ছোট্ট করে একটা পরিসংখ্যান দেই, আমার ইউনিয়নে ৬ টা হাই স্কুল, ১ টা আলিয়া মাদ্রাসা, ১ টা ডিগ্রি কলেজ আছে, সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সংখ্যা
১০-১৪টি।
আয়তন ২২.৩৫ বর্গকিলোমিটার, লোকসংখ্যা ২০২২৪ জন।৷৷ ঘনত্বের অনুপাতে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান কিন্তু বেশ যথেষ্ট।
শুরুতে প্রাথমিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠান নিয়ে কিছু বলি, ম্যাক্সিমাম প্রাথমিক বিদ্যালয় গুলো গড়ে উঠেছে যিনি জমি দিল শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের জন্য, তার নন মেট্রিক পুত্র, ৮ ম শ্রেনি পাস মেয়ে এবং ৮ ম ফেল পুতের বউকে চাকরি দেওয়ার সুবাদে। তবুও তো একটা শিক্ষা প্রতিষ্ঠান হলো। একটা এলাকার জন্য ভালো একটা বিষয়।
কিন্তু কথাটা হলো যখন স্কুলটা সরকারি খাতায় রেজিষ্ট্রেশন হয় বা সরকারি হচ্ছে তার কিছু দিন পরেই শোনা যাচ্ছে স্কুল নাকি ৬ তলা ফাউন্ডেশন দিয়ে আপাতত তিন তলা হচ্ছে।
এক্ষেত্রে শুধু বলছেই না কিছুদিনের মধ্যে হয়েও যাচ্ছে,। আমি ডিরেক্ট কথা বলি গ্রামের প্রাইমারি স্কুল গুলো যে অবস্থা পর্যাপ্ত পরিমাণে শিক্ষকের অভাবে প্রাথমিকেই ৭০-৮০ শতাংশ পিছিয়ে পড়ছে শহরের স্টুডেন্টের তুলনায়।
ইদানীং বিশ্বিবিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা প্রাইমারি শিক্ষকতায় আসছে, কিন্তু দেখা যাচ্ছে কিছুদিন পরেই, চলে যাছে একটু উপরের স্তরের জন্য। আমি একটা উদাহরণ দেই আমার এক মামাতো ভাই কিছুদিন আগে ক্যাডার হলো, এক ভাই নন ক্যাডার হলো, এক কাকা সোনালি ব্যাংকে চাকরি হলো,, উনারা তিন জনই প্রাইমারি স্কুলের শিক্ষক ছিলেন। বিলাসী জীবনের জন্য ছেড়ে দিয়েছে, কারণ প্রাইমারি স্কুলের শিক্ষকরা এখনো তৃতীয় শ্রেণীর চাকরি,, এটাই স্বাভাবিক, স্বাভাবিক ভাবে সবাই উচ্চ লেভেলেই যাবে, কিন্তু আমার কথাটা হচ্ছে এই উচ্চ লেভেলটা যদি প্রাথমিক পর্যায়ে করতো, প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকদের যদি উচ্চ পর্যাযের বেতন রাখতো তাহলে দেশের নামি-দামি বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্ররা এখানেই থেকে যেত। বিলাসী তিনতলা ছ তলা ভবন না করে আগে পর্যাপ্ত সংখ্যাক গুনগত শিক্ষক দরকার এখন শ্রেণীকক্ষে। শিক্ষার ক্ষুধা মেটানো দরকার আগে,, পরে অন্য কিছু।
আমি যে স্কুলে মেট্রিক পাশ করেছি বিজ্ঞানের কোনো শিক্ষক ছিল না দুই বছরে তিনটা ক্লাস করেছিলাম এখনো আমার মনে আছে। কিছুদিন আগে স্কুলে গিয়ে নবম দশম শ্রেণিতে ক্লাস নিয়েছিলাম খুব ব্যহাল দশা, গ্রামের প্রত্যাকটা স্কুলের সেইম দশা।
গত পাঁচ বছরে কোনো বিজ্ঞানের শিক্ষক নিয়োগ হয়নি হয়েছে ইয়াবড় কারুকাজ সম্পন্ন ভবন। শুধু আমার স্কুলে না উপরে বললাম না ৬ টা হাই স্কুল ১ টা আলিয়া মাদ্রাসা, একটা ডিগ্রি কলেজের একেবারে সেইম অবস্থা ইমারতের মতো ভবন কিন্তু শিক্ষক অমাবস্যার চাঁদ । আর এরকম পরিসর সারাদেশেই।
আপনি এটাকে মাথা মোটা পরিকল্পনা বলবেন না!!
ভিতরে পঁচে গেছে, পচন ডাকতে পলিথিন ব্যাবহার করলে তা যে আরও ছড়িয়ে পড়বে তার কি কোনো হুশ নেই এই নীতিনির্ধারকদের। এখনো সময় আছে মাথা মোটা পরিকল্পনা বাদ দিয়ে সরকারি নীতিনির্ধারকদের উচিত সার বস্তু নিয়ে কাজ করা।