গ্রামের কোন কপোত-কপোতী যখন তাদের ছোট্ট নিকুঞ্জে ভালবাসার শুদ্ধতম আবেগে বিমোহিত তখন তাদের চারদিক জুড়ে কেবলি রাত্রিরই নিঃসঙ্গতা, শব্দহীন আত্মস্তুতি। কখন কোন সময়ের অগোচরে নিবিড় রাত্রির গাঢ় অন্ধকার ফুঁড়ে পূর্ণ একখানা চাঁদ জেগে উঠেছে সীমাহীন আকাশে সেদিকে তাদের খেয়ালই নেই।
কোন এক সময় অন্ধকার ফুঁড়ে আসা জ্যোৎস্নার খানিকটা অংশ কপোতীর গাল ছূঁয়ে যেতেই তার স্বামীর চোখ পড়লো জানালা পেরিয়ে আকাশের ওপর। যার গায়ে ভর করে দাঁড়িয়ে রয়েছে প্রকান্ড এক চাঁদ। অপূর্ব! ভয়াবহ এই সৌন্দর্য্য। সে চোখ নামাতে পারছে না। কেননা, পূর্ণ চাঁদের আলো’কে অবহেলা করা সম্ভব নয়।
এদিকে তার প্রেয়সীর এতবড় মুখখানা এতটুকু হয়ে যায় স্বামীর এই অদ্ভুত আচরণে। কোন এক ঘোরের মধ্যে সে তাই জ্যোৎস্নাকে সম্পূর্ণ উপেক্ষা করে জানালাটা বন্ধ করে দেয়। ততক্ষনাৎ সমস্ত ঘর জুড়ে নেমে আসে বিস্তির্ণ অন্ধকার। সেই অন্ধকারে সে তার স্বামীর ম্লান হাসিটুকুও দেখতে পায় না।
এদিকে সে খুশি মনে স্বামীর পাশে এসে বসে। কেননা, জ্যোৎস্নাকে অধিকার করার একমাত্র পথ এই জানালাটি এখন বন্ধ। আর এমনি করেই বাইরের এই পূর্ণ চাঁদ, চাঁদের সেই মায়াবী জ্যোৎস্না শূন্য ও অসহায় হয়ে পড়ে থাকে তাদের সেই ছোট্ট নিকুঞ্জ জুড়ে বসা অন্ধকারের মধ্যে।