Posts

গল্প

বয়:সন্ধিকালের কথা: ছেলে-মেয়েরা জানবে কোথা থেকে? ঘর থেকে নাকি বাহির থেকে?

December 23, 2025

Md. Anwar kadir

12
View

রঞ্জুর ভাগিনা হলো মঞ্জু। রঞ্জুকে কাছে পেয়ে মঞ্জু খুব খুশি। সে এবার অষ্টম শ্রেণিতে উঠেছে। সে মামাকে বয়ঃসন্ধিকাল সম্পর্কে জিজ্ঞেস করে। রঞ্জু মঞ্জুকে বলে সে যেন প্রশ্নটি তার বাবাকে জিজ্ঞেস করে।
কিন্তু মঞ্জুর বাবা প্রশ্নটি শুনেই রেগেই যায়। এসব প্রশ্নের কোন মানে হয় নাকি? ছেলেকে বাবা কিভাবে এসব বলবে? মাথা খারাপ হয়েছে নাকি? এসব তো মানুষ এমনিতেই শিখে যায়।
রঞ্জু তার দুলাভাই এর কথা শুনে অত্যন্ত বিরক্ত হয়। সে বলে,"মঞ্জুর প্রশ্নের উত্তর দরকার। আর আপনি বললছেন, এসব মানুষ এমনিতেই শিখে যায়? আজকে আপনি ওর প্রশ্নের উত্তর না দিলে কাল সে উল্টোপাল্টা কারো কাছ থেকে জানবে। সে ভুলটা জানলে সেটা ওর জন্য ভালো কিছু হবেনা। আপনি কি জানেন? ছেলেরা এসব পর্ন মুভি দেখে শিখে। অথবা খারাপ বন্ধুদের কাছ থেকে শিখে।"
দুলাভাই বলেন,"তাহলে তুমি বুঝাও ওকে।"
রঞ্জু উত্তর দেয়,"আমি চাইলেই ওকে বিষয়টি বুঝাতে পারি। কিন্তু আপনার কি এখানে কোন দায়িত্ব নেই? এসব অবশ্যই  প্রতিটি ছেলের তাদের বাবার কাছ থেকে জানা উচিৎ। যার বাবা নেই সে বড় ভাই এর কাছ থেকে জানবে। বড় ভাই না থাকলে মামা হিসেবে আমি আছি। আপনি আপনার দায়িত্ব এড়িয়ে যেতে পারেন না।"
দুলাভাই বলেন,"আমাদের সময় তো এসব নিয়ে এত কথা হতো না। তাতে কি কোন সমস্যা হতো?"
রঞ্জু উত্তরে বলে,"আপনার সময় তো মোবাইল ফোন ছিলোনা। এসব পর্ন মুভি দেখে বা খারাও বন্ধুদের সাথে মিশে ছেলেরা খারাপ পথে যেতো না। আপনাদের সময়ের সাথে এখনকার সময়ের তুলনা করেন কিভাবে?"
দুলাভাই বলেন,"তোমার কথায় যুক্তি আছে।"
রঞ্জু বলে,"আপনারা হয়ত বুঝার চেষ্টা করেননা। আজকালকার ছেলেরা অত্যন্ত অসহায়। তারা শেয়াল-কুকুরের মতো পথেঘাটে ঘুরে৷ অথচ মেয়েরা কিছুটা তাদের মায়ের কাছ থেকে কিছুটা হলেও সাপোর্ট পায়। ক্ষেত্র বিশেষে তাও পায়না।"
দুলাভাই বলেন,"হ্যা। কথা সত্য।"
রঞ্জু আরো বলে,"প্রতিটি পরিবারের মা অথবা বড় বোনের উচিৎ ওই পরিবারের ছোট মেয়েদের বয়:সন্ধিতে দায়িত্ব নেয়া। তাকে সবকিছু বুঝিয়ে দেয়া। আর বাবা অথবা বড় ভাইএর উচিৎ ওই পরিবারের ছেলেদের বয়:সন্ধিতে তার পাশে থাকা। 
বয়:সন্ধিকালের এই পরিবর্তন অবশ্যই আল্লাহর পক্ষ থেকে আসে। এর মাধ্যমেই ছোট্ট শিশু বড় মানুষ হওয়ার পথে এগিয়ে যায়।
কিভাবে নিজের আবেগকে নিয়ন্ত্রণে রেখে নিজের সম্ভাবনাকে কাজে লাগানো যায় তা শিক্ষা দেয়া উচিত পরিবার থেকেই। কিভাবে নিজের ইমানকে ধরে রাখা যায় এবং কিভাবে কারো প্রলোভনকে পাশ কাটিয়ে সামনে এগিয়ে যাওয়া যায় তার শিক্ষা আসা উচিত পরিবার থেকেই।"
দুলাভাই বলেন,"স্কুলের কারিকুলামে শুনেছি কিছু আছে এসব নিয়ে। শিক্ষকরাই পারেন এসব বুঝাতে।"
রঞ্জু উত্তর দেয়,"আমাদের আচার-আচরণ, সংস্কৃতি-ঐতিহ্য পশ্চিমা ধাচের না। এখানে এসব স্কুলে শেখানোর চেষ্টা সফল হয়নি আগেও। হতে পারে, কোন স্কুলে কোন মহিলা ডাক্তার নিয়ে আসলো এবং তিনি এসে শুধু মেয়েদের আলাদা ক্লাস নেয়ার মাধ্যমে শেখালেন। আবার হতে পারে, পুরুষ ডাক্তার এসে শুধু ছেলেদের জন্য আলাদাভাবে শেখালেন। এটা কার্যকর হতে পারে।"
দুলাভাই বলেন,"হ্যা। এটা হতে পারে।"
রঞ্জু আবার যোগ করলো,"সমস্যা হলো আমাদের বুদ্ধিজীবীরা। এরা চায় ছেলে-মেয়েদের মাঝে লজ্জার বাধ ভেঙে দিতে। এরা চায় আমাদের সমাজকে পশ্চিমা সভ্যতার দিকে নিয়ে যেতে। ওটা তো সভ্যতা না, অসভ্যতা।"

Comments

    Please login to post comment. Login