দাদা মুরুব্বি মানুষ, তিনি রুমনের উপর খুব রেগে আছেন। রুমন তার ছেলের নামের শুরুতে মোহাম্মদ ব্যবহার করেনি। আবার মেয়ের নামের সাথে মোসাম্মত, খাতুন, বেগম ইত্যাদি কিছুই ব্যবহার করেনি।
রুমন দাদাকে বুঝিয়ে বললো যে, একটা সময় ছিল যখন কেউ মুসলমান হতো তখন নানাবিধ কারণে তার নাম পরিবর্তন করতোনা। ফলে তিনি যে মুসলিম হয়েছেন, সেটা বুঝার উপায় ছিলোনা। তাই মহান ইসলামি পন্ডিতগণ নামের প্রথমে মোহাম্মদ শব্দটির ব্যবহার শুরু করেন।
তাদের উদ্দেশ্য মহান ছিলো, কিন্তু সেই ঐতিহ্য এখনো ধরে রাখার কোন কারণ নেই। পাসপোর্ট করতে গেলে নামের একদম এলোমেলো হয়ে যায়। তাছাড়া, নবীজি সা: এর নাম ছিলো এক শব্দের, উনার অনুসরণ করলে এত বড় বড় নাম রাখার মানে হয়না।
দাদা এবার মেয়ের নামের কথা জিজ্ঞেস করলেন।
রুমন দাদাকে জানায় যে, মোসাম্মত শব্দের অর্থ হলো 'নাম রাখা হয়েছে'- এটা কারো নামের অংশ হতেই পারেনা।
তারপর, মধ্যযুগে খান শব্দটি পশু শিকারী দলের প্রধানকে বুঝাতে ব্যবহার করা হতো যার অর্থ হলো নেতা। আর তার স্ত্রীকে খাতুন উপাধি দেয়া হতো। এটা কি করে নামের অংশ হয়? এটা তো উপাধি।
আবার বাদশাহের স্ত্রীকে বেগম উপাধি দেয়া হতো। এটাও নামের অংশ হিসেবে যায়না।
তারপর, আখতার মানে তারকা। এটা নাম হিসেবে অনেকেই ব্যবহার করে, কিন্তু অর্থ জানার পর নাম হিসেবে কেমন যেন লাগে।
যাইহোক, দাদা সবশেষে বিষয়টি বুঝতে পেরেছেন। রুমন তাকে আরো বুঝিয়ে বললো যে, নবীজি সা: তার কন্যার নাম ফাতেমা রেখেছিলেন, কারণ তার কাছে এটাই ঠিক মনে হয়েছিলো। তিনি কি চাইলেই কয়েক শব্দের একটা নাম রাখতে পারতেন না? আর তাকে উপাধি দিয়েছিলেন যাহরা।
অনেকেই আবার কোরানে কোন শব্দ থাকলেই বা কোন শব্দ সুন্দর শোনা গেলেই বাচ্চার নাম রেখে দেয়।
তারা একবারও ওই শব্দের অর্থও দেখতে চায়না। এটাও ঠিক না। সন্তানের নাম অর্থপূর্ণ এবং শ্রুতিমধুর হওয়া চাই। সেই সাথে সুন্নতও বজায়ে রাখা উচিৎ।
16
View