অধ্যায় এক: হঠাৎ দেখা
বিকেলের আকাশটা ছিল অদ্ভুত রকম মেঘলা। শহরের কোলাহল ভেদ করে নেমে আসছিল হালকা বৃষ্টি। ঠিক সেই সময়টাতেই ওর সঙ্গে আমার প্রথম দেখা। বাসস্ট্যান্ডের পুরোনো ছাউনির নিচে দাঁড়িয়ে ছিল সে—চুলে বৃষ্টির ফোঁটা, চোখে অচেনা এক শান্তি। আমি তাকিয়ে ছিলাম, আর মনে হচ্ছিল এই দেখা যেন কাকতালীয় নয়, অনেক দিনের অপেক্ষার শেষ অধ্যায়।
অধ্যায় দুই: কথোপকথনের শুরু
পরের দিন আবার দেখা হলো। একই জায়গা, একই সময়। এবার সে নিজেই কথা বলল। সাধারণ কিছু কথা—পড়া, শহর, বৃষ্টি। কিন্তু সেই সাধারণ কথার মধ্যেই লুকিয়ে ছিল অদ্ভুত এক টান। আমরা দু’জনই বুঝতে পারছিলাম, অচেনা থেকেও কেউ কেউ খুব আপন হয়ে যায়।
তিনঅধ্যায় : নীরব ভালোবাসা
দিন গড়াতে লাগল। নিয়মিত দেখা, চা খাওয়া, নীরবে হাঁটা। কেউ কাউকে কিছু বলেনি, তবু চোখের ভাষায় সব বলা হয়ে যেত। বৃষ্টিভেজা বিকেলে তার পাশে দাঁড়িয়ে আমার মনে হতো—এই নীরবতাই সবচেয়ে সুন্দর প্রেম।
অধ্যায় চার: দূরত্ব
হঠাৎ করেই সে একদিন জানাল, তাকে শহর ছেড়ে যেতে হবে। কথাটা শুনে বুকের ভেতর অজানা এক শূন্যতা তৈরি হলো। শেষ দেখা’র দিন বৃষ্টি নামেনি, কিন্তু আমাদের চোখ ভিজে ছিল। বিদায়ের সময় সে শুধু বলেছিল, “কিছু অনুভূতি দূরত্ব মানে না।”
অধ্যায় পাঁচ: আবার ফেরা
অনেক দিন পর, এক বিকেলের বৃষ্টিতে আবার সেই বাসস্ট্যান্ড। আমি একা দাঁড়িয়ে ছিলাম। হঠাৎ পরিচিত কণ্ঠ—“এখনো কি বৃষ্টি ভালোবাসো?”
আমি ফিরে তাকালাম। সে দাঁড়িয়ে ছিল, আগের মতোই। বুঝলাম, কিছু ভালোবাসা কখনো শেষ হয় না—শুধু একটু অপেক্ষা করে।
অধ্যায় ছয়: স্মৃতির দিনগুলো
সে ফিরে আসার পর আমাদের সময় যেন নতুন করে শুরু হলো। প্রতিটি দিন ভরে উঠল গল্পে, হাসিতে, আর না বলা অনুভূতিতে। পুরোনো স্মৃতিগুলো নতুন রঙ পেল। আমরা দু’জনেই বুঝতে পারছিলাম—এই ফিরে পাওয়া সময়টুকু খুব যত্নে রাখতে হবে।
অধ্যায় সাত: অজানা ভয়
ভালোবাসার মাঝেও ভয় থাকে। আমার ভয় ছিল—আবার যদি হারিয়ে যায় সে। তার ভয় ছিল—ভালোবাসার ভার যদি আমি নিতে না পারি। তবু আমরা চেষ্টা করছিলাম ভয়কে জয় করতে, একে অপরের হাত শক্ত করে ধরে।
অধ্যায় আট: স্বীকারোক্তি
এক সন্ধ্যায় নদীর ধারে বসে সে হঠাৎ বলল, “আমি তোমাকে ভালোবাসি।” কথাগুলো এত সহজ, এত গভীর ছিল যে আমি কিছুক্ষণ চুপ করে রইলাম। তারপর বললাম, “আমি অনেক আগেই ভালোবেসে ফেলেছি।” নদীর জলে তখন চাঁদের আলো কাঁপছিল।
অধ্যায় নয়: প্রতীক্ষা
ভালোবাসা শুধু পাওয়া নয়, অপেক্ষাও। কিছু পরিস্থিতি আমাদের আবার আলাদা করে দিল, তবে এবার বিদায়ের সঙ্গে ছিল প্রতিশ্রুতি। আমরা জানতাম—এই অপেক্ষার শেষ আছে।
অধ্যায় দশ: চিরন্তন বৃষ্টি
বছর ঘুরে আবার সেই বৃষ্টি। একই বাসস্ট্যান্ড, একই শহর। কিন্তু এবার আমরা দু’জন একসঙ্গে। বৃষ্টি নামলে এখন আর একা লাগে না। কারণ কিছু মানুষ বৃষ্টির মতো—একবার ভিজিয়ে দিলে সারাজীবন ভেজা রাখে।
সমাপ্ত