বর্তমান যুগে প্রযুক্তি ও ব্যস্ততার ভিড়ে আমরা যতই উন্নত হচ্ছি ততই দূরে সরে যাচ্ছি প্রকৃতি থেকে। অথচ সুস্থ থাকার সবচেয়ে সহজ ও নিরাপদ পথটি লুকিয়ে আছে এই প্রকৃতিতেই।
প্রাকৃতিকভাবে সুস্থ থাকা মানে এমন জীবনযাপন করা । যেখানে শরীর মন ও পরিবেশের মধ্যে একটি ভারসাম্য বজায় থাকে।
প্রথমেই বলতে হয় সঠিক খাদ্যাভ্যাসের কথা। আমাদের দেহ যেমন প্রকৃতির অংশ তেমনি প্রকৃতির ফল শাকসবজি শস্য ও পানি আমাদের শরীরের প্রকৃত জ্বালানি। প্রতিদিনের খাবারে রাসায়নিক বা প্রক্রিয়াজাত খাবার বাদ দিয়ে স্থানীয় ও তাজা ফলমূল অন্তর্ভুক্ত করা উচিত।
যেমন গাজর, বিট, লাউ, কলা, পেঁপে, এবং মৌসুমি ফল শরীরের জন্য দারুণ উপকারী। এসব খাবারে রয়েছে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট, যা রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায় এবং শরীরকে ভিতর থেকে শক্তিশালী রাখে।
প্রাকৃতিকভাবে সুস্থ থাকতে পর্যাপ্ত পানি পান করাও খুব জরুরি। বিশুদ্ধ পানি শরীরের বিষাক্ত উপাদান বের করে দেয়, ত্বক পরিষ্কার রাখে এবং হজমে সহায়তা করে। তাই প্রতিদিন অন্তত ৮–১০ গ্লাস পানি পান করা উচিত।
এরপর আসে নিয়মিত ব্যায়াম ও পর্যাপ্ত ঘুমের গুরুত্ব। প্রকৃতির সঙ্গে সংযোগ স্থাপনের সবচেয়ে সহজ উপায় হলো সকালে হাঁটা বা হালকা ব্যায়াম করা।
সূর্যের আলো শরীরে ভিটামিন ডি তৈরি করে। যা হাড় ও রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতার জন্য অপরিহার্য। আর রাতে পর্যাপ্ত ঘুম শরীরকে পুনরুজ্জীবিত করে মনকে শান্ত রাখে।
মানসিক স্বাস্থ্যের যত্নও সমান গুরুত্বপূর্ণ। দিনভর চাপ দুশ্চিন্তা বা সামাজিক ব্যস্ততা থেকে কিছুটা সময় প্রকৃতির সান্নিধ্যে কাটানো উচিত।
সবুজ গাছ খোলা বাতাস কিংবা পাখির ডাক এসব ছোট ছোট জিনিস আমাদের মানসিক প্রশান্তি ফিরিয়ে আনে। মেডিটেশন বা শ্বাস-প্রশ্বাসের অনুশীলন মনকে স্থির রাখতে সাহায্য করে।
সবশেষে বলা যায় প্রাকৃতিকভাবে সুস্থ থাকা কোনো কঠিন কাজ নয় । বরং এটি আমাদের নিজের প্রতি একটি দায়িত্ব।
প্রকৃতি যেমন আমাদের জীবন দিয়েছে তেমনি সে আমাদের সুস্থ রাখার উপকরণও দিয়েছে। কেবল সচেতনভাবে জীবনযাপন করলেই আমরা ফিরে পেতে পারি সেই স্বাভাবিক নির্ভার সুস্থ জীবন।