বই-পুস্তকের ভাষা বাদ দিয়ে একেবারে সহজ কথায় বলি। স্ফীতি শব্দের অর্থ বৃদ্ধি বা বেড়ে যাওয়া। তাহলে মুদ্রাস্ফীতি মানে কী দাঁড়ালো, মুদ্রা বেড়ে যাওয়া।
কোনও বিশেষ সময়ে আপনার পকেটে মুদ্রা বা টাকা বেড়ে যাওয়াটাই হলো মুদ্রাস্ফীতি।
ধরুন, কোনও একজন শ্রমিক আগে দৈনিক মুজুরি পেতেন ৩০০ টাকা, কিন্তু সেই একই কাজের জন্য পাচ্ছে ৬০০ টাকা। তাহলে কী হলো, তার পকেটে টাকার পরিমাণ বাড়লো। এই ব্যক্তির মতো অন্য সব কর্মজীবীর পকেটেও আনুপাতিক হারে টাকা বেড়েছে। এবার সবাই যখন বাজারে যাবে, তখন প্রতিটা ব্যক্তিই চাইবে নিজের পছন্দের জিনিসটা কিনতে। অথবা আগে যে পরিবার একটু কম খাওয়া-দাওয়া করতো তারা এবার খাওয়ার পরিমাণ বাড়িয়ে দেবে। এভাবে কয়েকদিন চলার পর দেখা যাবে, আগে যে পরিমাণ পণ্য দিয়ে চাহিদা পূরণ করা যেতো, তা দিয়ে এখন আর যাচ্ছে না।
আরও স্পষ্ট করার জন্য একটা উদাহরণ দিই, ধরুন আগে একটা বাজারে দৈনিক ১০০ কেজি শিম বেচাকেনা হতো। কিন্তু হঠাৎ করেই দেখা গেল, মানুষ শিম বেশি কিনছে। ফলে বাজারের শেষের দিকে যারা আসবে তারা দেখবে শিম কম কিন্তু ক্রেতা বেশি। যখন ক্রেতা বেশি থাকবে কিন্তু পণ্য থাকবে কম, তখন স্বাভাবিকভাবেই দাম বেড়ে যাবে। কারণ, বাজার মানেই প্রতিযোগিতার ভিত্তিতে নির্ধারিত দামে পণ্য কেনাবেচার জায়গা। ফলে পরদিন থেকে ওই বাড়তি দামেই শিম বিক্রি শুরু হবে। এভাবে পণ্যের দাম বেড়ে গেল। অর্থাৎ, মূল্যস্ফীতি হলো।
তাহলে প্রথম ঘটনা, মুদ্রাস্ফীতি বা মানুষের পকেটে টাকা বেড়ে গেল।
দ্বিতীয় ঘটনা, আগে বাজারে যে পরিমাণ জিনিস ছিল, এখনও তাই আছে। অর্থাৎ জিনিসপত্রের সরবরাহ বাড়েনি। তৃতীয় ঘটনা, চাহিদা বাড়ায় জিনিসপত্রের দাম বেড়ে গেল, অর্থাৎ মূল্যস্ফীতি হলো।
সবশেষে বলা যায়, মুদ্রাস্ফীতি বা মানুষের পকেটে টাকা বেড়ে যাওয়ার কারণে মূল্যস্ফীতি হয় বা পণ্যের দাম বেড়ে যায়। আশা করি, একেবারেই সাধারণভাবে বুঝতে পেরেছেন।