আজকে এক ছোট ভাইয়ের সাথে দেখা হয়। চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সমাজত্ত্ব বিষয়ে স্নাতক (সম্মান) ও স্নাতকোত্তর পাশ করা। গত পাঁচ আগে ইসলামি ব্যাংক বাংলাদেশ লিমিটেড- এ অফিসার (জেনারেল) হিসাবে যোগদান করেছিল। জীবনের সবচেয়ে উৎপাদনক্ষম পাঁচটি বছর যে প্রতিষ্ঠানে শ্রম দিয়েছিল, দুষ্ট রাজনীতির বলি হিসাবে বাধ্যতামূলক অবসরে পাঠায় ঐ প্রতিষ্ঠান। আমাদের দেশের কর্মসংস্থানের সুযোগ বরাবরই সীমিত। সরকারি খাতে চাকরিতে প্রবেশের ক্ষেত্রে বয়স গুরুত্বপূর্ণ ফেক্টর হিসাবে কাজ করে। এমন পরিস্থিতিতে চাকুরির বয়স গত হয়ে যাওয়া লোকদের কাজ থেকে বাধ্যতামূলক অবসরে পাঠানো কত টুকু মানবিক??
অক্ষরজ্ঞান সম্পন্ন ও কম্পিউটার চালাতে সক্ষম কোন ব্যক্তিকে আমাদের দেশে প্রচলিত ব্যাংকিং খাতে সেবাপ্রদানের উপযুক্ত করতে কত দিন প্রশিক্ষণের আওতায় রাখা প্রয়োজন? তারা কি এই পাঁচ বছরেও এই খাতে কাজ করার উপযুক্ত হয়ে উঠে নাই? তা-ই যদি হয়ে থাকে, তাহলে গত পাঁচ বছর তারা কি ভাবে ঐ চাকুরীতে ঠিকে ছিল? গত পাঁচ বছরে কি তাদের কর্ম সম্পাদন মূল্যায়ণ করা হয় নাই? তাদের কর্ম সম্পাদন মূল্যায়ণ রিপোর্ট যদি সন্তুষজনক না হয় তাহলে তাদেরকে কেন অবহিত প্রদান করা হয় নাই?
ধরে নিলাম, গত পাঁচ বছর বা তারও বেশি সময় ধরে নিয়োগপ্রাপ্তরা অযোগ্য ছিল। তাহলে, ইসলামি ব্যাংকের মত বাণিজ্যিক ব্যাংক কিভাবে প্রতিযোগিতামূলক বাজারে সেবা প্রদানে করে মুনাফা অর্জনে সক্ষম হয়েছিল?
আয়ের সাথে ব্যয়ের সম্পর্ক হল ধনাত্মক। আয় বাড়ার সাথে মানুষের চাহিদা বাড়ে এবং তা একটি চলমান প্রক্রিয়া। বিলাসী পণ্যের চাহিদা নিয়ন্ত্রণ করা গেলেও নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যের চাহিদা অনিয়ন্ত্রিত এবং বেঁচে থাকার তাগিদে অপরিহার্য। ইসলামি ব্যাংক এর বাধ্যতামূলক অবসরে পাঠানো কর্মীদের বেঁচে থাকার অবলম্বন চাকরিটা কেড়ে নেওয়া মানবতার চরম অবক্ষয় ও হিংসাত্বক রাজনীতির প্রতিফল।
যে দেশে চাকরি পাওয়ার ক্ষত্রে বয়স গুরুত্বপূর্ণ ফেক্টর, সেখানে চাকরির বয়স গত হয়ে যাওয়া কর্মীদের ছাটাই করা পাতের ভাত কেড়ে নেওয়ার শামিল। যে রাজনীতির সাথে মানবিকতার সম্পর্ক নেই, তা পঙ্গু। পঙ্গু রাজনীতি নিয়ে সমাজ বিনির্মান ও সুশাসন প্রতিষ্ঠা মাতালের প্রলাপ ব্যতীত কিছুই নই।
রক্তে উত্তরাধিকারের জন্ম হলেও ঘামে সত্ত্বাধিকার প্রতিষ্ঠিত হয়। সেটা মানবিকতা নয়, ঐ সকল অধিকার, যা তাদের ঘামের বিনিময়ে অর্জিত। যা থেকে বঞ্চিত করে তোমার প্রতি জুলুম করা হয়েছ!