অংশ ১: প্রথম আলো ও অন্ধকারের ছায়া
নীলয় ছিল এক গ্রামের ছেলে, যার হাসি আর কৃতজ্ঞতার চোখে ভরা ছিল। ছোটবেলা থেকেই সে স্বপ্ন দেখত—বড়লোক হওয়ার, শহরের উজ্জ্বল আলোর মাঝে নিজের পরিচয় গড়ার। গ্রামের সবাই তাকে চেনত, তার বুদ্ধি, তার মায়ার ছাপ। কিন্তু জীবনের পথ কখনও সরল হয় না।
নীলয়ের গ্রামের পাশেই বসবাস করত রায়না। রায়নার চোখের সৌন্দর্য আর সরলতার মধ্যে যেন এক শান্তি লুকিয়ে ছিল। গ্রামের হাটে যখন নীলয় তাকে প্রথম দেখল, মনে হলো যেন সময় থেমে গেছে। রায়নার হাসি তার মনে এক অজানা আনন্দের ঝড় তুলেছিল। তাদের বন্ধুত্ব ধীরে ধীরে ভালোবাসায় রূপ নিল। তারা একে অপরের সঙ্গ ছাড়া দিন কাটাতে পারত না।
কিন্তু, নীলয়ের জীবনে ঢুকে পড়ল শহরের একটি বন্ধুর প্রলোভন। শহরের জীবনের চকচকে দুনিয়ায় কিছুতেই নিজেকে আকর্ষণীয় মনে করানো সম্ভব হবে না—এই ভেবেই সে প্রথম ধাপে নেমে পড়ল নেশার পথে। শুরুটা ছিল ছোটখাটো—সিগারেট, মাদক—কিন্তু দ্রুত তা বেড়ে গেল।
নীলয় যখন মাদক ও জুয়ার দিকে ধাবিত হচ্ছিল, তখন রায়না তার সতর্কবার্তা দিয়েছিল। “নীলয়, তুমি এমন পথে গেলে সব কিছু হারাবে। আমি চাই না তুমি নিজের জীবন ধ্বংস করো।” কিন্তু নীলয়ের কুড়ানো অহংকার এবং শহরের বন্ধুর প্রলুব্ধি তাকে শোনার সুযোগ দেয়নি।
গ্রামের মানুষ দেখতে লাগল নীলয়ের পরিবর্তন। যে ছেলে সবাইকে হাসি দিয়ে শুভেচ্ছা জানাত, সে এখন হঠাৎ গোপনে বেরোচ্ছে, সন্ধ্যার পর কেবল শহরের আলোয় হারিয়ে যাচ্ছে। রায়না তার জন্য দুঃখ পেয়েও আশাবাদ হারাচ্ছিল না। সে বিশ্বাস করত, নীলয় একদিন ঠিক হয়ে আসবে।