দিনকে দিন। আসলে এই ছেলেরা খেলার মাঠে চলে গেলে তো আর এদের ঢাল হিসেবে ব্যবহার করে মাঠ দখল করা যাবেনা। সেখানে শপিং মল বানানো যাবেনা।