নাসির অত্যন্ত চালাক ছেলে। কথার জালে ফাসাতে চায়, তাই বিতর্কে যেতে আগ্রহী নই আমি। সে মাঝেমধ্যে এমনভাবে প্রশ্ন করে যে উত্তর দিতে ঝামেলা হয়।
সে জিজ্ঞেস করলো,"মেয়েদেরই কেন পর্দা করতে হয়? ছেলেদের কেন নয়?"
বললাম,"ইসলামে প্রথম হিজাব পুরুষের উপর। তাদের চোখের হিফাজত করার কথা বলা হয়েছে।তাছাড়া, পুরুষকেও শালীন পোশাক পড়তে বলা হয়েছে। তারপর এসেছে নারীর উপর পর্দার কথা। হয়ত তাদের পর্দার ধরণটা আলাদা।"
সে আবার জিজ্ঞেস করলো,"ভাই। কোরান বা হাদিসে কোথায় মেয়েদের বোরকা বা হিজাব পড়ার কথা বলা হয়েছে? দেখান আমাকে?"
আমি উলটো জিজ্ঞেস করলাম,"কেন এই দুটি শব্দ কোরান বা হাদিসে থাকতেই হবে?"
সে বললো,"নেই বলেই তো অনেক মুসলিম নারী বোরকা বা হিজাবের বিপক্ষে কথা বলে। আপনার কাছে প্রমাণ থাকলে দেখান।"
বললাম,"কোরআন ও হাদিসে সরাসরি বোরকা বা হিজাব শব্দ নেই। তবে যে রকমের ব্যাখ্যা তার সাথে বোরকা বা হিজাব মিলে যায়।"
সে বললো,"এটা বানিয়ে বললেই তো হয়ে যাবেনা। অন্তত একটা উদাহরণ দেন।"
বললাম," কোরানের সূরা আহযাবে (৩৩:৫৯) বলা হয়েছে "হে নবী! আপনি আপনার স্ত্রীগণকে, কন্যাগণকে এবং মুমিনদের স্ত্রীগণকে বলুন, তারা যেন তাদের চাদর বা জিলবাব তাদের শরীরের উপর টেনে নেয়। এতে তাদের চেনা সহজ হবে এবং তাদের উত্ত্যক্ত করা হবে না।"
তো, এখানে 'জিলবাব' বা চাদর দিয়ে শরীর ও চেহারা ঢাকার নির্দেশনা রয়েছে।
এরপর সূরা নূর এ (২৪:৩১) বলা হয়েছে,"মুমিন নারীদের বলুন, তারা যেন তাদের দৃষ্টি নত রাখে এবং তাদের লজ্জাস্থানের হিফাজত করে, নিজেদের সৌন্দর্য প্রকাশ না করে, তবে যা সাধারণত প্রকাশ পায় তা ব্যতীত এবং তাদের ওড়না দিয়ে যেন তাদের বক্ষদেশ ঢেকে রাখে।"
সে আবার প্রশ্ন করলো,"আপনারই বলেন যে কোরানে সবকিছু আছে। তাহলে বলেন, কেন বোরকা শব্দটি নেই?"
উত্তর দিলাম,"বোরকা শব্দটি কোরানে থাকলেই বরং ঝামেলা হতো। তখন পর্দা বলতে বোরকাই নির্দিষ্ট হয়ে যেত। এখন সেটা উন্মুক্ত করা আছে৷ কেউ শালীন পোশাক পড়লেই সেটাকে পর্দা বলা যায়। তাছাড়া সময়ের সাথে সাথে বোরকার নাম বদলে যেতে পারে বা ডিজাইন বদলে যেতে পারে। কিন্তু মূল উদ্দেশ্য কি হবে সেটাই কোরান বা হাদিসে স্পষ্ট করা আছে।"