শত বছর আগে ( পর্ব-০৩) মোঃ নাহিদ হোসাইন শত কষ্ট মনের মাঝে বলিযে চাচা তরে, বাজান বুঝি চাষ করতো তোমার মতো করে। করিম ভাই নাথাকিলেরে বাঁচা যে ছিল দায়, সুনার ধান ফলতো বাছা এই জমিতে হায়। গোয়াল ভরা ছিলরে গরু গোলা ভারা যে ধান, তার দ্বারা বাচিয়াছেরে এই মোদের জান। আমার ঘরে নতুন বউ ভাবির কুলে তুই, সেই সুখের কথা যে আমি কেমন করে কই। সে আনন্দ বেশি দিননা আট মাসযে ছিল, কলেরা রোগে মা-বাবা তর কবর ঘরে গেল। তোর চাচির গর্ভে ছিল আমার মেয়ে আঁখি, মেয়ে জন্ম দিতে গিয়াযে রহিমা দিল ফাকি। দশ মাসের শিশু তুইরে এক দিনের আখি, তোদের আমি বুকে লইয়া একলা ঘরে থাকি। গাভিটা ছিল তোদের মাযে ধুদ অনেক দিতো, তার বাচ্চা অনাহারেতে কষ্ট সেউ পেতো। রহিম চাচা বলিয়া কথা চোখে এলারে জল, নয়ন মিয়া এই সুনিয়া হারালো গার ভল। তিব্র রোদে নয়নের যে মাঠেতে বুক ফাটে, গামছা হাতে জল লইয়া আসলো আখি মাঠে। মুছিলো আখি নয়নের যে মুখের কালো ঘাম, আর কয় সে রোদে পুইরা করা যে কত কাম। তাতে পান্তা মরিচ ভাত ছাড়া জুটেনা কিছু, পেটটি ফাকা রাখাই তবু ছোট যে মোর পিছু। এমন কথা বলনা তুমি চাচা পারেনা একা, তাইতো আমি করি যে কাম পেট থাকেনা ফাকা। আর শুনিতে চাইনা আমি পইরা মরো মাঠে, করতে যাব গোসল আমি তালপুকুর ঘাটে। এই সময় খবর এল পূর্ব পাড়া থেকে, মতি মিয়ার বাচ্চা মেয়ে সাপে কেটেছে তাকে। দৌড়ে যায় যে সকালে হায় মতি মিয়ার বাড়ি, চকির তলে রাখা ছিলয়ে শুন্য এক হাড়ি। সেই হাড়িতে সাপ ছিলা যে জানিত কেগো হায়, হাত দিয়াছে মেয়ে সেথায় কাঁদে টুনির মায়। দশটি উজা জারলো তাকে বিষ হলোনা পানি, মেয়ে তাহার হইয়া গেল কবর ঘরে রাণী। সারাগ্রামে কান্নার যে রোল পইরা যায়, এই নিয়ে যে দশ জনকে সাপে কাটলো হায়। মোনাজাত যে করে সকালে বিধির দরগায়, রক্ষা কর মাউলা তুমি রক্ষা কর হায়। মুক্তি করে দাউগো খোদা পরম দয়াময়, খোদা তালার দয়ায় হায় মুক্তি যেগো হয়। |
31
View